সাকিব আল হাসান যেমনটা বলেছিলেন – জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ভাবলে ভুল। বাংলাদেশ সেই ভুলে পা দিয়েছেও। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সিরিজ জিতলেও দাপুটে জয় বলতে যা বোঝায় তা পায়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তো নিজেদের ইতিহাসের সেরা লজ্জাটা পেয়েছে সিরিজ হেরে।
এই অবস্থায় ওই দুই সিরিজ নিয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির হিসেব কষলে কোন ভাবেই আশার কিছু মিলছে না। তবুও সামনে তাকাতে হবে। সেদিকেই দাঁড়িয়ে ভারত। আজ নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি মাঠে রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যা বিশ্বকাপের আগে নাজমুল হোসেন শান্তদের জন্য আসল প্রস্তুতি।
টুর্নামেন্টের আগে এটাই ভারতের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ। বাংলাদেশের দ্বিতীয়। তবে হারিকেনের কারণে ডালাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আইসিসি নির্ধারিত প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারেননি নাজমুল শান্তরা। তাদের জন্যও প্রস্তুতি ম্যাচ তাই একটি হয়ে গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আগেই তিনটি ম্যাচ খেলায় দেশটির কন্ডিশন পরিচিতিতে ভারতের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
অবশ্য কন্ডিশন বিবেচনায় নিয়েও খুব একটা লাভ নেই। নিউইয়র্কের এই মাঠ পুরোপুরি অস্থায়ী। পিচ থেকে শুরু করে সব। ভারত ইতিমধ্যেই এ মাঠের সমালোচনা করেছে। অনুশীলন সুবিধা না থাকায় মাঠের অদূরে ক্যান্টিয়াগ পার্কে অনুশীলন করতে হয়। বাংলাদেশ সেখানেই নেট অনুশীলন করেছে। কিন্তু ভারত নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে মূল মাঠের ৬টি ড্রপ ইন পিচের তিনটি পিচে ব্যাট-বলের কাজ সেরেছে। পিচে অনুশীলন করেও কোচ রাহুল দ্রাবিড় পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
আজকের প্রস্তুতি ম্যাচে পিচ বুঝে ওঠার দিক থেকে তাই বাংলাদেশের চেয়ে একটু এগিয়ে থাকবে ভারত। নাজমুল শান্তরা অবশ্য অন্য একটা সুবিধা নিতে পারেন। ভারত দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটাররাই এখন সেরা ফর্মে নেই। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের দ্রুত ফেরানো গেলে বাকি ব্যাটারদের আটকানো কঠিন হবে না। বাংলাদেশের বোলিংটা এই মুহুর্তে আশাজাগানিয়া। তাই এ শক্তি সামনে রেখে ভারতের সঙ্গে জোড় লড়াই দিতে পারেন শান্তরা।
বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জটা ব্যাটারদের। অফফর্মের টপঅর্ডারের কারণে সবসময়ই কম রানে আটকে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। আশার কথা গত ম্যাচে তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি শতরান ছাড়িয়েছিল। সেই সঙ্গে ড্রপ ইন পিচের ব্যাটিং উপযোগীতা কাজে লাগানো গেলে ভালো স্কোর পেতে পারে বাংলাদেশ।
প্রস্তুতি ম্যাচটিতে জয় নাজমুল শান্তদের দুর্ভোগে ভরা বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে অনেকটা স্বস্তি এনে দিবে। মূল আসর শুরুর আগে নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে পারেন ক্রিকেটাররা। তবে জয় না হলেও ভালো পারফরমও এই কাজে দিবে। সবচেয়ে বড় কথা ১২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগে এ মাঠের সঙ্গে ভালো ভাবে পরিচিতি হয়ে নিতে পারেন শান্তরা।