টেস্ট শুরুর আর একদিন বাকি। তার আগে পাখির চোখ চেন্নাইয়ের উইকেটে। চিপকের ওই উইকেটে বলের ঘূর্নি ওঠে। টেস্ট যত গড়ায় তত সেই ঘূর্ণির গতি বাড়ে। তার কারণ উইকেটের মাটি। চেন্নাইয়ে দুই রকম উইকেট তৈরি করা হয়। একটি লাল মাটির, অপরটি কালো মাটির।
বাংলাদেশের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে ভারত কেমন উইকেট করবে, তা বিরাট প্রশ্ন। বাংলাদেশ অনুশীলনের শুরু থেকেই কালো মাটির উইকেট পাচ্ছে। কিন্তু রোহিত-কোহলিদের ব্যাপারটা ভিন্ন। তারা সোমবার থেকে লাল উইকেটে অনুশীলন করছেন। এমন উইকেটেই হয়তো বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিকরা।
তবে চেন্নাইয়ের লাল উইকেটে খেলে বোকা বনে গিয়েছিল ভারত। ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট। তাতে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করে ৫৭৮ রান। জো রুট করেন ২১৮। টেস্টের প্রথাগত নিয়ম মেনে শেষদিনে ওই টেস্টের লাল উইকেটে ভাঙন ধরে। আর ম্যাচের শেষ ইনিংসও খেলতে হয়েছিল ভারতকে। ৪১৯ রানের লক্ষে নেমে ১৯২ রানে অলআউট হয় ভারত।
পরের টেস্টে একই ভেন্যুতে কালো মাটির উইকেট করে ভারত। উপরের মাটিতে বেশি পানি দেওয়ার কারণে উইকেট খুব দ্রুত ধীর গতির হয়ে যায় এবং স্পিন ধরে। এই টেস্টের দুই ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ১৩৪ ও ১৬৪ রানে। ভারত জিতেছিল ৩১৭ রানে। এই ম্যাচে রবীচন্দ্রন অশ্বীন ৮ ও অভিষেক টেস্ট খেলা বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল নিয়েছিলেন ৭ উইকেট।
ইংল্যান্ডের কাছে ওই হারের পর চেন্নাইতে আর লাল মাটির উইকেটে আর খেলা হয়নি। পিচ কিউরেটরও বদলে ফেলা হয়েছিল।
সেই লাল মাটি ফিরে এসেছে এবার বাংলাদেশ সিরিজে। সিরিজের প্রস্তুতিতে প্রথম দুই দিন কালো ও লাল দুই ধরনের উইকেটে অনুশীলন করেছে ভারত। কিন্তু সোমবার থেকে রোহিত-কোহলিরা শুধু লাল মাটির উইকেটেই ব্যাট করছেন।
চেন্নাই স্টেডিয়ামের এই লাল মাটি আনা হয়েছে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম থেকে। মুম্বাইয়ের উইকেটে পেসার ও স্পিনারদের জন্য বাউন্স থাকে। পিচ থেকে বাউন্স আদায় করে বরাবরই ব্যাটারদের অসুবিধায় ফেলেন বোলাররা। আবার এমন পিচে রানও হয়।
সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশকে এই উইকেটে খেলাতে চায় ভারত। এতে করে পেসাররা যেমন সুবিধা পাবে তেমনি জাদেজা-অশ্বীনও সুবিধা পাবে। সোমবার থেকে ভারতের লাল মাটিতে শুরু হওয়া অনুশীলন সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করেন কেউ কেউ।
বিপক্ষ টিমকে ফাঁদে ফেলা বা অন্ধকারে রাখার চর্চা সব হোম দলই করে থাকে। কালো উইকেটে অনুশীলনের পর দিন থেকে লাল মাটিতে বেশি সময় কাটাচ্ছে ভারত। অথচ বাংলাদেশ দুই দিনই কাটিয়েছে কালো মাটির উইকেটে। এখনও পর্যন্ত লাল-কালোর ধাঁধাঁয় বাংলাদেশ।