আপিল বিভাগের আদেশের পর পুলিশ সড়কে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিলেও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশের বাধা ঠেলে আগের দিনগুলোর মতোই ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নেতা-কর্মীরা।
কোটা পুনর্বহালের রায়ে ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা জারির পর এদিন দুপুরেই ঢাকা মহানগর পুলিশ সতর্ক করেছিল, আন্দোলনকারী কেউ সড়কে অবস্থান নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুপুর থেকেই শাহবাগে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল। একটি সাঁজোয়া যানও সেখানে রাখা ছিল।
বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিল শাহবাগে আসার পর পুলিশ প্রথমে আটকে দিয়েছিল।
কিন্তু বেশিক্ষণ ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি, কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর সেই মিছিল পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে শাহবাগের সড়কে অবস্থান নেয়।
এর মধ্যেই পুলিশের রায়টকারটি ঠেলতে থাকে শিক্ষার্থীরা। তখন পুলিশ সেটিও সরিয়ে নিয়ে যায়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে মাসের শুরু থেকেই শাহবাগে নিয়মিত অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তারা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘বাংলা ব্লকেড’।
প্রথমে শুধু শাহবাগে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও কয়েকদিন পর তা ঢাকার আরও কিছু স্থানেও পালিত হয়।
বুধবার দিনব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছিল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’; তাতে পুরো রাজধানীর সড়ক অচল হয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।
২০১৮ সালের এক আন্দোলনে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নিয়োগে ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিল করে ওই পরিপত্র দিয়েছিল সরকার।
তবে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের বৈধতা নিয়ে আদালতে আবেদন হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাসে ওই পরিপত্রটি হাইকোর্টের এক রায়ে বাতিল হয়।
এরপর আন্দোলনকারীরা সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তারপর আন্দোলন শুরু করে।
এরমধ্যে সরকার হাইকোর্টের রায় স্থগিতে আপিল বিভাগে আবেদন করে। সেই আবেদনে বুধবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দেয়।
আদেশের সময় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এটাও বলেন যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য আদালতকে জানাতে পারে।
এরপর বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগের আদেশের পর আর আন্দোলনের সুযোগ নেই।
শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।”