Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

নাফ নদীর ওপারে ৪০-৫০টি বিস্ফোরণের শব্দের পর ঘন ধোঁয়া

নাফ নদীর ওপারে শনিবার সকালে ৪০-৫০টি বিস্ফোরণের পর ঘন ধোঁয়া দেখা যায়। ছবিটি তুলেছেন হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি তারেক মাহমুদ রনি।
নাফ নদীর ওপারে শনিবার সকালে ৪০-৫০টি বিস্ফোরণের পর ঘন ধোঁয়া দেখা যায়। ছবিটি তুলেছেন হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি তারেক মাহমুদ রনি।
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মাত্রা বেড়েছে। শনিবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপার থেকে টানা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ থামার পর সীমান্তে ওপারে দেখা গেছে ঘন ধোঁয়া।

হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বলিবাজার ও নাগাকুরা পাড়া। ওই দুই এলাকার মাঝামাঝি একটি গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ব্যবসায়ী তারেক মাহমুদ রনি।

তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম শোনা গেছে। কিন্তু মধ্যরাতের পর থেকে গোলাগুলির শব্দের পাশাপাশি একের পর এক ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।

শনিবার ভোরের পর বিস্ফোরণের শব্দ বেড়ে যায় জানিয়ে তারেক মাহমদু বলেন, “সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টার মধ্যে পর পর ৪০-৫০ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এরপর পরই দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গেছে আগুন। ওখানে গ্রামটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এই আগুন বেলা ১২টা পর্যন্ত দেখা যায়। এরপর ধোঁয়া কমেছে।”

২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকটেও এভাবে সীমান্তের ওপারে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ আর আগুনের ধোঁয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ।

সীমান্ত এলাকার লোকজন জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, পৌরশহর ও সাবরাং এলাকা কেঁপে উঠেছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, রাখাইন রাজ্যে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের তীব্রতা দুইদিন ধরে বেড়েছে। নাফ নদীর ওপারে বিস্ফোরিত মর্টার শেলের বিকট শব্দে এপার কেঁপে উঠছে। সীমান্ত এলাকার হাজারো মানুষ খেতখামারে যেতে পারছেন না।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, মর্টার শেলের বিকট শব্দে তার এলাকায় কম্পন অনুভূত হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘনঘন কম্পনে শিশুদের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, অনেকে ভয়ে কান্নাকাটি করছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে নাফ নদীর বুকে জেগে ওঠা তোতারদিয়া দুই সপ্তাহ আগে আরাকান আর্মি দখলে নেয়। এখন মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী সেটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গুলি এসে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সর্তক রয়েছে।

এদিকে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের মানুষ গত তিনদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাননি বলে জানিয়েছেন।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত