Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নির্বাচনবিরোধী শান্তিপূর্ণ জনমত সৃষ্টিতে অসুবিধা নেই: সিইসি

বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিইসি।
বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিইসি।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

নির্বাচনবিরোধী শান্তিপূর্ণ জনমত সৃষ্টিতে অসুবিধা নেই জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সহিংস পন্থায় নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা হলে সংকট তৈরি হবেই। সোমবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পাওয়া বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “তারা (নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো) শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের বিরুদ্ধে, নির্বাচনের বিপক্ষে বক্তব্য রাখছেন। তাতে কোনো অসুবিধা নেই, তারা জনমত সৃষ্টি করতে পারেন। কিন্তু সহিংস পন্থায় যদি নির্বাচনের বিরুদ্ধাচরণ করা হয় বা যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তাদের যদি বাধা প্রদান করা হয় তাহলে অবশ্যই সংকট দেখা দিবে।”

তিনি বলেন, “সেই সংকট নির্বাচন কমিশনকে মোকাবেলা করতে হবে। কারণ নির্বাচন আমাদের নির্ধারিত সময়ে করতে হয়। এখানে প্রতিহত করার চেষ্টা আসতে পারে। বিপত্তি আসতে পারে তারপরও এই দায়িত্বটা আমাদের পালন করতে হবে।”

সরকার গঠন নির্বাচন কমিশনের কাজ নয় জানিয়ে সিইসি বলেন, “আমাদের কাজটা খুব সীমিত, নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের মাধ্যমে যদি সরকার নির্বাচিত না হয় তাহলে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হওয়ার অবকাশ থাকে না।”

ঢাকার আগারগাওঁয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) ও বেগম রাশেদা সুলতানা। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারও ছিলেন বিশেষ অতিথি।

নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে সিইসি বলেন, “অনেকেই বলেন ওনারা (নির্বাচন কমিশন) নির্বাচনটা তিনমাস পিছিয়ে দিলে ভালো হতো। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। কিন্তু নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই।

“তারা মনে করেন, নির্বাচন কমিশন অসীম ক্ষমতার অধিকারী। প্রয়োজনে তিন মাস, তিন বছর বা ৩০ বছর পিছিয়ে দিতে পারে। এগুলো সত্য নয়। যারা রাজনীতিবিদ তারা অবহিত আছেন একটা নির্ধারিত সময়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে হয়।”

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ৪৩ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “সর্বোচ্চ দায়িত্বটা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কখনোই তার একক শক্তিতে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। এ কারণেই সংবিধানে, আরপিওতে সুষ্পষ্ট করে বলা আছে নির্বাচন পরিচালনা করতে কমিশন যেভাবে জনবল চাইবে রাষ্ট্র বা সরকার তা দিতে বাধ্য।”

বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি স্থিতিশীল অবস্থানে থিতু হতে পারেনি বলে মনে করেন সিইসি। তিনি বলেন, “এটা ঐতিহাসিক সত্য। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন দেখেছি। মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হলেও সেটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। কারণ নিরুঙ্কুশ অর্থে সামান্যতম অনিয়মও যে হবে না এটা কখনোই বলা যাবে না।”

নির্বাচনে কিছুটা উত্তাপ ছড়াবে জানিয়ে সিইসি বলেন, “কিছুটা গণ্ডগোল হতে পারে। সহিংসতা হতে পারে। এগুলো  খুব বেশি ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। যেটা অসহনীয় সহিংসতা সেটা প্রতিরোধ করতে হবে।”

২০১৪ সালের নির্বাচন সর্বজনীন হয়ে ওঠেনি উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “১৮ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। পরবর্তীতে সেই নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। পাবলিক পারসেপশনটা ইতিবাচক হয়নি। নির্বাচন শুধু সুষ্ঠু হলে হবে না।

“নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, অবাধ হয়েছে, ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন- এই বিশ্বাসযোগ্যতা যদি না থাকে তাহলে পাবলিক পারসেপশন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যদি রং পারসেপশন গড়ে ওঠে সেটাই সত্য পারসেপশন।”

সিইসি বলেন, “আমাদের চেষ্টা করতে হবে যতদূর সম্ভব নির্বাচনটাকে দৃশ্যমানভাবে স্বচ্ছ করে তুলতে হবে। দৃশ্যমানতার মাধ্যমে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইন্টারন্যাশনাল ডাইমেনশন আছে। সেটাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির কাছে দেখাতে হবে নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।”

ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় ভোট আয়োজন করতে চান বলে অনুষ্ঠানে জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব। তিনি বলেন, “নির্বাচনটা যেন ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য, ভবিষ্যতে যারা নির্বাচন কন্ডাক্ট করবে তাদের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয় এবং মনে রাখার বিষয়বস্তু হয়।”

প্রার্থীদের ‘উচ্চবংশের ও মেধাবী’ উল্লেখ করে আহসান হাবিব বলেন, “তবুও কিন্তু পথে ঘাটে, নির্বাচনের মাঠে অনেক প্রকারের ঘটনা ঘটে, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব ঘটে কিছু অতি উৎসাহী কর্মী, পথভ্রষ্ট কর্মী এবং সন্ত্রাসীদের কারণে। এসব অপরাধ দমন করার জন্য আপনারা মাঠে থাকবেন।”

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা বলেন, “আমরা কমিশন চাচ্ছি এবার ভোটটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ভোটাররা আসবে, তাদের অত্যন্ত মূল্যবান অধিকার- এই অধিকার প্রয়োগ করে তাদের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিবে। এই জায়গায় আপনাদের সহযোগিতা চাই। সামান্যতম অপরাধ যারা করবে তাদের প্রতি আপনারা কখনোই ক্ষমাশীল হবেন না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত