Beta
বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

নিত্যপণ্যের তুলনায় সস্তা হবে তামাকপণ্য, বলছে প্রজ্ঞা

ss-progga-6-6-24 1
[publishpress_authors_box]

তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) বলেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরও সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে পড়বে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের পর পরই এক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি এ অভিযোগ করে।

প্রজ্ঞা বলছে, এর ফলে দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতা বাড়বে। বেড়ে যাবে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয়ও।

প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের সম্পূরক শুল্কের হার ৬৫ শতাংশ থেকে ৬৬ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেখানে বিড়ির দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাবও দেন তিনি।

এরপর গণমাধ্যমে পাঠানো তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে প্রজ্ঞা বলে, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরামূল্য ৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শলাকার দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র পঞ্চাশ পয়সা (১১ দশমিক ১১ শতাংশ)। সম্পূরক শুল্ক মাত্র ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫৮ থেকে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা (৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ), উচ্চ স্তরে ১১৩ টাকা থেকে ১২০ টাকা (৬ দশমিক ১৯ শতাংশ) এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা (৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞা বলেছে, তিনটি স্তরেই সম্পূরক শুল্ক মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্রতি দশ গ্রাম জর্দা ও গুলের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩ টাকা (৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) ও ২ টাকা (৮ দশমিক ৭ শতাংশ) বাড়ানো হয়েছে এবং উভয় ক্ষেত্রেই সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আবার বিড়ির দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

বিড়ির দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখার বিষয়ে বাজেটে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবের বিষয়ে প্রজ্ঞা বলছে, “এতে দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে, তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতা বাড়বে এবং সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয় বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।”

প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ পর্যন্ত। বিড়ির দাম রাখা হয়েছে অপরিবর্তিত। যেখানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত। এসব তথ্য বিশ্লেষণে প্রজ্ঞা বলছে, নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরও সস্তা হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার করে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। প্রতি বছর তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ।

প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশ দখলে থাকা কমদামি সিগারেটের খুচরামূল্য ও সম্পূরক শুল্ক খুবই সামান্য পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। খুচরামূল্য কমপক্ষে ৬০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৩ শতাংশ করা হলে এই স্তরের সিগারেটের সহজলভ্যতা কমবে, তরুণ জনগোষ্ঠী সুরক্ষা পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় কয়েক গুণ বাড়বে।”

তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৫ লাখ তরুণসহ মোট ১১ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে বলে দাবি প্রজ্ঞার।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত