সময়ের সেরা ড্রামা সিরিজগুলোর একটি “গেমস অব থ্রোনস”। যে সিরিজের আকর্ষণ, চরিত্র থেকে চরিত্রের ব্যাপ্তি, নাটকীয়তা, রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা সিনেমাপাগলদের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। জেমস অ্যান্ডারসনের ক্যারিয়ারকে এই সিরিজের সঙ্গে তুলনা করলে ভুল হবে না। ২০০৩ সালে সাদা পোষাকে শুরু করেছিলেন লর্ডসে। এরপর টানা তার রিভার্স সুইংয়ের মুগ্ধতা চলছেই।
গত পাঁচ বছরে খুব নিয়মিত ছিলেন না ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজগুলোতে খেলছিলেন এক-দুটো ম্যাচ করে। ৩৮ থেকে ৪১ যে কোন অ্যাথলেটের জন্যই বয়সটা বেশি। একজন পেসারের জন্য তো বটেই। কবে অবসর নিচ্ছেন কবে সেই প্রশ্ন উঠছিল বারবার। বলেছিলেন গত অ্যাশেজ খেলেই থামবেন। কিন্তু ক্যারিয়ারটা আরও একটু লম্বা করেন। তবে এবার পাকাপাকি ঘোষণা এল।
২০০৩ সালে যেই লর্ডসে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ২১ বছর পর সেই লর্ডসেই থামছেন অ্যান্ডারসন। উইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ হচ্ছে ৭০০ উইকেট নেয়ার নাটকীয় “অ্যান্ডারসন সিরিজ”। টেস্ট ইতিহাসে একজন পেসারের যা সর্বোচ্চ উইকেট শিকার। ইংলিশ কিংবদন্তীর সামনে আছেন ৭০৮ উইকেট নেয়া প্রয়াত শেন ওয়ার্ন ও ৮০০ উইকেটের মালিক মুত্তিয়া মুরালিধরন।
৫৬৩ উইকেট নেয়া ম্যাকগ্রাকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে যান অ্যান্ডারসন। লম্বা সময় ধরে ছিলেন টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পেসার। তবুও ৭০০ উইকেটের ওই জাদুকরী সংখ্যার লোভ তো ছেড়ে দেয়া যায় না! অ্যান্ডারসনও পারেননি। এ বছর মার্চে ভারতের বিপক্ষে ধর্মশালায় ৭০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এবার তবে থামা যায়, এমনটাই ভেবেছেন এই পেসার।
তাই এক সময়ের প্রতিপক্ষ ও বর্তমানে কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত ঘোষণাটা দিলেন অ্যান্ডারসন। টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২০০ ম্যাচ খেলা শচিন টেন্ডুলকারের পর ১৮৮ টেস্টে ক্যাপের মালিক ইন্সটাগ্রামে বলেছেন, “কেমন আছেন সবাই। একটা নোট দেয়ার ছিল। এই গ্রীষ্মের প্রথম টেস্টটাই হতে যাচ্ছে আমার শেষ টেস্ট। দেশের হয়ে আমার অবিশ্বাস্য ২০টি বছর কেটেছে। এই খেলাটিকে আমি শিশুকাল থেকে ভালোবাসি। ইংল্যান্ডের টি-শার্ট গায়ে মাঠে নামাটা মিস করবো। কিন্তু মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময়, যে স্বপ্ন আমি দেখেছি তা অন্যকে দেখার সুযোগ করে দেয়ার।”
এই গ্রীষ্মে উইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ টেস্টের দলেই থাকতে চেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। এমনকি ২০২৫-২৬ অ্যাশেজের দলেও থাকার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক রব কি তাকে বুঝালেন দলের ভবিষ্যতে তাকানোর সময় হয়েছে। এরপরই অবসরের সিদ্ধান্ত জানালেন জিমি।