গতির ঝড়ই চলল কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে। দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতে ব্যাট করে অলআউট ৫৫ রানে। জবাবে ভারত গুটিয়ে যায় ১৫৩-তে। এর মধ্যে ০ রানে তারা হারিয়েছে ৬ উইকেট! টেস্ট ইতিহাসই এমন কিছু দেখেনি কখনও। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়ারা ৬২ রানে হারায় ৩ উইকেট।
সব মিলিয়ে একদিনে ২৩ উইকেটের পতন দেখল নিউল্যান্ডসের ২২ গজ। এটা কোনো টেস্টের প্রথম দিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট পতন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যেকোনো দিনই যৌথভাবে সর্বোচ্চ। তাই প্রশ্ন উঠছে নিউল্যান্ডসের উইকেট নিয়ে।
ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বাসই করতে পারছেন না, এমন কিছু ঘটেছে নিউল্যান্ডসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি লিখেছেন, ‘’২৪-এ ক্রিকেট শুরু হলো একদিনে ২৩ উইকেট দিয়ে। অবিশ্বাস্য! দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হওয়ার সময় বিমানে চেপেছিলাম। এখন আমি বাড়িতে আর টিভি দেখাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেট হারিয়েছে (দ্বিতীয় ইনিংসে, মাঝে ভারত অলআউট হয়েছে)। আমি কি মিস করলাম?’’
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্সও হতবাক উইকেটের এমন আচরণে, ‘‘প্রথম দিনেই এত গতিময় উইকেট আগে দেখিনি নিউল্যান্ডসে। অসমান বাউন্স ও অনেক সিম মুভমেন্টও ছিল। গতি বেশি থাকলে ব্যাটারদের সমস্যা নেই, তবে বাউন্স ধারাবাহিক হতে হয়। এখানে বাউন্স কিছুটা অধারাবাহিক ছিল, কিছু বল নীচু হয়েছে, কিছু লাফিয়েছে। সিম মুভমেন্টও ছিল অনেক। ম্যাচে প্রথম দিনে সিম মুভমেন্ট থাকতেই পারে। অসম বাউন্সের সঙ্গে সিম মুভমেন্ট থাকলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে।’’
উইকেট বদলে যাওয়ার একটা ব্যাখ্যাও দিলেন প্রিন্স, ‘‘বেশ আগে যখন ইংল্যান্ডে খেলেছি, বিশেষ করে নটিংহ্যামে তখন স্থানীয়রা বলছিলেন নির্মাণকাজের জন্য উইকেটের চরিত্র বদলে গেছে। নিউল্যান্ডসেও সেটা ভূমিকা রেখেছে কি না জানি না। এখানে প্রচুর নির্মাণকাজ চলছে।’’
শুরুতে ব্যাট করা সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না বলেও জানালেন প্রিন্স, ‘‘ মাঠে আসার পর যদি দেখতাম আকাশ মেঘলা, তাহলে হয়ত বোলিং নিতাম। কিন্তু নীল আকাশ আর ঝকঝকে আবহাওয়া ছিল। নিউল্যান্ডসে শেষ দিকে স্পিন ধরার প্রবণতা থাকে। তাই ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। আমার মনে হয় না, পিচ কেমন আচরণ করবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকে কেউ দিতে পারবে।’’
মোহাম্মদ সিরাজ যে প্রান্ত থেকে ৬ উইকেট নিয়েছেন, সেই প্রান্তে বলের বাউন্স ছিল অসমান। অন্য প্রান্তে বল লাফিয়েছে একটু বেশি। নিউল্যান্ডসে ১৯টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলতে নামা ডিন এলগারও হতবাক এমন উইকেট দেখে। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা এই তারকা জানালেন, “জানি না আসলে, এই উইকেটকে কেমন বলা যায় । দুই প্রান্তে বাউন্স ছিল দুই রকম। খালি চোখে উইকেট খারাপ ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটেও সব স্বাভাবিক ছিল। টেস্টে কেন এমন আচরণ করল, জানি না আমি।’’