সংক্ষিপ্ত স্কোর : চেন্নাই টেস্ট
ভারত ১ম ইনিংস : ৩৭৬/ ১০ ও ২য় ইনিংস : ২৮৭/৪ ডিক্লে.। বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৪৯/১০ ও ২য় ইনিংস : ২৩৪/১০ (শান্ত ৮২, জাকির ৩৩, সাদমান ৩৫, সাকিব ২৫; অশ্বিন ৬/৮৮, জাদেজা ৩/৫৮)।
ফল : ভারত ২৮০ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
চেন্নাই টেস্টের শুরুটা অবিশ্বাস্য ছিল বাংলাদেশের জন্য। ভারতের মাটিতে এমন দাপট কম দলই দেখাতে পারে। দলটির প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৪ রানে ৬ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এরপর আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি সফরকারীদের।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে লড়াইহীন বড় হার জুটল বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংসে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করেছেন। শেষ ইনিংসে বাংলাদেশকে দ্রুত অলআউট করেছেন ৮৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে। ৫১৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ম্যাচ হারে ২৮০ রানে।
বাংলদেশের হার অশ্বিনের প্রথম ইনিংসের ওই সেঞ্চুরির কাছেই। নাজমুল হোসেন শান্তদের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন চেন্নাইয়ের লোকাল হিরো। ১৩৩ বলে ১১৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন অশ্বিন। ৮৬ রান করা রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ১৯৯ রানের জুটি গড়ে ভারতের জয়ের পথ তৈরি করেন।
টেস্টে লড়াইয়ে থাকতে হলে বা ম্যাচ জিততে চাইলে প্রথম ইনিংসে ৩০০ রান করতেই হবে। বাংলাদেশ এ জায়গাতেও হেরেছে। প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হার প্রায় নিশ্চিত করেন শান্তরা। দ্বিতীয় ইনিংসে শুভমন গিলের ১১৯ ও ঋষভ পান্তের ১০৯ রানের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভারত বিশাল টার্গেট দেয় বাংলাদেশকে।
৫১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে টেস্ট জেতা অসম্ভব। প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রান করা দলের পক্ষে তো বটেই। তবুও দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুটা ভালো করেছিলেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। সেই লড়াইটা লম্বা করা হয়নি তাদের।
টেস্টের সেরা দল ভারত বোলাররা নিজেদের মাটিতে এমনিতেও ভয়ঙ্কর। সেই ধারাবাহিকতা রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে লড়াই শুরু করা বাংলাদেশকে চেপে ধরেন তারা। পুরো ইনিংসে নাজমুল শান্ত একা লড়েছেন। ব্যাট হাতে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এই ব্যাটার।
গত বছর সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। এরপর রানের খোঁজে ছিলেন। ১০ ইনিংস পর নিজের সেরা ইনিংসটা খেললেন। ভারতের মাটিতে চেন্নাইয়ের পিচে অশ্বিন-জাদেজাদের একের পর এক রিভার্স সুইপ করা শতভাগ আত্মবিশ্বাস ছাড়া অসম্ভব।
শান্তর রিভার্স সুইপগুলো দেখে সাবেক ভারত স্পিনার ও ধারাভাষ্যকার মুরলি কার্তিক বলছিলেন, “রিভার্স সুইপ করা খুবই সাহসের ব্যাপারে। বিশেষ করে বল বের হয়ে যাওয়ার সময় (অশ্বিন অফস্পিন শান্তর জন্য লেগ স্পিন)। শান্ত অশ্বিনকে অনায়াসে রিভার্স করছে। এটা তার নিঁখুত হ্যান্ড-আই কো-অরডিনেশনের দারুণ উদাহরণ।”
শান্তর জন্য আক্ষেপ। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি মিস করেছেন সঙ্গীর অভাবে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটির পর শান্তকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ মিরাজ-লিটনরা। ক্রিজে গিয়েই বড় শট খেলার লোভে লিটন ও মিরাজ দুজনই উইকেট বিলিয়ে আসেন। পরে টেলএন্ডারদের নিয়ে শান্তও আর আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলেন না। তাই জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১২৭ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৮২ রানে থামেন।
সাকিব ১৯৪ রানে ফেরার পর বাকি ৫ উইকেটে মাত্র ৪০ রান করতে পারে বাংলাদেশ। তবে নাগপুরে দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংস থেকে ভালো কিছু নিতে পারবে সফরকারীরা।