ইরান মনে করে, তার সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক ‘বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের’। কোনও শত্রুকে এই সম্পর্কে চিড় ধরাতে দেবে না তারা। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই বলেছেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে তিন দিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইসলামাবাদের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ক রক্ষার ওপর জোর দিল তেহরান।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের সীমান্তবর্তী শহর পাঞ্জগুরে মঙ্গলবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান। এতে দুই শিশু নিহত হয়। এর দুই দিন পর বৃহস্পতিবার ভোরে ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের এক গ্রামে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। হামলায় ৪ শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়।
ইসলামাবাদের হামলার নিন্দা জানিয়ে তেহরানে পাকিস্তানের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে ইরান। তার কাছে হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি অনুরোধ করা হয়, ইরানে কেন হামলা করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা যেন পাকিস্তান সরকার দেয়।
এরপর ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে ইরান অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের গ্রামটিতে ‘বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা ভারসাম্যহীন এবং অগ্রহণযোগ্য’।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ, ভ্রাতৃত্বসুলভ সরকার ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে’ যে ফারাক আছে, তা ইরান সরকার জানে।
পাকিস্তানের মাটিতে এই ‘সন্ত্রাসীরা’ যাতে ঘাঁটি করতে না পারে, বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামাবাদের প্রতি সেই আহ্বানও জানানো হয়।
ইরানে হামলার বিষয়ে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ও বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) নামের দুটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ গোপন আস্তানায় সফলভাবে হামলা চালানো হয়।
তবে ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনা তাদের প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানের হামলায় যে ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের কেউই ইরানি নন।
এর আগে মঙ্গলবার পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী শহর পাঞ্জগুরে জইশ-আল-আদল নামের এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করেছিল ইরান।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে ইরান থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে দেশটি।
সূত্র : ডন