Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

কান জয়ী ভারতীয় পায়েল কাপাডিয়ার নামে মামলার কী হবে

payal-kapadia-280524
[publishpress_authors_box]

প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানিয়েই কানে গ্র্যান্ড প্রিক্স জয় করে নিয়েছেন ভারতের পায়েল কাপাডিয়া। তার ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ সিনেমা দিয়ে ৩০ বছর পর কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নাম লেখালো ভারত।

পায়েলের জন্য অবশ্য পুরস্কার পাওয়া নতুন ঘটনা নয়; ২০২১ সালে তার ডকুমেন্টারি ‘এ নাইট অফ নোয়িং নাথিং’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে অয়েল ডি’অর (গোল্ডেন আই) পুরস্কার জিতেছিল। তারও আগে ২০১৭ সালে শিক্ষার্থী নির্মাতা বিভাগে ১৩ মিনিটের ’আফটারনুন ক্লাউডস’ সিনেমা দিয়ে সিনেফঁদাসোতে সেরা হন পায়েল।

২০১৯ সালে ১৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে  ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন (ডকুমেন্টারি) বিভাগে ‘অ্যান্ড হোয়াট ইজ দ্য সামার সেয়িং’ দিয়ে শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

পায়েলের সিনেমা যখন বাহবা কুড়াচ্ছে, তখন এই ভারতীয় পরিচালকের পিছু ছাড়ছে না মামলার ঝামেলা।   

এর পেছনেও সিনেমার মতো কাহিনী আছে। ২০১৫ সালে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিটিআই) প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন পায়েল। ওই সময়  টিভি স্টার থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া  গজেন্দ্র চৌহানকে ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান পদে মেনে না নেওয়ার আন্দোলনে জড়িয়ে যান তিনি। চার মাস ক্লাস বর্জনও করেন। এসবের জন্য শাস্তিও পেয়েছিলেন পায়েল।

পায়েলের কান জয় দিয়েও যেন পুলিশের খাতায় ওঠা সেই নাম মোছা যাচ্ছে না। ২৬ জুন পুনে কোর্টে পায়েল এবং আরও ৩৪ জনের ডাক পড়েছে; যারা গজেন্দ্র চৌহানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল।  

অবশ্য এরমধ্যে কোর্ট ৩৫ জনকে সরাসরি হাজিরা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা মওকুফ করে দিয়েছে। ফলে পায়েলকে পুনে উড়ে যেতে হচ্ছে না আপাতত।

২০১৫ সালে আন্দোলনের পারদ বেশ চড়েছিল এফটিআইআই ল কলেজ রোড ক্যাম্পাসে। বিক্ষোভকারীরা তখন পরিচালক পদে থাকা প্রশান্ত পাথরাবের অফিস ঘেরাও করে ফেলেছিল।  

এরপর পুলিশ পায়েল সহ ৩৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে তাদের নামে অভিযোগপত্র দেয়। প্রতিষ্ঠানের পরিচালককে আটকে রাখার পাশাপাশি রায়ট করার অভিযোগও আনা হয় শিক্ষার্থীদের নামে। পাঁচজনকে আটকও করা হয় তখন।

পরে যদিও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে আসে। অন্যদিকে সরকারও তাদের দাবি মেনে নেয়নি; গজেন্দ্র চৌহান তার পদে মেয়াদ পূর্ণ করেছিল।

শিক্ষার্থীরা মামলা থেকে রেহাই চাইলেও নয় বছর ধরে এই মামলা পুনে সেশন কোর্টে ঝুলে রয়েছে।

আমেয়া গোর ওই আন্দোলনে সামনের সারির একজন ছিলেন। পুলিশ তাকে আটকও করেছিল।

মামলা নিয়ে আমেয়া গোর বলেন, “এই মামলা এখন পর্যন্ত ট্রায়াল পর্যায়ে আসেনি, এরপরও আমাদের অনেকে পাসপোর্ট পেতে সমস্যার মুখে পড়েছি। অনেকের তো স্কলারশিপও আটকে গেছে।”  

পায়েলের বৃত্তিও বাতিল করে দিয়েছিল এফটিআইআই। অবশ্য ২০১৭ সালে পায়েলের কানে যাওয়ার খরচ বহন করেছিল তারা।

আর এবার আবারও কানে পুরস্কার জেতার খবরে পায়েলকে অভিনন্দন জানিয়ে এফটিআই বলেছে, “আমাদের একজন সাবেক শিক্ষার্থী কানে যে ইতিহাস লিখলো তা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত।”

আর ভারত-ফ্রান্স যৌথ প্রযোজনায় পায়েলের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা নিয়ে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলছে, “পায়েলের সিনেমা ইনফরমেশন ও ব্রডকাস্টিং মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছিল। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে অডিও-ভিজুয়াল চুক্তি সই হয়েছিল।

“রত্নাগিরি ও মুম্বাই শহরে সিনেমার শুটিং করার অনুমতি দিয়েছিল মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীসভা। ভারত সরকার এই সিনেমা নির্মাণে ৩০ শতাংশ খরচ বহন করেছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত