সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলমান বিভিন্ন গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে হেলমেট অডিটোরিয়ামে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেসে’ দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
সেইসঙ্গে যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান।
রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, সেনা সদস্যদের দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন সেনাপ্রধান। তিনি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন। পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতিতে জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেন।
সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণের আস্থার প্রতীক। জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।”
এছাড়াও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলমান বিভিন্ন গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকতে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি সেনা সদস্যদের সততা, সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়নতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনাও দেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের জেরে জুলাই মাসের মাঝামাঝি দেশে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিজিবি নামিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ বা সান্ধ্য আইন জারি করে সারাদেশে সেনা মোতায়েন করে সরকার।
ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে মাঠে নামে সেনাবাহিনী। সেসময় সেনাপ্রধান জানিয়েছিলেন, সারা দেশে সেনাবাহিনীর ২৭ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গত ২৮ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে। কোনও ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর সহযোগিতা চায়।
আইএসপিআরের সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কিছু স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াসমূহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য দেশে এবং বিদেশে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা বলে অনুমিত।
“বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে প্রচলিত আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দেশবাসীর জানমালের নিরাপত্তা ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”
স্বার্থান্বেষী মহলের বিভ্রান্তিকর তথ্য ও সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।