Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আয়ওয়ায় ট্রাম্পের জয় কী বার্তা দিচ্ছে

আয়ওয়ায় জয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
আয়ওয়ায় জয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে দেশটির রাজনীতিকদের হিসাব কষা শুরু হয়ে গেছে। আগামী ৫ নভেম্বর ভোট, রিপাবলিকান পার্টিতে শুরু হয়েছে প্রার্থী বাছায়ের দৌড়। দলটির মনোনয়নের প্রথম ধাপে সোমবার আয়ওয়া অঙ্গরাজ্যে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সেখানে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এবং ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। দুজনের কেউ ট্রাম্পের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি। আয়ওয়াতে ট্রাম্পের পর দ্বিতীয় যেই হোন না কেন, তার থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে থাকবেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।    

ট্রাম্পের এই জয় খুব বেশি অবাক করেনি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সমর্থকরা যে তাকে জয়ী করবেন, এ যেন জানাই ছিল। 

চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসে আসন গেঁড়ে বসার প্রতিযোগিতায় আয়ওয়ার সোমবারের ফল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন?   

এখনও রিপাবলিকান মানেই ট্রাম্প

আয়ওয়া অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের জয় ঐতিহাসিকভাবে বিশাল। এর আগে কেউ সেখানে ১২ শতাংশের বেশি ব্যবধানে জয়লাভ করেনি। ট্রাম্পের ব্যবধান ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। প্রায় সব ভোট গণনা শেষে দেখে গেছে, ট্রাম্প ৫১ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ডিস্যান্টিস ও হ্যালি পেয়েছেন যথাক্রমে ২১ ও ১৯ শতাংশ ভোট।

রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আইওয়াতে ট্রাম্প কেন এগিয়ে, তা নিয়ে জরিপ করেছে সিবিএস নিউজ। এতে দেখা যায়, অঙ্গরাজ্যটিতে রিপাবলিকানদের অর্ধেকই নিজেদের ট্রাম্পের ‘আমেরিকাকে আবারও মহান করে গড়ে তুলি’ প্রচারের অংশ মনে করেন।

আয়ওয়াতে ট্রাম্পের জয় এক অর্থে ব্যাপক। তিনি নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ রিপাবলিকানদের ভোট পেয়েছেন। এমনকি কট্টর ডানপন্থি রক্ষণশীল ভোটারের পাশাপাশি ইভানজেলিকালদেরও ভোট পান। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাদের ভোট পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল ট্রাম্পকে।            

নিকি হ্যালি ও গভর্নর রন ডিস্যান্টিস

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রেসিডেন্টদের মানুষ মনে রাখে না। পরাজিতরা কখনোই হারের দাগ দূর করতে পারেন না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ট্রাম্প। তিনি কেবল আয়ওয়া নয়, এর বাইরের রিপাবলিকানদেরও আশ্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন, তিনি এবার হারতে আসেননি।    

আয়ওয়ার রিপাবলিকানদের বড় অংশই সিবিএসকে জানিয়েছেন, তারা বিশ্বাস করেন, ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পই ছিলেন সত্যিকারের জয়ী। সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের ৯০ শতাংশই এমনটা মনে করেন।

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। পরাজয়ের পর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।

ট্রাম্পের জয় এক উল্লেখযোগ্য উত্থান

২ বছর ২২ মাস ২৫ দিন আগে ব্যাপক বিতর্কের মাঝে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ করেছিলেন ট্রাম্প। বাইডেনের জয়কে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে লজ্জাজনক ঘটনা। বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে ট্রাম্পের উসকানিতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা করে বসে ট্রাম্পের সমর্থকরা।

রাজনীতির মাঠে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন বিস্ময়করই বটে। রিপাবলিকান পার্টিতে তার প্রভাবশালী অবস্থান অপ্রতিরোধ্য। আয়ওয়াতে তার জয় যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক রাজনীতির বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে অভাবনীয়।

এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের জয় নিঃসন্দেহে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। সামনে সপ্তাহে নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকানরা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের ভোট দেবেন। ওই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি।   

আয়ওয়ার গুরুত্ব

বিশ্লেষকদের ভাষ্য, আয়ওয়াতে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার অর্থ এ নয়, তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। তবে অবশ্যই তিনি জয়ের পথে আছেন, যদি না নাটকীয় কিছু ঘটে।  

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে হলে একজন রিপাবলিকান প্রার্থীর ২ হাজার ৪২৯ প্রতিনিধির সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট দরকার। ছো্ট্ট অঙ্গরাজ্য আয়ওয়াতে রিপাবলিকানদের মাত্র ৪০ প্রতিনিধি আছে।         

তবে আয়ওয়ার গুরুত্ব সংখ্যায় নয়, অন্য জায়গায়। সেখানকার ফল রাজনৈতিক অঙ্গনের দৃষ্টিভঙ্গিকে পুনরায় ঢেলে সাজাতে পারে। শেষ হাসি কে হাসবেন, তা এ থেকে ধারণা পাওয়া যায়। আয়ওয়া ঐতিহাসিকভাবে এমন এক জায়গা যেখানে প্রায়ই চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে। তবে কখনও কখনও আয়ওয়ার ফলে গতানুগতিক ধারাই দেখতে পাওয়া যায়। যেমন সোমবারের ভোট ও তার ফলাফল।

ট্রাম্প আয়ওয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি সেখানে এখনও ব্যাপক জনপ্রিয়।

              

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত