লিটন দাসের শিল্পিত সৌরভ, মুশফিকুর রহিমের নির্ভরযোগ্যতা; দুইয়ে মিলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিন চওড়া হাসি নিয়ে শেষ করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের চেয়ে এখনও ১৩২ রানে পিছিয়ে থাকলেও এই টেস্টে ভালো ভাবেই লড়াইয়ে আছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।
লিটন ও মুশফিকের ফিফটিতে ৫ উইকেটে ৩১৬ রানে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। লিটন ৫২ ও মুশফিক ৫৫ রানে অপরাজিত। দুজনে ৯৮ রানে অবিচ্ছিন্ন।
দিনের শুরুতে ওভারপ্রতি ২ রান করে আসছিল। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত ধীরে চলো গতিই ছিল বাংলাদেশের কৌশল। কিন্তু লিটন দাশ উইকেটে গিয়ে দিনটি শেষ করেছেন ওভারপ্রতি ৫ রানে। পাকিস্তান পেসারদের সামনে থেকে “সাকার পাঞ্চ” দিয়েছেন লিটন। তুলির আঁচড় দেওয়া কাভার-অন-কাট ড্রাইভগুলো চোখে লেগেছিল। সেসবে পুঁজি করে টি-টোয়েন্টি গতিতে পৌঁছে গেছেন ১৭তম টেস্ট ফিফটিতে।
৫৮ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় লিটনের ৫২ রানের ইনিংসের হাইলাইটস নাসিম শাহয়ের একটি ওভার। ওভারের শুরুতে লং অফ দিয়ে ইনসাইড আউট শটে চার মারেন লিটন। তা দেখে পেসার নাসিমের মেজাজ ঠান্ডা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। বোলিং এন্ড বদলে রাউন্ড দ্যা উইকেট থেকে লিটনকে বাউন্সে পরাস্ত করতে চেয়েছিলেন এই পেসার। অথচ ওভারের শেষদিকে সেই বাউন্সেই পুল করে অবিশ্বাস্য সুন্দর এক ছক্কায় বল স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠিয়ে দেন লিটন।
এরপরের ওভারে দুজনের তর্ক শুরু হয়ে যাচ্ছিল প্রায়, পরে তা থামিয়েছেন বাবর আজম। লিটনের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে খুব দ্রুত রান উঠতে থাকে বাংলাদেশের। অপরপ্রান্তে নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক মুশফিকুর রহিম দেখে শুনে পৌঁছে যান ক্যারিয়ারের ২৮তম টেস্ট ফিফটিতে। ১২২ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিকের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে রিভিউ নেয় পাকিস্তান। বিফল হওয়ায় এই ইনিংসে তাদের রিভিউয়ের সুযোগ শেষ হয়।
লড়াকু এই ইনিংসে দারুণ মাইলফলকও গড়েছেন মুশফিক। দেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫ হাজার রানের কোটা পার করেছেন। সব মিলিয়ে ৪৬২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা মুশফিকের রান এখন ১৫০২৩। শীর্ষে আছেন ৩৮৭ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৫১৯২ রান করা তামিম ইকবাল। ৪৪৪ ম্যাচ খেলে ১৪৬৪১ রান করা সাকিব আল হাসান আছেন তিনে।
মুশফিক-লিটনের ৯৮ রানের অপরাজিত জুটির আগে চা বিরতির পর সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। পার্টটাইম স্পিনার সাইয়াম আইয়ুবের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে দাঁড়ানো শান মাসুদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। পুরো ইনিংসে এই একটি ভুলে শটে আউট হওয়ার উদাহরণ বাংলাদেশ ব্যাটারদের। সাকিবকে ফিরিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেট পেয়েছেন আইয়ুব।