মূল বিষয়
জাতীয় পার্টির নির্বাচনী নাটক এবারও অব্যাহত রয়েছে। দলের মধ্যে দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে।
২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হলেও, বাকি আসনগুলোতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নৌকার প্রার্থীদের মুখোমুখি হয়েছেন। ফলে অনেক প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তার ও ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তারা নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
নেতারা কী বলেন
আসন সমঝোতা নিয়ে যে অভিযোগ সরে যাওয়া প্রার্থীরা তুলেছেন, তা নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য খলিলুর রহমান খলিল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের মহাসচিব আগেই বলেছেন, আমাদের সাথে আওয়ামী লীগের কোনো সমঝোতা হয়নি। তারা কেন আসন ছাড়ল তা আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশ্ন করা ভালো। আমরা আমাদের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি সারা বাংলাদেশজুড়ে।”
তাহলে সমঝোতা হওয়া আসনের প্রার্থীরা তাদের প্রচারে আওয়ামী লীগ বা মহাজোট সমর্থিত বলে বক্তব্য কেন দিচ্ছেন- এ প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
একই প্রসঙ্গে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম জহির সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ আছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। বিভিন্ন আসনে প্রার্থীরা ভেবেছিল কেন্দ্র থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে, কিন্তু যা আমরা করতে পারছি না। এ থেকেও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।
আরও অনেক প্রার্থী একযোগে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে, সে বিষয়ে খলিল বলেন, “যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, তারা তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে এ কাজ করেছে। আর কোনো প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরবে না।”
শেষ পর্যন্ত কি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে- এই প্রশ্নে খলিল বলেন, “সেটা চেয়ারম্যান ও মহাসচিব সিদ্ধান্ত নেবে। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা জাতীয় পার্টি একতাবদ্ধভাবে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করব।”
এআই’র চোখে
[কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ‘বার্ড’ এই সংবাদটিকে কিভাবে দেখছে তা পড়ুন নিচে]
জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই ঘটনাটি জাতীয় পার্টির ভিতরে এবং বাইরে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই ঘটনার প্রধান কারণ হলো জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ২৬টি আসনে সমঝোতা। এই সমঝোতাকে জাতীয় পার্টির অনেক নেতা-কর্মী অব্যাহতি হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করেন, এই সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের অধীনস্থ হয়ে পড়েছে।
সরে যাওয়া প্রার্থীরা আরও অভিযোগ করেন যে, তারা নির্বাচনী প্রচারণায় আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন না। এছাড়াও, তারা ভোটের সময় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেন।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা এই অভিযোগগুলোর কিছুটা স্বীকার করেছেন। তবে তারা দাবি করেন যে, সমঝোতা জাতীয় পার্টির স্বার্থে হয়েছে। এছাড়াও, তারা বলেন যে, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের সাথে কাজ করছেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনাটি দেখায় যে,নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা কঠিন। এছাড়াও, এই ঘটনাটি দেখায় যে, রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা নির্বাচনের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।