অ্যান্টিগার রাজধানী সেন্ট জনসের রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড, বিখ্যাত এই মাঠে বুধবার অনুশীলনের কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। তা হতে দেয়নি প্রকৃতি। প্রবল বৃষ্টিতে কাদায় পরিণত হওয়া আউটফিল্ডের জন্য সকাল ৯টার অনুশীলন করা হয়নি নাজমুল হোসেন শান্তদের। পরবর্তীতে অ্যান্টিগার বিশ্বকাপ ভেন্যু স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ফিল্ডিং অনুশীলন করে বাংলাদেশ।
চলতি বিশ্বকাপে সুপার এইটে অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ – অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে। নতুন ভেন্যুতেই হবে ম্যাচ দুটি। রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ডে খেলা হয় না, অনুশীলনের সুযোগ রাখা হয়েছিল। বৃষ্টিতে সেই অনুশীলনও পণ্ড হল। আইসিসির অনুশীলন তালিকায় চলতি টুর্নামেন্টে আর এই মঠে ফেরার সুযোগ নেই বাংলাদেশের। ঐতিহাসিক মাঠে তাই এবারের মতো পা রাখা হচ্ছে না শান্তদের।
মাঠটি ক্রিকেটের বিখ্যাত রেকর্ডের দুটি ঘটনার সাক্ষী। ঘটনা না বলে রূপকথার গল্পও বলা চলে। গল্পটা রাজার রাজত্ব পুনরুদ্ধারের মতো। শুরুটা ১৯৯৪ সালে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ মাঠে টেস্টে ৩৭৫ রানের ব্যক্তিগত ইনিংস খেলেছিলেন ব্রায়ান লারা। ৩৮০ রান করে সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দেন ম্যাথিউ হেইডেন। লারার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রাজত্বেও কেড়ে নেন এই অজি ওপেনার।
লারা তখন নিজের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করার চিন্তায়। ঠিক ১০ বছর পর ২০০৪ সালে সেই সুযোগ আসে। বিপক্ষ ইংল্যান্ড এবং রণক্ষেত্র সেই অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড। এবার হেইডেনের ৩৮০ ছাপিয়ে আরও ২০ রান বেশি করলেন ক্রিকেটের বরপুত্র। ৪০০ রানে পুনরুদ্ধার করেন নিজের রেকর্ড ও সুসংহত করেন রাজত্ব।
এই মাঠে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটারের বিশেষ স্মৃতি জড়িয়ে। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে এ মাঠেই কানাডা ও বারমুডাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে বারমুডার বিপক্ষে অপরাজিত ৪২ ও পরের ম্যাচে কানাডার সঙ্গে অপরাজিত ১৩৪ করেছিলেন সাকিব। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ওটাই সাকিবের প্রথম সেঞ্চুরি।
বুধবার মাঠটিতে ফিরে তরুণ বয়সের স্মৃতি অবশ্যই ফিরেছিল সাকিবের। কিন্তু অনুশীলন আর করতে পারলেন কই! অগত্যা সন্ধ্যা ৬টায় মূল ভেন্যু নর্থ সাউন্ডে ফিল্ডিং অনুশীলন করেছে দল। এরপর অ্যান্টিগার অপর একটি মাঠ কোলিজে অনুশীলন রাখা হয়েছে বাংলাদেশের।
অ্যান্টিগার এই মাঠটির বিখ্যাত হওয়ার পাশাপাশি অখ্যাত হওয়ারও ঘটনাও আছে। ২০০৯ সালে উইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড টেস্টে মাত্র ১০ বল হওয়ার পর বাজে আউটফিল্ডের কারণে মাঠটি এক বছর ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর আর কখনই আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি লারার রাজত্ব করা মাঠটিতে।