দিল্লির পর আরেকটি রানের স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি হচ্ছে। দিল্লির চেয়েও রানে এগিয়ে শেষ ম্যাচের ভেন্যু হায়দরাবাদ। যেখানে ভারত দলের ওপেনার অভিষেক শর্মা ২৮৪ রান করেছিলেন ২৪৯.১২ স্ট্রাইকরেটে!
এমন রানের পিচে শেষ হতে যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ক্যারিয়ারে ১৪০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের শেষটা মাঠ থেকে হওয়া বড় স্বস্তির খবর। যা বাংলাদেশ ক্রিকেটে খুব একটা দেখা যায় না। অপ্রচলিত বিষয়টা হচ্ছে বটে, প্রশ্ন মাহমুদউল্লাহ শেষটা জয়ে রাঙাতে পারবেন কি!
সিরিজের আগের ম্যাচগুলোতে দেখলে এবার ফল পাল্টে যাবে এটা ভাবাও যায় না। টেস্ট থেকে শুরু করে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে অসহায় হার জুটেছে বাংলাদেশের। ভারতের সেরা দল নেই, দ্বিতীয় সারির দলের কাছেই নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। তাই সিরিজের শেষ ম্যাচে এই ভারতকেই হারিয়ে দেওয়া অকল্পনীয়।
মাহমুদউল্লাহর জন্য শেষটা জয়ে করাও তাই অকল্পনীয়। সে কাজটাই করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। নিজেদের সম্মান অর্জন করতে শেষ ম্যাচটা জয়ে তাকিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তরা। একটি জয়ে বদলাবে না কিছুই। টি-টোয়েন্টি মানসিকতার অভাব, স্কিলের কমতি, মিরপুরের উইকেটে খেলে এই ফরম্যাটে পিছিয়ে পড়া ; সবই আগের মতোই থাকবে। তবুও আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এক জয় সিরিজ শেষে বাংলাদেশের জন্য খুব প্রয়োজন।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ ২২২ রানের পুঁজি গড়েছে ভারত। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারানোর পরও এমন ঘুরে দাঁড়ানো অবিশ্বাস্য ছিল। নিতিশ রেড্ডি, রিংকু সিং-রা দলকে ওই অবস্থান এনে দেন। কিন্তু বাংলাদেশের এমন মুহূর্তে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো কেউ নেই।
ব্যাটিং দুঃখ পুরো সিরিজেই বাংলাদেশকে পুড়িয়েছে। মুমিনুল হকের এক টেস্ট সেঞ্চুরি ছাড়া এই বিভাগে সফরকারীদের গর্ব করার মতো কিছুই নেই। টি-টোয়েন্টিতে নতুন মুখ যোগ করেও সুফল কিছু দেখা যাচ্ছে না। পারভেজ হোসেন ইমনদের সঙ্গে লিটন দাস-তাওহিদ হৃদয়রা ম্যাচের শুরু থেকেই মারদাঙ্গা ক্রিকেট খেলতে থাকেন। কিন্তু সুফল পান না ইচ্ছার সঙ্গে ইন্টেন্টের সঠিক যোগসাজশ না থাকায়।
চোখ বুঁজে ব্যাট চালানোর মতো শট নিতে গিয়ে আউট হচ্ছেন প্রতিবার। সাকিব আল হাসান সবশেষ যে ফর্মে ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ সে ভাবেই এসেছেন যেন। ব্যাট হাতে ম্যাচের চিত্র বদলাতে ব্যর্থ হচ্ছেন সঙ্গে বল হাতেও কিছু করতে পারছেন না।
সবশেষ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ তার চরিত্র মেনে বল-রান সমান রাখা ইনিংস খেলেছেন। তাতে দলের কোন উপকারই হয়নি। দলের বাকি ব্যাটাররাও ভারত বোলারদের বিপক্ষে নিজেদের খুঁজে ফিরেই সময় কাটিয়েছেন। দিল্লির চেয়েও ভালো উইকেট হায়দরাবাদে, এখানে বাংলাদেশ ব্যাটারদের ভাগ্য ফিরবে তো!
ব্যাটারদের দুর্দশার সঙ্গে যোগ হয়েছে স্পিনারদের অসহায়ত্ব। দিল্লিতে রিশাদ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজরা ওভার প্রতি প্রায় ১৫ রান করে দিয়েছেন। যা বাংলাদেশ স্পিনারদের টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ। তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব ভালো বল করলেও মোস্তাফিজুর রং হারিয়েছেন আবার। তাই ব্যাটিংয়ের সঙ্গে নতুন রোগ বোলিং সমস্যাও যুক্ত হয়েছে।
সিরিজের শেষ ম্যাচ বলে ভারত দলে আজ পরিবর্তন আসতেই পারে। বেঞ্চে থাকা ক্রিকেটারদের দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। বাংলাদেশ দলেও পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। মেহেদি হাসান মিরাজের জায়গায় আজ সুযোগ পেতে পারেন শেখ মেহেদি হাসান। পারভেজ হোসেন ইমনের জায়গায় একাদশে সুযোগ হতে পারে তানজিদ তামিমের। আর কোন এক পেসারের জায়গায় সুযোগ হতে পারে রাকিবুল হাসানের। অবশ্য হায়দরাবাদের ব্যাটিং উইকেটে তিন স্পিনার নিয়ে খেলার সাহস বাংলাদেশ দেখাবে কিনা তাও একটা প্রশ্ন।