Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪

ন্যাটোকে মোকাবেলায় কতটা সক্ষম রাশিয়া

Russia_Nato
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে টানাপোড়েন ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি অনেকটা সরাসরি সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক।

স্নায়ুযুদ্ধের পর আর কখনও এই দুই পক্ষের মধ্যে এতো উত্তেজনা দেখা যায়নি। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ থেমে যাবে, এমন কোনও সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। উল্টো রাশিয়া বধে পরিকল্পনা এটেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনে অভিযানের শুরুতে কিছুটা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল রাশিয়া। তবে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে অল্প দিনেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং উন্নতি করেছে দেশটি।

তবু প্রশ্ন থেকেই যায়, ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সামরিক জোটকে মোকাবেলা করতে যথেষ্ট উন্নতি করতে পেরেছে কি রাশিয়া?

রুশ সেনাবাহিনী

ইউক্রেনে যুদ্ধের সময় রাশিয়ার পদাতিক বাহিনীর কলেবর বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। তবে প্রশিক্ষণ ও সমর সরঞ্জাম ঘাটতির কারণে অধিকাংশ সেনার গুণগত মান বজায় রাখা যায়নি। রাশিয়ার বিজয়ের একমাত্র পথ হল ব্যয়বহুল দীর্ঘ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং ইউক্রেনের তুলনামূলক ছোট সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করতে তার বৃহৎ সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করা।

যুদ্ধের শুরু থেকে ঠেকে ঠেকে শিখেছে মস্কো। রাশিয়া বুঝতে পেরেছে, প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের জন্য দুর্বলমানের সৈন্যরাই বেশি উপযুক্ত। ২০২৩ সালে দক্ষিণ ইউক্রেনের সমতল ও উন্মুক্ত গ্রামাঞ্চলে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণকে ঠেকিয়ে দিয়েছিল ওই যোদ্ধারাই। রাশিয়া শিখেছে, যুদ্ধে উন্নতমানের যোদ্ধাদের শুধু আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের জন্যই ব্যবহার করা উচিৎ।

নৌ পদাতিক, ভিডিভি নামে পরিচিত বায়ুসেনা এবং রাশিয়ার বিশেষ বাহিনী স্পেটসনাজের মতো অভিজাত ইউনিটগুলো এখন আরও ভাল সরঞ্জাম পাচ্ছে। পাশাপাশি মিলছে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ ও দক্ষ কর্মকর্তা।

নাটকীয়ভাবে এসবের আকারও বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ নৌসেনা সংখ্যা পাঁচ ব্রিগেড থেকে পাঁচ ডিভিশনে উন্নীত হচ্ছে। তার মানে ২০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার হচ্ছে।

রাশিয়ার সামরিক পরিকল্পনাকারীরা মূল সেনা ইউনিট হিসেবে ব্রিগেড থেকে দ্রুত ডিভিশনে চলে যাচ্ছেন।

যুদ্ধক্ষেত্রে উচ্চ মৃত্যুহার রাশিয়াকে শিখিয়েছে, একটি ব্রিগেড ভারি ক্ষতি সহ্য করে কার্যকর থাকতে পারে না। তবে একটি বৃহত্তর ডিভিশন তা পারে এবং বদলি সেনা না আসা পর্যন্ত লড়াই চালাতে পারে।

ট্যাংকের বহর

যুদ্ধের আগে ট্যাংকগুলো প্রায় অদরকারি বিবেচিত হলেও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই অঞ্চল দখলের লড়াইয়ে ট্যাংক বাহিনীর ওপর খুব বেশি ঝুঁকেছে। কিন্তু ড্রোন, মাইন ও কার্যকর বিমান বাহিনীর অভাবের কারণে উভয় পক্ষেরই ক্ষতির পরিমাণ বেশি।

বিশেষত রাশিয়ার ট্যাংকের ক্ষতি হয়েছে বেশি। কিয়েভের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া ৮ হাজারের বেশি ট্যাংক হারিয়েছে। পশ্চিমাদের অনুমান, রাশিয়ার অর্থনীতি এখন যুদ্ধের মধ্যে বছরে দেড় হাজার ট্যাংক তৈরি করতে পারে। তবে এর একটি বড় অংশ সংস্কার করা পুরনো মডেলগুলো দিয়ে তৈরি করা হয়।

রাশিয়ার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নতুন টি-৯০ মডেলের ট্যাংকের উৎপাদনের গতি ধীর। ফ্রন্টলাইন ইউনিটগুলোকে এখন ৪০ বা ৫০ বছর বয়সী ট্যাংকগুলোতে করেই খোলা মাঠ অতিক্রম করতে হবে। অর্থনৈতিক পূর্বাভাস বলছে, অদূর ভবিষ্যতে এই অবস্থায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম।

উদ্ভাবন

সামরিক সরঞ্জামের এই স্পষ্ট অভাব সত্ত্বেও, কিছু অগ্রগতি হয়েছে। রাশিয়া অবশেষে এই সত্য বুঝতে শুরু করেছে যে, ২১ শতকের যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন আকারের ড্রোন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো গ্রহণের ফলে রাশিয়া ইউক্রেনের সামরিক উপস্থিতি শনাক্ত করে আগে-ভাগেই হামলা চালাতে পারছে।

এতে হালনাগাদ তথ্যের উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক ও সঠিকভাবে হামলা চালানোও সম্ভব হয়। ফলে শত্রুর ক্ষয়ক্ষতিও হয় বেশি।

রাশিয়ার ইলেকট্রনিক যোদ্ধা ইউনিটগুলোও ইউক্রেনের কৌশলগত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক জ্যাম করতে এবং ইউক্রেনের ড্রোনগুলোকে ফাঁকি দিতে কার্যকরভাবে সক্ষম হয়েছে। ফলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পায়নি।

এই ইলেকট্রনিক যোদ্ধা ইউনিটগুলো অভিজ্ঞতা অনেক। ২০২২ সালে সংঘাতের শুরুতে যেমন ছিল তারচেয়ে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছে। ফলে স্থলপথের যুদ্ধে রুশ বাহিনী অনেক সুবিধা পায়। কিন্তু আকাশ পথের গল্প ভিন্ন।

দুর্বল বিমানবাহিনী

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর শাখাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল হল এর বিমানবাহিনী। অকার্যকর কৌশল বা নীতির কারণে রুশ বিমানবাহিনীর কর্মক্ষমতাও বেশ দুর্বল। এছাড়া বাহিনীটি সরঞ্জামের ক্ষয়-ক্ষতিও কাটিয়েও উঠতে পারছে না। পশ্চিমা সামরিক বাহিনীগুলোর মতো রাশিয়ার বিমান বাহিনীকে কৌশলগত বিমান অভিযানের জন্য প্রশিক্ষিত করা হয় না। শুধুমাত্র স্থল বাহিনীর সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

রাশিয়ার বিমানবাহিনী ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর চেয়ে আকারে অন্তত চারগুণ বড়। কিন্তু তারপরেও আক্রমণের শুরুতে তারা ইউক্রেনের বিমানঘাঁটি, গোলাবারুদ ভাণ্ডার এবং রাডার সাইটগুলো ধ্বংস করতে পারেনি।

বিপরীতে, পশ্চিমা বিমান বাহিনীগুলো স্থলবাহিনীকে সহায়তার পাশাপাশি শত্রুকে ব্যাপকভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। সামিরক স্থাপনাসহ স্থলভাগে শত্রু সেনাদলের ওপরও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। পশ্চিমা বিমানবাহিনীগুলো যুদ্ধের শুরুতে হামলা চালিয়ে শত্রুর কৌশলগত ক্ষতি করে তাদের স্থল বাহিনীকে অপেক্ষাকৃত বাধাহীনভাবে অগ্রসর হতে সহায়তা করে।

ইউক্রেন যুদ্ধে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া তার এই দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে। কিয়েভের ব্যাপক আকাশ প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও ইউক্রেনের গভীরে প্রবেশ করে কার্যকরভাবে হামলা চালাতে পেরেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো।

এছাড়া ইরান থেকে কেনা ড্রোনগুলোকে সস্তা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। একসঙ্গে শতশত ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিয়েছে।

রুশ বিমান বাহিনী ইউক্রেনের আওতার বাইরে থেকেই তাদের হামলা চালানোর সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছে। আর প্রায়ই রাশিয়া থেকেই গ্লাইড বোমা উৎক্ষেপণ করেছে। এসব বোমা প্রায় নির্ভুলভাবে ইউক্রেনের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে বিমানঘাঁটি থেকে রাশিয়ার বোমারু বাহিনী নিয়মিতভাবে উড়ে এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে ইউক্রেনের উপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে।

নৌবাহিনী

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতিটি শাখাকে প্রভাবিত করেছে যুদ্ধ। দেশটির নৌবাহিনীও এর ব্যতিক্রম নয়। ইউক্রেনের হামলায় রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগরীয় বহরের জাহাজ ও সাবমেরিনগুলো একের পর এক ডুবে গেছে, এর সদর দপ্তর ধ্বংস হয়েছে এবং এর কমান্ডারদের হত্যা করা হয়েছে।

তারপরেও রুশ নৌবাহিনী একটি শক্তিশালী বাহিনী। তারা তাদের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরগুলোতে নিরাপদ এবং ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের আওতার বাইরে। রাশিয়ার সাবমেরিন বাহিনী বিশাল এবং একটি শক্তিশালী পারমাণবিক প্রতিরোধ ফ্রন্ট গঠন করে।

রুশ নৌবাহিনীতে নতুন আরও ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে। নতুন ও উন্নত অস্ত্রশস্ত্রও দেওয়া হচ্ছে।

নৌ পদাতিক বাহিনী পাঁচগুণ বড় করা হচ্ছে। এতে যুক্ত হচ্ছে উন্নত সব যুদ্ধ জাহাজ। তবে রাশিয়ার বাস্তবে কার্যকরী কোনও বিমানবাহী রণতরী নেই।

যুদ্ধ অর্থনীতি ও মিত্র

ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট প্রতি বছর বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালে তা যুদ্ধের আগের সময়ের চেয়ে দ্বিগুন হয়ে ১৪২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।

রুশ সামরিক-শিল্প নিয়মিতই ট্যাংক, পদাতিক যুদ্ধের যানবাহন, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদ ও কামান তৈরি করেও যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারছে না।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাব ফেলেছে। কারণ উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধ সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় চিপ আমদানি করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। আধুনিক অস্ত্র, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র খুবই জটিল। এগুলো কামানের গোলার মতো সহজেই তৈরি করা যায় না।

ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়াসহ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে প্রচুর পরিমাণে নির্ভুল, সস্তা ও বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন হবে। সে জন্য রাশিয়া তার মিত্রদের দিকে ঝুঁকেছে।

ইরান রাশিয়াকে শাহেদ-১৩৬-এর মতো দূরপাল্লার অ্যাটাক ড্রোন তৈরিতে সাহায্য করেছে। এছাড়া ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ফাতেহ ৩৬০-এর মতো কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে।

চীন রাশিয়াকে প্রকৃত অস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানো বন্ধ রাখলেও প্রচুর পরিমাণে শোরা তথা বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত সাদা পাউডার ও উন্নত ইলেকট্রনিক চিপ সেট পাঠাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়া বিপুল পরিমাণ কামানের গোলাবারুদ ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমন খবরও রয়েছে যে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে পদাতিক যুদ্ধের যানবাহন এবং উন্নত কামান পাঠাতে শুরু করতে পারে, যদিও তাদের সমরাস্ত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। উত্তর কোরিয়ার দেওয়া অস্ত্রশস্ত্র ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার কুখ্যাতি রয়েছে।

রুশ সামরিক বাহিনীর উপর যুদ্ধের গভীর প্রভাব পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে ভুল থেকে শিক্ষা নিলেও বিশ্বের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে যে, রুশ সেনাবাহিনীর সক্ষমতায় ঘাটতি আছে। মিত্রদের কাছ থেকে সাহায্য পেলেও এর অর্থনীতি লোকসান ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে।

রুশ সেনাবাহিনীর কিছু উন্নতিও হয়েছে। তাদের কর্মকর্তারা এখন আরও অভিজ্ঞ। ইউনিটগুলোর সংগঠিত করার প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। সামরিক পরিকল্পনাকারীরা এখন রাশিয়ার প্রতিরক্ষার গভীরতা, দূরপাল্লার আক্রমণ, প্রচুর কামান ও সেনা সংখ্যার ব্যবহার করে দনেৎস্কে ভালোই খেলছে।

দিগন্তে ন্যাটো

ছোটখাটো এসব উন্নতি সত্ত্বেও রাশিয়ার ন্যাটোকে মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা তৈরি হয়নি। ২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণের পর ন্যাটো জোট পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এর সদস্যদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বেড়েছে।

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্রের উৎপাদন নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পশ্চিমা সামরিক পরিকল্পনাবিদরা ধারণা পেয়েছেন, একটি বড় যুদ্ধের ক্ষেত্রে ন্যাটো বাহিনীর কী পরিমাণ অস্ত্রের প্রয়োজন হতে পারে।

প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের দিক থেকে ন্যাটোর সৈন্যদের মান রাশিয়ার সৈন্যদের চেয়ে অনেক ভালো।

কয়েক দশকের সামরিক সহযোগিতা ও মহড়ার পর ন্যাটোর দেশগুলোর মধ্যে কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণের পার্থক্য দূর হয়েছে।

পশ্চিমা অস্ত্রের গুনগত মানও ভালো। ফলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচলিত যেকোনও যুদ্ধে ন্যাটো দ্রুত জয়লাভ করবে। তবে আশঙ্কার ব্যাপার হল, পরাজয়ের মুখে রাশিয়া কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

যাইহোক, শান্তি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ বিরতি হলে রাশিয়া নিজেকে পুনরায় অস্ত্রসজ্জিত করার সুযোগ পাবে।

রাশিয়া সম্ভবত তার প্রতিরক্ষা বাজেট কমাবে না। এর মধ্যেই তাদের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় সামগ্রিক বাজেটের ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী পুনর্গঠিত হবে, ট্যাংকের সংখ্যাও বাড়বে এবং নীতি ও কৌশলে পরিবর্তন আসবে।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী কতটা খারাপ পরফরমেন্স করতে চলেছে তা জানলে হয়ত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের নির্দেশ দিতেন না।

অনেক পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের মতো তারও বিশ্বাস ছিল, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে, আরও ভালোভাবে সজ্জিত করা হয়েছে এবং যেকোনও যুদ্ধে জয়ী হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ফলে ইউক্রেনের নিম্নমানের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে জয় পাওয়াতো কোনও ব্যাপারই না।

কিন্তু পুতিনের সেই বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়। তবে যুদ্ধে বিরতির মধ্যে তার সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ এবং পুনরায় সজ্জিত করার ফলে পুতিনের আবারও একই ভুল বিশ্বাস তৈরি হতে পারে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তিনি কোনও ন্যাটো সদস্যের বিরুদ্ধেও একই ভুল করতে পারেন। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস অনেকটা একজন বিপজ্জনক বন্ধুর মতো।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত