সকাল সন্ধ্যা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর এক নতুন কূটনৈতিক মেরুকরণ দেখতে পাচ্ছি আমরা। ভারত ও রাশিয়া ছিল মুক্তিযুদ্ধের মিত্রপক্ষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থেকে পাকিস্তানকে সহায়তা করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল চাপের মুখে থাকলেও চীন বাংলাদেশের অন্যতম মিত্রের ভূমিকায়। বিশ্বকূটনীতির এই পালাবদল নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
এম হুমায়ুন কবির: দুই সময়ের দুটো প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ভিন্ন এই কারণে যে একাত্তর সালে বাংলাদেশের মানুষ— সবাই প্রায় একসাথে ছিলাম, ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। আমরা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে একত্রিতভাবে এককণ্ঠ হয়ে একটা লক্ষ্য অর্জনে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলাম। অন্যদিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটও ভিন্ন ছিল। বিশ্বজুড়ে তখন স্নায়ুযুদ্ধকালের বাস্তবতা।
এটা ঠিক যে তখনকার প্রেক্ষাপটে, বস্তুত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলাদেশই একমাত্র রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্র একটা প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। একাত্তর সালটা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক ছিল বৈরি। কিন্তু একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, মে-জুলাইয়ের দিকে পাকিস্তানের দূতিয়ালিতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সম্পর্ক তৈরির একটা উদ্যোগ চালানো হয়। এর মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশার বিপক্ষে চলে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তারা তখন জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাংগঠনিক কাঠামোর বিষয়টিকে বড় করে দেখছিল। নিজেদের পারষ্পরিক স্বার্থের কারণেই।
অন্যদিকে, ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছিল এবং ভারতের মিত্র রাশিয়াও বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
সকাল সন্ধ্যা: কয়েক বছর আগে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন বেড়ে চলেছে। আর ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উচ্চকণ্ঠ দেশে-বিদেশে সমালোচিত হচ্ছে। এছাড়া কিছুদিন আগে জাপানের রাষ্ট্রদূতও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন। একইসঙ্গে দেখা যাচ্ছে চীন ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতরাও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বাংলাদেশকে ঘিরে বিশ্বশক্তিগুলোর অবস্থান কি বদলে যাচ্ছে? আর এমন কূটনৈতিক শোরগোলেরই বা কারণ কী?
এম হুমায়ুন কবির: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমার মনে হয়— এখনকার এই কূটনৈতিক শোরগোলের কেন্দ্রবিন্দুটা হলো— বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং কাঠামোগত বিদ্যমান অসম্পূর্ণতা।
এছাড়া খেয়াল করলে দেখবেন, একাত্তর সালে বাংলাদেশকে ঘিরে বিশ্বশক্তিগুলোর যে অবস্থান ছিল, অনেক শক্তিই এখন ঠিক তার বিপরীত অবস্থান নিয়েছে। একাত্তরে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ছিল ভারত এবং রাশিয়া আর বিপক্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এখন আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, বিশ্বশক্তিগুলো আগের ভূমিকার বিপরীত অবস্থান নিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এখন বাংলাদেশে তারা একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন চায়। সবার অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন চায়। বাংলাদেশে কেমন নির্বাচন হলে তারা সেটাকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে যে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে সেটিকেই গ্রহণযোগ্য বলে তারা মনে করবেন। খেয়াল করুন, বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশার সঙ্গে এখানে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া অনেকটা সাজুয্যপূর্ণ বলে মনে হয়।
অন্যদিকে, এখন আমরা দেখছি চীন, রাশিয়া এবং ভারত যেন অনেকটা একটা বিশেষ দল বা ওই দলের সরকারের সমর্থনে অবস্থান নিয়েছে। তারা হয়তো মনে করছে যে, এই দল বা সরকার হলে তাদের স্বার্থটা সংরক্ষিত হবে। বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশার বিষয়টি তাদের মনোযোগের কেন্দ্রে নেই। এই বিবেচনায় বলা যায় যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ভারত, চীন ও রাশিয়া সব পক্ষই তাদের আগের অবস্থান বদলেছে।
সকাল সন্ধ্যা: বিশ্বজুড়ে বহু যুদ্ধ-গণহত্যার মদতদাতা বিশ শতকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার কদিন আগে শতবর্ষী হয়ে মারা গেলেন। মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবতী সময়ে ‘কিসিঞ্জার’ শব্দটি বাংলাদেশে একটি গালি হিসেবে বহুল প্রচলিত। বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব-সমাজ কিসিঞ্জারকে কিভাবে মূল্যায়ন করবে বলে মনে করেন?
এম হুমায়ুন কবির: এখানে দুটো বিষয়। একটা বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে কিসিঞ্জারকে দেখবে আরেকটা বিশ্ব কিভাবে কিসিঞ্জারকে মূল্যায়ন করবে। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে কিসিঞ্জারকে ভালোভাবে নেবার কোনো সুযোগ নেই। কারণ কিসিঞ্জারই প্রধান দূতের কাজ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে সরম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এবং সেই কারণেই তিনি পাকিস্তানের পক্ষে দৃঢ় সমর্থনের অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি বাংলাদেশে একাত্তরে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে সেটাও তিনি উপেক্ষা করেছেন পাকিস্তানের কাঠামোগত অখণ্ডতা রক্ষার অবস্থান নিয়ে। বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের আকুতি যেমন তিনি দেখেননি তেমনি মানবতা বিরোধী অপরাধও তিনি দেখেননি।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকেও যদি দেখি সেক্ষেত্রেও হেনরি কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে অনেক গুরুতর অভিযোগ থাকছেই। একাত্তরের আগে-পরের সময়টাতে বিশ্বজুড়ে অনেক কিছুই আমরা দেখেছি। আমরা তখন তরুণ। ভিয়েতনামের যুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধ কিভাবে ক্যাম্পোডিয়া ও লাওসে সম্প্রসারিত হয় সেটা আমরা দেখেছি। আমরা চিলিতে সালভাদোর আলেন্দের অপসারণ দেখেছি। পৃথিবীর নানা প্রান্তে যুদ্ধ-গণহত্যা এবং সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার অবস্থান এবং বিশেষত হেনরি কিসিঞ্জারের ভূমিকা আমরা দেখেছি। তিনি প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। এসব ক্ষেত্রে যে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সেটি তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন এবং অন্যরাও তাকে অভিযুক্ত করেছেন, মূল্যায়ন করেছেন। এই মূল্যায়ন প্রধানত নেতিবাচক। তবে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে দেখলে বলতে হবে, কিসিঞ্জার তার সময়ের সৃষ্টি।
সকাল সন্ধ্যা: একজন কূটনীতিক হিসেবে হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে কি আপনার কখনও দেখা হয়েছে?
এম হুমায়ুন কবির: দেখা হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে। আমি তখন জাতিসংঘে বাংলাদেশের দপ্তরে কাজ করি। তখন জাতীয় সংসদের স্পিকার প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। ঢাকায় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সভায় কিসিঞ্জারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন স্পিকার। তখন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আমিও গিয়েছিলাম কিসিঞ্জারের সঙ্গে দেখা করে তাকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দিতে।
সকাল সন্ধ্যা: সেই সাক্ষাতে কি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ এসেছিল? বা সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেছিলেন?
এম হুমায়ুন কবির: আমার মনে আছে, নিউ ইয়র্কের ফিফথ এভিনিউতে তার বিশাল অফিসকক্ষে আমরা প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই রাষ্ট্রদূত আনোয়ার করিম চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, ‘‘মি. এম্বাসেডর ডোন্ট গেট মি রং।’’ এরপর তিনি যা বলেছিলেন তার অর্থ দাঁড়ায় যে, তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিলেন না কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশের অভ্যুদয় হচ্ছিল তিনি সেটার পক্ষে ছিলেন না। এরপর তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে তার সফরের কথাও বলেছিলেন।
সকাল সন্ধ্যা: স্বাধীনতাত্তোর কালে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা দেওয়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৬তম বড় অর্থনীতির দেশ। পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে। এই বাস্তবতায় বিশ্বশক্তিগুলোর মেরুকরণ আর নানামুখী চাপ বাংলাদেশ কিভাবে মোকাবেলা করবে?
এম হুমায়ুন কবির: বাংলাদেশের যেমন অর্থনৈতিকভাবে প্রভূত উন্নতি হয়েছে তেমনি সাম্প্রতিককালে এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। চীন গত চল্লিশ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রায় সাজুয্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছে। এখন আবার চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে যাচ্ছে। এখানে আবার ভারতের সঙ্গেও চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও প্রায় উত্তেজনাকর পর্যায়ে গিয়ে হাজির হয়েছে। ফলে, ভূ-রাজনীতির দুই স্তরের কম্পনই আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং বৈশ্বিকভাবেও আমরা কৌশলগত অবস্থান ও স্বার্থের পালাবদল দেখতে পাচ্ছি।
এখন আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট, যে সংকট, সেটাকে বিশ্বশক্তিগুলোর তাদের পারষ্পরিক বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা থেকে দেখবার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে আমার যেটা মনে হয়, অভ্যন্তরীণভাবে আমাদের বিভাজন যত বাড়বে এসব ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা মোকাবেলার ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতাও ততই কমবে। মনে রাখতে হবে, ভূ-রাজনৈতিক এসব নাড়াচাড়া যারা করছেন, এসব কম্পন যারা সৃষ্টি করছেন তাদের তুলনায় কম শক্তিশালী দেশ হিসেবে আমাদের ওপরই তাদের নিয়ন্ত্রণ বেশি, তাদের ওপর আমাদের না।
সকাল সন্ধ্যা: বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই জোট নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে আসছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কি বাংলাদেশের জোট নিরপেক্ষতার নীতি বা পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে করছেন?
এম হুমায়ুন কবির: একটা কথা মনে রাখতে হবে সব দেশই পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করে নিজেদের জাতীয় স্বার্থ ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে। বাংলাদেশও সেভাবেই পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করেছে এবং এখনও করছে। স্বাধীনতা-উত্তর বাস্তবতা আর আজকের বাস্তবতা এক নয়। সেটা যেমন বাংলাদেশের দিক থেকে তেমনি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও।
গত দুই দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। অর্থনীতির এই সম্প্রসারণ আসলে একটা চেইনের মতো বাকি বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাক। এই খাতে গত বছর আমরা ৫২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছি। আমরা তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানি করি চীন, ভারত ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো থেকে। কিন্তু রপ্তানি করি প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় বাজারে।
এখানে কিন্তু আমাদের পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপার নেই। এটা বাস্তবতা। পররাষ্ট্রনীতি নীতি কেবল কেবল রাজনৈতিক মতাদর্শের বিষয় নয়, অর্থনীতি এক্ষেত্রে একটা বড় চালিকাশক্তি। আরেকটা বিষয় হলো, গত ৫২ বছরে আমরা নানা ভাবে নানা স্তরে পশ্চিমের এবং পূর্বের বহু দেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। এটা একদিনে হয়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে সম্প্রতি আমরা নানা কারণে এই সম্পৃক্ততাগুলো দুর্বল করে ফেলছি। তাই এখনকার কোনো সংকটের কারণে আমরা যেন এই সম্পৃক্ততা থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
আরেকটা কথা বলা ভালো যে, আমরা অভ্যন্তরীণ রাজনীতি দিয়ে পররাষ্ট্রনীতি বা বাইরের পৃথিবীটাকে বোঝার চেষ্টা করি। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি দিয়ে বিশ্ব প্রেক্ষাপটটা বোঝা যাবে না বরং জটিলতা তৈরি হবে। বাইরের পৃথিবীটা ভিন্ন পৃথিবী, সেটা বাংলাদেশ নয়। বৃহৎ বাস্তবতায় বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে চলতে হলে তাদের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। তবে, কূটনীতি বলেন পররাষ্ট্রনীতি বলেন সেটা পরিচালনার মূলনীতি হলো— জাতীয় স্বার্থ। এর নিচে নামবার কোনো সুযোগ নাই। এর নিচে নামলে পররাষ্ট্রনীতি নেতিবাচকভাবে প্রভাবান্বিত হবার শঙ্কা আছে। আর জাতীয় স্বার্থ একটা সামগ্রিক বিষয়, সেখানে দেশের সব শ্রেণির সব মানুষের অর্থাৎ দেশের জনসাধারণের সামষ্টিক কল্যাণের চিন্তা মাথায় রাখতে হয়, সবার মতামতের প্রতিফলন থাকতে হয়।
সকাল সন্ধ্যা: আপনাকে ধন্যবাদ।
এম হুমায়ুন কবির: আপনাকেও ধন্যবাদ।