‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল একটা বেড়াল’- সুকুমার রায় ‘হ য ব র ল’র শুরুটা যা দিয়ে করেছিলেন, তাই যেন ফিরে এসেছিল নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে।
নিরাপত্তার চাদরে মোড়া এই শপথ অনুষ্ঠান যারা টিভির পর্দায় দেখছিলেন, তাদের চোখ আটকে গিয়েছিল মঞ্চের পেছন দিকে একটি প্রাণীর চলাচলের দিকে।
সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও দেখে সেই প্রাণীটি কী, তা জানতে মেতে ওঠে নেটিজানরা। কেউ কেউ বলে বসেন, এ তো দেখছি চিতা বাঘ!
নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবন সারাবছরই নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকে। সুরক্ষিত সেই ভবনের আঙিনাতেই রবিবার হয় জাঁকজমকপূর্ণ শপথ অনুষ্ঠান। ভারতের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার মন্ত্রিসভার ৭২ সদস্যকে একে একে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে আট হাজার বিশিষ্টজনকে। তার মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ছিলেন।
দেশ-বিদেশের আমন্ত্রিত অতিথিদের কথা মাথায় রেখে শপথগ্রহণের দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল।
সেই নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা ডায়াসে দাঁড়িয়ে যখন শপথ পড়ছিলেন, তখন সেই প্রাণীর আবির্ভাবে জল্পনা-কল্পনায় ভেসে যায় ভারতীয়রা।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠের পর বিজেপি নেতা দুর্গা দাস উইকে যখন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন, ঠিক সে মুহূর্তে নেপথ্যে ওই প্রাণীটিকে দেখা যায় এক পাশ থেকে অন্য পাশে চলে যেতে।
সেটা দেখে কেউ চিতা বাঘ মনে করলেও সোশাল মিডিয়ায় অনেকে বলেন, এটি কোনও বন্য প্রাণী তো বটেই।
শুরু হয় নেটিজেনদের প্রশ্নের বাণ। কী সেই রহস্যময় প্রাণী? এমন সুরক্ষিত একটি ভবনে তাও আবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কীভাবে ঢুকল এটি? রাষ্ট্রপতি ভবনে তিন স্তরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের চোখ প্রাণীটি এড়ালই বা কেমন করে?
সব জল্পনা-কল্পনা আর রহস্যের অবসান ঘটিয়ে সোমবার রাতে দিল্লি পুলিশ জানাল, প্রাণীটি চিতাবাঘ বা কোনও বন্য প্রাণী নয়। আর ১০টা গৃহপালিত প্রাণীর মতোই সাধারণ বিড়াল ছিল এটি।
দিল্লি পুলিশ তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে বলেছে, “সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা প্রাণীটিকে বন্য প্রাণী বলছেন। এটা ঠিক নয়। ক্যামেরায় ধরা পড়া প্রাণীটি নেহায়েতই সাধারণ একটি পোষা বিড়াল। দয়া করে গুজবে কান দেবেন না।”
তার আগে দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাতে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছিল, রাষ্ট্রপতি ভবনের ভেতরের প্রাঙ্গণে কুকুর আর গৃহপালিত বিড়াল ছাড়া আর কোনও প্রাণী প্রবেশের অনুমতি নেই।
এছাড়া ভারতের বন দপ্তরের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়েও পিটিআই জানায়, রাষ্ট্রপতির বাসভবনে চিতাবাঘ থাকার তথ্য তাদের কাছে নেই।