Beta
শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোটে দাঁড়ানোই যার নেশা

মোশারফ হোসেন  রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
মোশারফ হোসেন রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of লাবনী ইয়াসমিন

লাবনী ইয়াসমিন

একবার বা দুইবার নয়, নিজের ও স্ত্রীর মিলে জামানত হারিয়েছেন তিন বার। এবারও দাঁড়িয়েছেন ভোটে। কিন্তু নির্বাচনী এলাকাজুড়ে নেই কোনও পোস্টার, লিফলেট কিংবা বিলবোর্ড। এমনকি সঙ্গে নেই কোনও কর্মী-সমর্থকও। তারপরও তিনি দমার পাত্র নন। ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন একাই।

অদম্য এই প্রার্থীর নাম মোশারফ হোসেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তিনি।

শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নয়, এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন মোশারফ। বিষয়টা এমন হয়েছে, পরিস্থিতি যাই হোক, ভোটের মাঠে তিনি লড়াই করেই যাবেন।

মোশারফ হোসেনের বাড়ি গংগাচড়া উপজেলার বড়াইবাড়ী এলাকায়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছিলেন মাত্র ২৬৮ ভোট। তারপর চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পান আরও কম, মাত্র ৮৫ ভোট। দুবারই জামানত হারান তিনি।

তারপরও দমে না গিয়ে স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে দাঁড় করিয়ে দেন উপজেলা নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের ভাইস চেয়ারম্যান পদে।

প্রথমবারের নির্বাচনে রাবেয়া বেগম ভোট পান হাতেগোনা কয়েকটি। ফলে হারাতে হয় জামানত। পরেরবার স্ত্রীকে আবার দাঁড় করিয়ে দেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ভাইস চেয়ারম্যান পদে। দ্বিতীয়বারের এই চেষ্টায় অবশ্য জয়ী হন রাবেয়া বেগম।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোশারফ-রাবেয়া দম্পতির অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরও তারা বারবার কোনও না কোনও পদে ভোটে দাঁড়ান। রাবেয়া গরীব হলেও মানুষ ভালো, তাই তারা সবাই ভোট দিয়ে জিতিয়ে দেন।

কিন্তু মোশারফের ভোটে দাঁড়ানো যেন একটা রোগ হয়ে গেছে। গত সংসদ নির্বাচনেরও প্রার্থী হয়েছিলেন। পরে মাঠ থেকে সরে দাঁড়ান। এবারও সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন তিনি।

মোশারফের চাচাতো ভাই জুয়েল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ও আসলে ভোটভাইরাসে আক্রান্ত। ভোটপাগল মানুষটার ধ্যানজ্ঞানই নির্বাচন। জনগণকে খুব আপন মনে করে ও। এজন্যই হয়তো সবসময় ভোট করে।

“কিন্তু ভোটের পরে বোঝা যায় জনগণ তাকে কতটা ভালোবাসে। জনগণের সঙ্গে তার সম্পর্ক কতটা ভালো। জনগণ তাকে কতটা মূল্যায়ন করে। বিগত নির্বাচনের ফলগুলো দেখলেই বিষয়টা বোঝা যায়।”

বড়াইবাড়ি এলাকার সুমন মিয়াও বলছিলেন একই ধরনের কথা।

তিনি বলেন, “ভোটে দাঁড়ানোটাই তার পেশা। গত ভোটে স্ত্রীকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা সবাই মিলে সাহায্য করে তুলে দিয়েছি। আবারও দাঁড়িয়েছে ভোটে। কিন্তু ব্যানার, লিফলেট, পোস্টার কিছুই ছাপায়নি।”

তবে ইতিহাস যাই বলুক আগামী নির্বাচন ঘিরে প্রবল আশাবাদী এই প্রার্থী।

সকাল সন্ধ্যাকে মোশারফ হোসেন বলেন, “মাঠে আমার অনেক ভোট আছে। এগুলো এখন দেখানো যাবে না। বিএনপির লোকেরা সবাই আমাকে ভোট দেবে। ইনশাআল্লাহ আমার জয় হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত