Beta
রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ভিনিসিয়ুসের জোড়া গোলে ছন্দে ফিরল ব্রাজিল

গোলের পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত।
গোলের পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত।
[publishpress_authors_box]

কোপা আমেরিকায় ছন্দে ফিরলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ব্রাজিলও ফিরল সেই চিরচেনা ছন্দে। লাস ভেগাসের অ্যালেজিয়েন্ট স্টেডিয়ামের গ্যালারি দুলে উঠলো হলুদ ঢেউয়ে।

কোস্টারিকার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর শনিবার ব্রাজিল ৪-১ গোলে হারিয়েছে প্যারাগুয়েকে। রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র করেছেন জোড়া গোল। ১টি করে গোল করেছেন সাভিয়ো ও লুকাস পাকেতা। প্যারাগুয়ের একমাত্র গোলটি ওমর আলদেরেতের।

১ ড্র ও ১ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল ৯ বারের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নরা। ২ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ডি গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে কলম্বিয়া।

পরের ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে অন্তত ড্র করলেও পরের রাউন্ডে যাবে ব্রাজিল। তবে জিতলে সরাসরি উঠে যাবে নক আউট পর্বে।

গোলের পর ভিনিসিয়ুসকে জড়িয়ে দানিলোর উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত।

এবারের কোপায় ব্রাজিল যাদের ওপর সবচেয়ে বেশি ভরসা করছে তাদের অন্যতম ভিনিসিয়ুস। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন লিগ ও লা লিগা জেতা সেই ভিনিসিয়ুসকে খুঁজে পাওয়া যায়নি কোস্টারিকার বিপক্ষে।

যে বিখ্যাত ড্রিবলের জন্য পরিচিত ভিনিসিয়ুস সেটাও যেন উধাও ছিল আগের ম্যাচে। কিন্তু যে মুহূর্তে দলের প্রয়োজনে জ্বলে ওঠা সবচেয়ে জরুরী ছিল, সেই বাঁচা-মরার ম্যাচে দারুণভাবে জ্বলে উঠলেন। ভিনিসিয়ুসের প্রথম গোলটার খানিক আগেই দেখা মিলল সেই যাদুকরী ড্রিবলের। প্রধমার্ধে ৭ বার ড্রিবল করলেন, ৭ বার প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের সঙ্গে ‘ডুয়েলে’ জিতলেন।  ২টা সুযোগ তৈরি করলেন, ২টিতেই দিলেন গোল! যেন রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুস হতে চলেছেন ব্রাজিলেরও।

গ্যালারিতে ছিলেন নেইমার। ব্রাজিলের জয় দেখে মাঠ ছেড়েছেন এই তারকা ফুটবলার।

সত্যি বলতে জোগো বনিতো কিংবা সাম্বার ছন্দে নেচে ওঠা ব্রাজিলের সেই সুদিন হারিয়ে গেছে। ২০০২ সালের পর থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপে কান্না হলুদ-জ্বরের সমার্থক হয়ে আছে। সবচেয়ে বড় কথা গত দুই বছর ধরে ব্রাজিলের ফুটবল যে দুঃসময় পার করছে, তা সম্ভবত নজিরবিহীন। এতটা হতশ্রী ও দিশাহীন সময় বোধ হয় ব্রাজিল কখনও পার করেনি।

এবারের কোপা আমেরিকায় দরিভাল জুনিয়র যে দলটা নিয়ে এসেছেন, সেই দলের বড় অস্ত্র বলা যায় ভিনিসিয়ুস। যদিও ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট দেখে মনে হচ্ছিল এবারও বোধ হয় ব্রাজিল ঝলক স্তিমিতই হচ্ছে। দরিভাল এই ম্যাচের সবচেয়ে সাহসী ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেন রাফিনহাকে একাদশে না রেখে। যদিও ৭২ মিনিটে সাভিয়োর বদলি হিসেবে তাকে মাঠে নামান কোচ।

শুরুটা নড়বড়েই হয়েছিল ব্রাজিলের। সমর্থকদের মনে যেন আরও ভয় ঢুকিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা নিলেন লুকাস পাকেতা। ৩১ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি শট যে পাকেতা হাস্যকরভাবে মারলেন বাইরে! এ যেন হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলে দেওয়া।

অবশ্য ওই গোল মিসের হতাশা কাটাতেই কিনা ব্রাজিলের আক্রমণের ধার বেড়ে যায় আরও। অবশেষে ৩৫ মিনিটে আসে ব্রাজিলের কাঙ্খিত প্রথম গোল।

প্রথম গোলের পর সাভিয়োর উল্লাস।

বক্সের মধ্যে পাকেতার বাড়িয়ে দেওয়া বলে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র করেন ১-০। ডাগ আউটে বসে কোচ দরিভাল অবশেষে দিয়ে উঠলেন হাততালি। গ্যালারিতে খেলা দেখতে আসা কালো টি শার্ট পরা নেইমারের মুখেও ফুটে ওঠে হাসি।

এরপর সময় যতেই গড়িয়েছে ব্রাজিলের আক্রমণের ধার যেন বেড়েছে আরও। ৪৩ মিনিটে ব্রাজিল পায় ম্যাচের দ্বিতীয় গোল।

লুকাস পাকেতার শট প্রথমে প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক রদ্রিগো মরিনিগোর হাতে লেগে ফিরলে ডিফেন্ডার মাটিয়াস এসপিনোজা বল তুলে দেন সাভিয়োর পায়ে। সেটি জালে জড়াতে এতটুকু ভুল করেননি জিরোনার উইঙ্গার (২-০)।

বিরতিতে যাওয়ার খানিক আগে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র আবারও করলেন দুর্দান্ত গোল। এবার অবশ্য প্যারাগুয়ের ডিফেন্ডার ওমর আলদেরেতের ভুলে বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস। ওমর ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভিনিসিয়ুসের পায়ে বল তুলে দেন,  দারুণ ফিনিশিংয়ে ভিনিসিয়ুস মেতে ওঠেন উল্লাসে। ম্যাচের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের গোলে নেওয়া ৪ শটের ৩টাই জালে জড়িয়েছে।

মাঠে ব্রাজিলের এমন উদযাপন বারবার দেখতে চান সমর্থকেরা। ছবি: সংগৃহীত।

পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা ছিল প্যারাগুয়ের। ৪৯ মিনিটে সেন্টার ব্যাক ওমর আলদেরেত দারুণ এক দূরপাল্লার শটে ৩-১ করেন। স্কোর ৩-২ করার সুযোগ এসেছিল প্যারাগুয়ের। কিন্তু ৫১ মিনিটে দুর্দান্ত সেভ করেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। হুলিয়ো এনসিসোর শটটি কোনমতে কর্ণারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন।

৬৫ মিনিটে আবারও পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। এবার অবশ্য পাকেতা ভুল করেননি, দারুণ দক্ষতায় বল জড়ান জালে (৪-১)।

পাড়ার ক্লাবের মতো ম্যাচে দুই দলের ফুটবলাররা বারবার মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এই ম্যাচে ৫টি হলুদ কার্ড দেখেছেন দুই দলের ফুটবলাররা। শেষ দিকে এসে তো লাল কার্ড দেখেই মাঠ ছাড়তে হয় প্যারাগুয়ের মিডফিল্ডার আন্দ্রেস কিউবাসকে।

বাকি ৯ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে খেলেছে প্যারাগুয়ে। ভাগ্য ভালোই বলতে হবে, এরপরও প্যারাগুয়ের জালে আর কোনও গোল হয়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত