ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করে বাংলাদেশের কোনও সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ছিটমহল ও সীমান্ত সমস্যার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাসের, সন্দেহের যে দেয়াল, সেই দেয়াল তারা ভেঙে দিয়েছেন।”
অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেয়াল রেখে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়— মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। গঙ্গা চুক্তিও কিন্তু আমরা করেছি। তিস্তা চুক্তির আলোচনার ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।”
বাংলাদেশকে ধৈর্য্য ধরতে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গায়ে পড়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি করে এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখনই একটি মহল ভারতবিরোধী অপ্রপ্রচারে লিপ্ত থাকে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
মাইনোরিটি (সংখ্যালঘু) ভাবনাটিকে দাসত্বের শিকল আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই শিকল ভেঙে ফেলার আহ্বান জানান।
সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “দাসত্ব কেন করবেন? মুসলমানের ভোট, আপনার ভোটের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে? কোনও ভোটের মূল্য বেশি, কোনও ভোটের মূল্য কম— এমনটা কি আছে? আমাদের সংবিধান কি এ কথা বলে? তাহলে আপনারা নিজেরা কেন মাইনোরিটি কমপ্লেক্সে ভুগবেন?”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আপনারা এ দেশের নাগরিক। এদেশের মুক্তিযুদ্ধ, এ দেশের স্বাধিকার, স্বাধীনতার সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব বাঙালির অবদান আছে। কারও অবদান কম নয়।”
তিনি বলেন, “হিন্দু ধর্মালম্বীদের সম্পত্তি, মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে যারা তাদের মনে কষ্ট দেন এইসব লোকের রাজনৈতিক পরিচয় যদিও থাকে, তাদের আসল পরিচয় এরা হচ্ছে দুর্বৃত্ত। এরা হিন্দুদের বাড়ি দখল, মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সকলের শত্রু।”
সনাতন ধর্মালম্বীদের অনেক দাবি পূরণ হয়নি এ কথা সত্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যেগুলো বাকি আছে সেগুলো করার ইচ্ছা আছে। না থাকলে নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার থাকতো না। দীর্ঘদিন যে সমস্যা জমা হয়ে আছে, এসব বিষয় যত দ্রুত সমাধান করা সম্ভব… প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।”
“এই সরকার যতদিন আছে, আপনাদের পাশে আছে। পাশে আছি, পাশে থাকব। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নাই,” বলেন তিনি।