ছলছলে চোখ। আবেগে রীতিমতো কাঁপছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। সন্তানদের নিয়ে সিডনির মাঠে নেমেছিলেন ম্যাচ শুরুর আগে। পা দুটো যেন সরতেই চাইছিল না। বিদায়ী টেস্ট খেলতে নামা যে কারও জন্য যা স্বাভাবিক।
দিনের শুরুতেই অবশ্য ব্যাট করা হয়নি ওয়ার্নারের। টস জিতে পাকিস্তান শুরুতে ব্যাট করে অলআউট ৩১৩ রানে। দিন শেষের কিছুক্ষণ আগে পাকিস্তান অলআউট হলে একটা ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় অস্ট্রেলিয়া।
ওয়ার্নার ব্যাট হাতে নামার সময় করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান সিডনির দর্শকরা। আর বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শান মাসুদরা গার্ড অব অনার দিয়েই জানায় সম্মান। ৬ বলে ৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার রানও ৬।
০ রানে আউট দুই ওপেনার
সাইম আয়ুবের অভিষেক হয়েছে সিডনি টেস্টে। সেটা ভুলেই যেতে চাইবেন ২১ বছরের এই তরুণ। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩টি সেঞ্চুরি করা সাইম আউট হয়েছেন ০ রানে। অপর ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক তো প্যাভিলিয়নে ফেরেন দিনের দ্বিতীয় বলেই। তাই ০ রানে আউট হওয়ার অনাকাংখিত একটা রেকর্ডও গড়েন শফিক ও সাইম।
প্রথমবারের মতো নতুন বছরের প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনার আউট হলেন শূন্য রানে। পঞ্চম পাকিস্তানি হিসেবে অভিষেক টেস্টে ০ রানে ফিরলেন সাইম আয়ুব। তার চার পূর্বসূরী রিজওয়ান-উজ-জামান, সাঈদ আনোয়ার, শাকিল আহমেদ জুনিয়র ও নাভিদ লতিফ।
প্রথম ইনিংসে ওপেনাররা ০ রানে ফিরেছেন ১৫বার
কোনো টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনারের শূন্য রানে আউট হওয়ার এটি ১৫তম উদাহরণ। ১৯৩৩ সালে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে দুই ওপেনার ০ রানে আউট হয়েছিলেন প্রথমবার। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার হার্বার্ট সাটক্লিফ ও এডি পেইন্টার শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন কিউইদের বিপক্ষে।
বাংলাদেশের দুই ওপেনার দুবার ০ রানে আউট হয়েছেন প্রথম ইনিংসে। ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট প্রথমবার কোন রান না করে ফেরেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। ২০২২ সালের মেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরেই ০ রানে ফেরেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান।
আমের জামাল-মির হামজার প্রতিরোধ
বক্সিং ডে টেস্টের দুই ইনিংসেই ৫টি করে উইকেট নিয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। আজ সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক নেন ৫ উইকেট। ২০১৭ সালে নাথান লায়নের পর প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসাবে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি।
কামিন্সের আগুনে পুড়ে একটা সময় ৯৬ রানে ৫ আর ২২৭ রানে ৯ উইকেটে পরিণত হয়েছিল পাকিস্তান। এরপর ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য প্রতিরোধে স্কোর ৩১৩ পর্যন্ত নিয়ে যান আমের জামাল ও মির হামজা। দশম উইকেটে দুজন গড়েন ৮৬ রানের জুটি।
তৃতীয় টেস্ট খেলা ফাস্ট বোলার জামাল ব্যাট করেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটারদের মতই। ৯৭ বলে ৯ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায় ৮২ রান করেন তিনি। ৪৩ বলে ৭ করে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মির হামজা।
এছাড়া মোহাম্মদ রিজওয়ান ৮৮, আগা সালমান ৫৩, শান মাসুদ ৩৫ আর বাবর আজম করেন ২৬ রান। প্যাট কামিন্স ৫টি, মিচেল স্টার্ক ২টি ও ১টি করে উইকেট জস হ্যাজেলউড, নাথান লায়ন ও মিচেল মার্শের।