‘মোহা-পাগল’ নাম দেখে প্রয়াত সাদাকালো তারকা বাদল রায়ের স্ত্রী কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এই নামের রহস্য হলো, মোহামেডানের এক দল পাগল সমর্থক। যারা দলের সুসময় ও দুঃসময়ের পাশে থেকে সমর্থন দিয়ে যায়। গত শনিবার সন্ধ্যায় শিরোপা উৎসবের দিনে তারাই সামনে এগিয়ে এসেছে দলের বিশেষ জার্সি গায়ে। এটি তাদের চিরায়ত সাদাকালো জার্সি নয়, শিরোপা উপলক্ষে বানানো নতুন জার্সি। তারা ঢাকার এক হোটেলে আয়োজন করেছে শিরোপা উৎসব সন্ধ্যা, তাতে যোগ দিয়ে মুগ্ধ হয়েছেন মোহামেডানের ফুটবলাররা।
ক্যাসিনো কান্ডে নাম জড়িয়ে যাওয়ার পর ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সম্মান বিসর্জনে যায়। ক্লাবের পরিচালক পর্ষদে আসে নতুন মুখ। সেদিন প্রয়াত ফুটবলার বাদল রায়ের উদ্যোগে শুরু হয় মোহামেডান ক্লাবের নবযাত্রা। সেই যাত্রা বড় কঠিন ছিল। এমনকি রেলিগেশন জোনেও পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী দলটির। কিন্তু প্রতি বছর তারা এগিয়েছে একটু একটু করে। লম্বা সময় ধরে ওই অগ্রগামিতা জারি রেখে মোহামেডান এখন শিরোপায় শোভিত। ২৩ বছর পর লিগ শিরোপার উৎসবে মেতেছে সাদাকালোর দল।
শনিবার সন্ধ্যায় মোহামেডানের লিগ শিরোপা উদযাপনের দিন মোহাপাগলের অনুষ্ঠানে এসে সেই দুঃসহ যাত্রার কথা মনে করালেন ইমতিয়াজ সুলতান জনি। সমর্থকদের শিরোপা উপহার দেওয়া, ক্লাবের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। সবসময় তাদের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছেন মোহা-পাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি টি ইসলাম তারিক, “ আমরা এমনই এক সমর্থক দল যারা দলের দুঃসময়েও মাঠে যাওয়া বন্ধ করিনি। এই দলটি যখন শিরোপার দৌড়ে ছিল না, তখনও আমরা মাঠে গিয়েছি। খেলোয়াড়দের উৎসাহ জুগিয়েছি। ভেবেছিলাম, কঠিন সময়ে পাশে না থাকলে দলটি আরো শেষ হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন পর সেই দলটিই উঠে দাঁড়িয়েছে, আমাদের শিরোপা উপহার দিয়েছে। সুতরাং সমর্থকদের প্রতি আমার আহ্বান, দলের দুঃসময়েও পাশে থাকতে হবে সবাইকে।”
এই শিরোপাজয়ী দলের সম্মানে দারুণ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মোহা-পাগল। স্থানীয় এক হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মোহামেডানের কোচসহ সব ফুটবলারদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। মোহাপাগল সমর্থকগোষ্ঠীর ভোটে বর্ষসেরা, দেশি-বিদেশি, উদীয়মান, সেরা গোলদাতার পুরষ্কারও দেওয়া হয়।
এমন একটি আয়োজনের অংশ হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত মোহামেডান ফুটবলাররা। সমর্থকদের ভালোবাসার এমন প্রতিদান তারা প্রতিবছর দিতে চান। এই উপস্থিত ছিলেন দলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, হেড কোচ মোহাম্মদ আলফাজ আহমেদ, গোলরক্ষক কোচ ছাইদ হাছান কানন, সাবেক তারকা ইমতিয়াজ সুলতান জনি, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, জসিম উদ্দিন জোসি, মাসুদ রানাসহ অনেকে।