ঘরের মাঠে ভারত সবসময়ের ফেভারিট তা কেউই অস্বীকার করবে না। বাংলাদেশও এই সত্য মেনে নেওয়াদের তালিকায়। ভারতের মাটিতে আগের তিন টেস্টের ফল বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণও।
তবে নতুন হাওয়ার ঝাপটায় অতীত উড়ে যেতেই পারে। বাংলাদেশ এখন নতুন অর্জনের পথে হাঁটে। সেই পথচলায় এবার ভারতের মাটিতে তাদের দম্ভকে জোড় ধাক্কা দেওয়ার সুযোগ।
গত দশ বছরে ঘরের মাঠে ভারত মাত্র চারটি টেস্ট হেরেছে। আর প্রায় এক যুগ ধরে দেশের মাটিতে সিরিজ হারের ঘটনা নেই তাদের। এদিকে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সাফল্য খুব কম হলেও ২০২১ থেকে দিন বদলের শুরু হয়েছে।
টেস্টে লাল-সবুজদের যত প্রথম তার অনেকটাই এসেছে নিকট অতীতে। ২০২২ সালে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হারানো এবং সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমবার সিরিজ জয়। বিদেশের মাটিতে মোট ৬৭ টেস্টে আটটি জয় পেয়েছে টাইগাররা। তার চারটিই এসেছে ২০২১ সালের পর।
এই নতুন পদযাত্রায় এবার সামনে ভারত। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষে থাকা জায়ান্টদের বিপক্ষে তাদের মাটিতে টেস্ট জয় খুব কঠিন। তবে স্বাগতিকদের আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দেওয়াই যায়। টেস্টে ভারত ক্রিকেটারদের বিরতির সুযোগটা নিতে পারে বাংলাদেশ।
ভারত সবশেষ ৬ মাসে কোনো টেস্ট খেলেনি। বিরাট কোহলি সবশেষ লাল বলে খেলেছেন এ বছর জানুয়ারিতে। ঋষভ পান্ত ও লোকেশ রাহুলও লম্বা বিরতির পর টেস্টে নামবেন। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারত ক্রিকেটাররা ছুটিতেই ছিলেন। ভারত ক্রিকেটারদের এমন অবসর দেখা সত্যিই বিরল।
টেস্টে ফিরতে চাই রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন বেশ ভারতের বেশ কয়েকজন। তবুও এতদিন পর টেস্টে ফেরার নড়বড়ে ভাবটা থাকবেই।
স্বাগতিকদের ধাক্কা দিতে হলে বাংলাদেশ এদিকটাতে পাখির চোখ করতে পারে। পাকিস্তানকে হারানোর কাছাকাছি সময়ে টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের জন্য বাড়তি পাওয়া। জড়তা ধরার সুযোগ নেই। বরং পাকিস্তানকে হারানোর আত্মবিশ্বাস পুঁজি করা যাবে ভালোভাবেই।
নতুন সিরিজে বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হবে চেন্নাইয়ের উইকেট। আইপিএলে চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা মোস্তাফিজুর রহমান দলে থাকলে এ উইকেটের বর্তমান চরিত্র জানা কঠিন হতো না বাংলাদেশের। এখন সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে জানতে হবে। তবে এই টেস্টের উইকেট চেন্নাইয়ের প্রথাগত স্পিন সহায়ক না হয়ে পেস সহায়ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তার কারণ ভারত দলে তিন পেসারের উপস্থিতি। বুমরাহ-সামি-সিরাজ তিনজনই ভারতের টেস্ট স্পেশালিস্ট। সবশেষ ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ভারত একাদশে তিন পেসার রেখেছিল। এবারও তেমনই হতে যাচ্ছে। সঙ্গে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা থাকবেন। পঞ্চম বোলার স্পিনার না পেসার তা নিয়ে ভাবছে ভারত।
একই ভাবনা বাংলাদেশেরও। নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ পাকিস্তানে দারুণ করেছেন। সঙ্গে সাকিব ও মিরাজ একাদশে অটোমেটিক চয়েজ। এবার তাসকিনকে রাখা হবে না তাইজুল একাদশে ঢুকবেন তা নিশ্চিত হবে উইকেটের চরিত্রের ওপর। বাকি দুই দলের ব্যাটাররা একই থাকবেন।
দুই দলেই পরিবর্তনের খুব একটা সুযোগ নেই। চেন্নাইয়ে টেস্টের ফলেও পরিবর্তনের সুযোগ কম। এই মাঠে সবশেষ ২০০৮ সালে ম্যাচ শেষ হয় অমীমাংসিত ভাবে। গত ১৬ বছরে এই মাঠে হওয়া ৫ টেস্টের সবকটিতেই ম্যাচে ফল হয়েছে।