দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। আবার কোথাও কোথাও হচ্ছে বৃষ্টিও। আবহাওয়া অধিদপ্তর একদিকে যেমন আরও তিনদিনের জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করেছে, তেমনি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু স্থানে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছে।
তবে এপ্রিলের শেষ দুদিনে ঢাকায় বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় গরমের অনুভূতি হবে তীব্র।
রবিবার আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা সকাল সন্ধ্যাকে এসব কথা জানিয়েছেন।
গত ৩১ মার্চ থেকেই দেশে তাপপ্রবাহ চলছে। সে হিসেবে টানা ২৯ দিন ধরে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এই কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় রোজা ও ঈদের ছুটি এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে দেশে টানা ২৩ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল, সেটাই ছিল সবচেয়ে বেশিদিনের হিসাব। তারও আগে ২০১০ সালে রাজশাহীতে তাপপ্রবাহ ছিল ২০ দিন, তবে তা টানা ছিল না। আর গত বছর তাপপ্রবাহ চলেছিল টানা ১৮ দিন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহের উপাত্ত আছে ১৯৮১ সাল থেকে। সেই তথ্য অনুযায়ী, এবারের টানা ২৯ দিনের তাপপ্রবাহ গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে।
আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বললেন, দেশের বেশিরভাগ এলাকার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত আছে এবং থাকবে।
কয়েক স্থানে বৃষ্টি হলেও ঢাকাসহ বেশিরভাগ এলাকার তাপমাত্র এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে যশোরে, ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে অনেকগুলো অঞ্চলের তাপমাত্রা।
যার মধ্যে খুলনার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, মোংলায় ৪১ ডিগ্রি, সাতক্সীরায় ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রির পারদ। এসব অঞ্চলের তাপমাত্রা যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাঢ়া রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঈশ্বরদীর ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং বদলগাছীর ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর সবশেষ যে পূর্বাভাস দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, যশোর ও রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, পাবনা ও নীলফামারীসহ খুলনা বিভাগের বাকি অংশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বাকি অংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা অব্যাহত থাকতে পারে।
গরমের পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় অস্বস্তিকর অনুভূতি হবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।