দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নয়া দিল্লি কাশ্মীরের ঘটনায় ইসলামাবাদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার আস্থাভাজন কূটনীতিকদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছেন সমর্থন আদায়ের জন্য।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ এপ্রিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি আনন্দ প্রকাশ কাবুলে তালেবানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়াদি নিয়ে কথা করেন।
আফগান মন্ত্রী ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন। বৈঠকের পরদিন তালেবান এক বিবৃতিতে জানায়, আফগানিস্তান ভারতের জন্য কোনও হুমকি নয়।
ভারত ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদের মধ্যে সাম্প্রতিক আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তালেবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাফিজ জিয়া আহমদ; তবে এই আলোচনায় পহেলগামে হামলার বিষয়টি ছিল কি না, তা বলেননি তিনি।
এই বৈঠকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি আফগানিস্তানে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে দেশটির বাণিজ্য ও অবকাঠামো খাতে অনুকূল পরিবেশ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান। বিশেষ করে আফগান রোগী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ করতে অনুরোধ জানানো হয়। তিনি বলেন, “ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।”
আফগানিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়, “বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য ও ট্রানজিট সহযোগিতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।”
ভারতের কূটনীতিক আনন্দ প্রকাশ আফগানিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে সম্পর্ক সম্প্রসারণে ভারতের আগ্রহের কথা জানান। তিনি আশ্বাস দেন যে, ভারত আফগানিস্তানে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। যেসব প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলো পুনরায় শুরু করার কথাও তিনি জানান।
দুই পক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো, প্রতিনিধিদল আদান-প্রদান ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকের অংশ হিসেবে আনন্দ প্রকাশ আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গেও দেখা করেন। তারা আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং ভারত-আফগানিস্তান সম্পর্ক জোরদার করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ভেঙে পড়ার পথে। বাণিজ্যিক পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায়, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মাথায় রেখে কাবুল ও নয়াদিল্লি পারস্পরিক বিশ্বাস তৈরি করার চেষ্টা করছে। কারণ দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যকার ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কারণে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের গুরুত্ব
তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। এতে বোঝা যায়, ভারত আবার কাবুলে তার হারানো প্রভাব ফিরিয়ে আনতে চায়।
আফগানিস্তান বিষয়ে বিশ্লেষক শ্যান্থি মারিয়েট ডি’সুজা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সাংবাদিকদের বলেন, “ভারতের নীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে কাবুলে তার হারানো প্রভাব পুনরুদ্ধার এবং পূর্বের সংযোগগুলো পুনঃস্থাপন করা।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত সেই অঞ্চলে নিজের প্রভাব পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে চীন ২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে নিজের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে।”
ভারত দীর্ঘদিন ধরে তালেবানকে পাকিস্তানের প্রভাবাধীন বলে মনে করে এসেছে। এখন তালেবানের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বাড়ানো প্রমাণ করে, নয়াদিল্লি আঞ্চলিক বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে।
আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর তালেবান ২০২১ সালে আফগানিস্তান দখল করে। তারপর থেকেই আফগানিস্তানে ভারতের বহু বছরের বিনিয়োগ থেমে যায়।
এই শূন্যতার সুযোগ নেয় ভারতের প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তান। তারা দ্রুত অঞ্চলটিতে তাদের প্রভাব বাড়িয়ে তোলে।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তালেবানের মাধ্যমে আফগানিস্তানে কৌশলগত প্রভাব বজায় রেখেছে এবং এটি ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
তবে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের তিন বছর পর পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে যে, পাকিস্তানের তালেবান (টিটিপি) আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে, তালেবান এখন ভারতের দিকে আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। যদিও তালেবানের নারী ও সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়ন ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। তাই নয়া দিল্লির জন্য এটি একপ্রকার সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষার বিষয়।
ভারত তালেবানের কাছে স্পষ্ট দাবি জানিয়ে আসছে যে, আফগানিস্তানের মাটি যেন ভারতের বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার না হয়। এই শর্তে ভারত সীমিত যোগাযোগ বজায় রাখছে এবং মানবিক সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়া।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান আফগানিস্তানকে একটি কৌশলগত এলাকা হিসেবে দেখে, যেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ২০২১ সালের প্রত্যাহারের পর নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চায়।”
ভারতের এই কূটনৈতিক তৎপরতা তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথে কিছুটা সুবিধা এনে দিয়েছে বলে ‘দ্য প্রিন্ট’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
কেন আফগানিস্তান চাপের শিকার হতে পারে
আফগানিস্তান অতীতেও ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, কারগিল যুদ্ধের সময় তালেবান ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠ ছিল। তখন ভারত তালেবান-বিরোধী গোষ্ঠীকে (উত্তর জোট) সমর্থন দেয়। এতে প্রক্সি যুদ্ধ বাড়ে।
২০১৬ সালের উরি হামলার পর ভারত সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি জোরালভাবে তুলে ধরে, এর মধ্যে আফগানিস্তানও ছিল। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত আফগান গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়ায়, যাতে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর উপর নজর রাখা যায়।
বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতির ফলে আফগানিস্তান উদ্বিগ্ন। কারণ পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন যেমন জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) ও লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) আফগান মাটিকে ‘প্রক্সি যুদ্ধের’ জন্য ব্যবহার করতে পারে।
আফগানিস্তানের পক্ষে কোনও পক্ষ নেওয়া কঠিন। কারণ দেশটি দুই শক্তিশালী দেশের ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যেতে পারে। আর এই প্রেক্ষাপটে, আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে।
ভারত তালেবানকে বরাবরই সন্দেহের চোখে দেখে এসেছে। কারণ তালেবানের অতীত রয়েছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের। তালেবান কী করছে, কার সঙ্গে যুক্ত, এসব বিষয় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান অগ্রাধিকার।
কাবুলও বিষয়টি জানে এবং চায় না যে, আফগানিস্তানের মাটি ভারত-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর আশ্রয়স্থলে পরিণত হোক। এতে নয়া দিল্লির ক্ষোভ তৈরি হতে পারে।
এছাড়া আরেকটি উদ্বেগ হলো, আমেরিকান তৈরি অস্ত্র আফগানিস্তান থেকে ভারতে বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকে যেতে পারে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-২০১৮ সালে পুলওয়ামা ও ২০২২-২০২৪ সালে কিশতওয়ার-কাঠুয়া অঞ্চলে এমন অস্ত্র পাওয়া গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তালেবান দ্রুত পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করে এবং বলে, “এ ধরনের ঘটনা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে।”
এদিকে ভারত তালেবানের সঙ্গে দ্বিমুখী কৌশল গ্রহণ করতে পারে। একদিকে কৌশলগতভাবে সম্পর্ক বজায় রাখবে, অন্যদিকে পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারে এই আশঙ্কায় নিরাপত্তা প্রস্তুতি জোরদার করবে।
আফগানিস্তানের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত
আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে পাকিস্তানের ভৌগোলিক নির্ভরশীলতা এখন বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে অবনতি ঘটায় কাবুলের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের বড় অংশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
এখন আফগানিস্তানের বিকল্প হিসেবে রয়েছে ইরানের চাবাহার বন্দর। ভারত এই বন্দরটি উন্নয়নে সহায়তা করেছে যাতে পাকিস্তানকে বাইপাস করা যায়। তবে এই চাবাহার বন্দর এখনও পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না এবং এটি তুলনামূলক ব্যয়বহুল। ফলে স্বল্পমেয়াদে এটি আটারির পূর্ণ বিকল্প হতে পারছে না।
ভারত ও পাকিস্তানের উত্তেজনার কারণে আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম যেমন সার্ক বা অন্যান্য বাণিজ্য কাঠামোও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে আফগানিস্তান আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর বাজারে প্রবেশের সুযোগ সীমিত হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের দুর্বল অর্থনীতি আরও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। পণ্যের ব্যয় বাড়বে, পরিবহনে বিলম্ব হবে এবং বাণিজ্যিক বিচ্ছিন্নতা বাড়বে।
শুধু বাণিজ্য নয়, কাবুল ভারতের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা (যেমন খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম) বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন। এই সহায়তা বন্ধ হলে আফগান জনসাধারণ মারাত্মক সঙ্কটে পড়তে পারে।
পাকিস্তান থেকে তালেবানের ওপর চাপ
তালেবান পাকিস্তানের দিক থেকেও চাপের মুখে রয়েছে। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলো আবার তালেবানের ভেতরের কিছু অংশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইতে পারে।
কাবুল ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলে পাকিস্তান প্রতিক্রিয়ায় আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালাতে পারে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান এমন একটি হামলা চালায়, দাবি করে তারা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি লক্ষ্য করেছিল।
টিটিপি আদর্শিকভাবে আফগান তালেবানের সঙ্গে যুক্ত হলেও ইসলামাবাদের কাছে এটি একটি বড় হুমকি। কাবুল আরও আশঙ্কা করছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই গোপনে তালেবানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে, যা তাদের সরকারকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
এছাড়াও পাকিস্তানে অবস্থানরত লাখ লাখ আফগান শরণার্থীর ভবিষ্যৎও এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে এই শরণার্থীদের হয়রানি, প্রত্যাবাসন বা নিপীড়নের শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে তালেবানের কৌশল
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান। তারা নিজেদের এমন একটি শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, যারা বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। এই লক্ষ্যে তালেবান চাইছে না যে, তারা পাকিস্তানের ভারতবিরোধী এজেন্ডার সঙ্গে প্রকাশ্যে যুক্ত হোক। এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্বে তালেবান সরকার কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখে, তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।
আফগানিস্তান ও তালেবান সম্পর্কিত ভারতের অবস্থান
ভারত এখনও আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। নয়া দিল্লি কাবুলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের পক্ষে কথা বলছে। পাশাপাশি ভারত বারবার বলছে, আফগানিস্তানের মাটি যেন কোনও দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে ব্যবহৃত না হয়।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর ভারত তার দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয়। তখন নিরাপত্তার অভাব ছিল প্রধান কারণ। পরে ২০২২ সালের জুন মাসে ভারত আবার কাবুলে তাদের কূটনৈতিক উপস্থিতি পুনঃস্থাপন করে। এবার একটি “প্রযুক্তিগত দল” আফগানিস্তানে পাঠানো হয়।
ভারত চায় আফগান জনগণের জন্য অবাধ ও বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে। খাদ্য, চিকিৎসা ও জীবনধারার মৌলিক চাহিদা মেটাতে এই সহায়তা অত্যন্ত জরুরি বলে ভারত মনে করে।
তথ্যসূত্র : ফার্স্টপোস্ট, দ্য ওয়্যার, আল জাজিরা, দ্য প্রিন্ট