Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

প্রেমের প্যারিসে অলিম্পিকের জমকালো উদ্বোধন

hjk
Picture of ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রীড়া ডেস্ক

স্টেডিয়ামে নয়, সেইন নদীতে হলো অলিম্পিকের জমকালো উদ্বোধন। নিজস্ব ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি মিশিয়ে চমক হাজির করেছে কবিতার শহর প্যারিস। শুধু কবিতা আর ভালোবাসা নয়, প্যারিস এখন অলিম্পিকেরও শহর।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই নদীর উপর ব্রিজ থেকে ছড়িয়ে পড়ে নীল-সাদা-লাল রং, যা ফ্রান্সের জাতীয় পতাকার রং। চমক ছিল খেলোয়াড়দের নৌকা করে নিয়ে আসায়। ৮৫ টি নৌকা করে এলেন অংশ নেওয়া খেলোয়াড়রা। অবিরাম বৃষ্টির মাঝেই পরিচয় করানো হল প্যারিসের সংস্কৃতির সঙ্গে।

পারফর্ম করছেন লেডি গাগা।

মুখোশে মুখ ঢাকা এক ব্যক্তি অলিম্পিকের মশাল নিয়ে ছুটে চললেন ফ্রান্সের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানের। নেপথ্যে ধরা রইল ফ্রান্সের ইতিহাস। রইল বিখ্যাত মোনালিসা চুরির ঘটনাও। চার ঘণ্টার অনুষ্ঠানের শেষের দিকে জ্বালিয়ে দেয়া হয় আলো, তাতে তৈরি হয় এক মায়াবি ছবি।

নদীর ধারে বসে থাকা দর্শকদের ভরসা ছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। সামনে দিয়ে ভেসে চলছিল বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের নৌকা। তবে দর্শকরা কোন দিকে চোখ রাখবেন, বুঝতে পারছিলেন না ঠিকঠাক!

অনুষ্ঠানের শুরুতে পানি দিয়ে তৈরি বিশেষ পর্দা ভেঙে প্রথমে এগিয়ে এসেছিল গ্রিসেরে নৌকা। পন্ট ডি’এলিনা ব্রিজের তলা দিয়ে বেরিয়ে আসে তারা। এরপর উদ্বাস্তুদের দল। বিভিন্ন দেশের নৌকা সেই পর্দা ভেদ করে এগিয়ে আসার সময় গান গাইছিলেন লেডি গাগা। পারফর্ম করেন আয়া নাকামুরাও।

জিদানের হাত থেকে অলিম্পিক মশাল নিচ্ছেন নাদাল।

১৭৮৩ সালে প্যারিসেই প্রথম গরম বাতাসের বেলুন উড়িয়েছিলেন মন্টগলফিয়ের ভাইয়েরা। অলিম্পিকের মশাল প্রজ্জ্বলণের পর সেটা গরম বাতাসের বেলুনে উড়িয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল ইতিহাসই।

ফিরে এসেছিল ১৭৮৩ সালের ইতিহাস।

লুভ্যর জাদুঘর ও প্লেস দে লা কনকর্ডের মাঝের তুঁলেরিয়েস গার্ডেনে প্রজ্জ্বলিত হয় প্যারিস অলিম্পিকের মশাল। ১৯৪৮ অলিম্পিকের সাইক্লিংয়ে সোনাজয়ী ও ফ্রান্সের সবচেয়ে বেশি বয়সী বেঁচে থাকা সোনাজয়ী শতবছর বয়সী সাইক্লিষ্ট চার্লস কোস্তে অলিম্পিকের মশাল তুলে দেন জুডোকা টেডি রেনার ও সাবেক স্প্রিন্টার মেরি-হোসে পেরেককে। মশাল প্রজ্জ্বলন করেন তারা।

১৮২০-র দশকে সৃ্ষ্টি হওয়া একটি বিশেষ নাচ ফিরিয়ে আনা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। নদীতে হওয়া ফ্যাশন শো, নাচ দেখার জন্য দর্শকদের ভরসা ছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। মোটা টাকায় টিকিট কাটলেও নদীর মাঝে কী ঘটছিল সেটা পাড় থেকে বসে দেখা ছিল অসম্ভব।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে মশাল হাতে নেন ফ্রান্সের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। তার হাত থেকে ২২ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী রাফায়েল নাদাল। নৌকায় করে সেই মশাল নিয়ে সিন নদীর উপরে দেখা যায় নাদাল, সেরেনা উইলিয়ামস, কার্ল লুইসকে। আইফেল টাওয়ার জুড়ে আলোর খেলা তখন। সেটা যেন ১০০ বছর পর প্রেমের শহরে অলিম্পিক ফেরার আলো।

 

গান গাইলেন সেলিন ডিওন। ১৯৯৬ সালের অ্যাটলান্টা অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও গান গেয়েছিলেন তিনি। প্রায় দেড় বছর পর কনসার্টে ফিরেন তিনি। সিনের বুকে এই আয়োজন চলার সময় শর্ট ফিল্মে মুখোশধারী এক লোককে দেখা যায় মশাল হাতে ঘুরতে। তার সঙ্গে দেখা জিনেদিন জিদানের । লুভ্যর থেকে হারিয়ে যাওয়া মোনালিসাকে খুঁজে পাওয়া গেল সেইনের বুকে!

মুখোশ পরা নাম না জানা সেই রহস্যময় মানুষটি ১৯১১ সালে চুরি হয়ে যাওয়া মোনালিসার ছবির ভাঙা ফ্রেমের সামনে বসে ছিলেন নতজানু হয়ে । মিনিয়নসদের সেটা খুঁজে পাওয়ার দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয় পর্দায়। উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শকরা।

গান গাইছেন সেলিন ডিওন।

ফ্রান্সের ১০জন অসাধারণ নারীর ভাস্কর্যও উন্মোচন করা হয় মার্চপাস্টের একটি জায়গায়। এরপর অলিম্পিকের পতাকা অর্পণ করতে কৃত্রিম ঘোড়ায় চড়ে সিন পাড়ি দিলেন কৃত্রিম জোয়ান অব আর্ক! এরপরই হয় প্যারিস অলিম্পিকের পতাকা উত্তোলন।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) সভাপতি টমাস বাখ  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বললেন, ‘‘ গোটা বিশ্বকে একসূত্রে গাঁথে অলিম্পিক। আমাদের অলিম্পিক বিশ্বে কোনো দক্ষিণ বা উত্তর নেই।’’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত