Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

টেকনাফ-সেন্টমাটিন : ১৪ দিন পর বিকল্প পথে শুরু নৌযান চলাচল

দীর্ঘ ১৪ দিন পর শুরু হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যান চলাচল। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
প্রতীকী ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে টানা ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর বিকল্প পথে শুরু হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল।

রবিবার সকাল থেকে এসব যান চলাচল শুরু হয়। সারাদিনে মোট নয়টি নৌযান চলাচল করেছে, যার মধ্যে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে গেছে তিনটি ট্রলার। সেন্টমার্টিন থেকে শাহপরীরদ্বীপে গেছে তিনটি ট্রলার ও তিনটি স্পিড বোট।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেন্টমাটিন জেটি থেকে তিনটি সার্ভিস ট্রলার দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বেলা ১২টার দিকে দ্বীপটিতে পৌঁছে এসবি সুমাইয়া, এসবি আল্লাহ দান ও এসবি আল-নোমান নামের ট্রলারগুলো।

এছাড়া বেলা ১১ টায় টেকনাফ থেকে এসবি আবরার হাফিজ, এসবি ওসমান গণি, এসবি রাফিয়া  নামের এ তিনটি ট্রলারে শতাধিক যাত্রী, দুইশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার, চাল, ডালসহ কিছু খাদ্যপণ্য নিয়ে রওনা দেয়। যা দুপুরে ২টার পরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটিতে পৌঁছে।

টেকনাফ থেকে স্পিড বোট সমবায় সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, সকালে তিনটি স্পিড বোট ২৫ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে শহপরীরদ্বীপে পৌঁছেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসনের সহযোগিতায় বিকল্পপথে দু’বার সেন্টমার্টিনে আসা-যাওয়া করে ট্রলার। কিন্তু পরে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় বিকল্প পথটিও বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে রবিবার কিছু নৌ যান চলাচল শুরু করেছে।”

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে নিয়মিত রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে সাগরে জোয়ারের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের সীমানার ভেতর দিয়েই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল করেছে। সতর্কতা হিসেবে প্রতিটি নৌযানেই বেশ উঁচুতে টাঙানো হচ্ছে বাংলাদেশের পতাকা। যেন সেটি দূর থেকেই চোখে পড়ে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, সাধারণত জুন-জুলাই মাসে সাগর বেশি উত্তাল থাকে। এসময়ে সাগরে যাওয়া নিষেধ। তবে তুলনামূলকভাবে রবিবার সাগর বেশ শান্ত রয়েছে। এরপরও অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই আটকে পড়া লোকজনসহ জরুরি খাদ্য সামগ্রী নিয়ে নয়টি নৌযান চলাচল করেছে।

ধীরে ধীরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে বলে করেন টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী। শিগগিরই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ইউএনও বলেন, “মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে আমরা এখনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সংকটের অবসান না হওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটের বিকল্প নৌরুটে সবধরনের নৌযান চলাচল করতে বলা হয়েছে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা এমন ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।“

এর আগে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জের ধরে গত ১ জুন বিকাল থেকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হওয়া ১০ যাত্রী ও মালামাল বহনকারী একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে গুলি ছোঁড়া হয়।

এছাড়া ৫ জুন টেকনাফের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ফেরার পথে গুলির কবলে পড়ে ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রলার। একই পয়েন্টে ৮ জুন আরও একটি বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সবশেষ ১১ জুন একটি স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনা ঘটে।

এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট ও জরুরি আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।

১২ জুন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে যাত্রীদের আসা-যাওয়া ও পণ্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ১৩ জুন থেকে টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকূল ব্যবহার করে শুরু হয় যাত্রীদের আসা-যাওয়া। ১৪ জুন কক্সবাজার শহর থেকে দ্বীপে পণ্য নিয়ে যায় জাহাজ। আর বিকল্প পথ হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে সীমিত পরিসরে কিছু নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে ২২ জুনের পর থেকে সেটিও বন্ধ ছিল

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত