বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০১৯ সালে নির্বাচিত হওয়া ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল ওই পদে ‘অবৈধভাবে’ ছিলেন বলছে হাইকোর্ট।
এই পাঁচ বছরে ওই পদ ধরে রেখে তিনি যে বেতন-ভাতার টাকা নিয়েছেন, তাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষেদের ২০১৯ সালের নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে ভোটের পরই হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন দুই প্রার্থী।
ওই ভোটের ফল নিয়ে ২০২০ সালেও আরেকটি রিট আবেদন করা হয়।
এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
রায়ে আদালত ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে বেতন-ভাতা ও যানবাহন সুবিধাসহ গ্রহণ করা ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৬১৯ টাকা তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে বলেছে।
এছাড়া ওই নির্বাচনের দুই প্রার্থীর মধ্যে আব্দুল হালিমের প্রার্থিতাকে বৈধ ঘোষণা করে এবং এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে আদালত।
আদালতে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন।
সোহেল চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
পরে রায়ের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ২০১৯ সালে। সেই নির্বাচনে বিভিন্ন কারণে দুই প্রার্থী আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়।
এ বাতিলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দুটি রিট আবেদন করেন ওই প্রর্থীরা।
রিট আবেদনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের ফল চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে।
এই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আগামী ৫ জুন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
পূর্বে জারি করা রুলের সঙ্গে নতুন করে ঘোষণা করা নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে আরেকটি আবেদন করা হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এই রিট আবেদনটি করেন স্থানীয় বাসিন্দা কাজী জায়েদ মো. গোলাম ফারুক।
সব আবেদনের শুনানি শেষে বৃস্পতিবার হাইকোর্ট রায় দেয়। আব্দুল হালিমের প্রার্থিতা বৈধ এবং মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে এ সময়ে গ্রহণ করা বেতন-ভাতাসহ সুবিধা ফেরত দিতে নির্দেশ দেন।
তবে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাব।