অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টপ এন্ড সিরিজে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ এইচপি দল। শনিবার বিগ ব্যাশের দল পার্থ স্কচার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে এসেছে এই তৃপ্তি। ৬ ম্যাচ থেকে সমান তিন করে জয় ও হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিনে এইচপি।
শনিবার পার্থের করা ৫ উইকেটে ১২৯ রানের জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩০ রান তোলে এইচপি।
পার্থের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। যুব এশিয়া কাপ জেতানো অধিনায়ক তিন বলে তিন বলে ১৬ রান নিয়ে দলের জয় সহজ করেন। ওই সময় ১৮ বলে ৩৬ রান দরকার ছিল এইচপির। শেষ পর্যন্ত ১৩ বলে ২ টি করে ছক্কা ও চারে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন রাব্বি।
রাব্বি ছাড়াও অধিনায়ক আকবর আলি ৩৩ বলে ৩৫ ও জিসান আলম ২৬ বলে ২৬ রান করেন।
এর আগে রিপন মন্ডল ও রাকিবুল হাসানের জোড়া উইকেট নিয়েছেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে পার্থ ট্যাগ উইলির ৫৬ বলে ৫৬ রান ও বক্সটার হল্টের ৩৪ রান সত্ত্বেও ১২৯ এর বেশি করতে পারেনি।
১৩০ রান তাড়ায় ১৭ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ৯৪ রান তোলে বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স (এইচপি)। ম্যাচ জিততে শেষ ১৮ বলে ৩৬ রান করতে হতো আকবর আলীর দলকে। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে কিটন ক্রিচেলের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে টেনে নিয়ে মিড উইকেট দিয়ে চার মারেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
পরের দুই বলে লং অন এবং কভারের উপর দিয়ে মেরেছেন দুই ছক্কা। পরের ওভারে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ফিরে গেলে অবশ্য শঙ্কা বাড়ে এইচপির। যদিও ১৩ বলে অপরাজিত ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে এইচপির ৩ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন মাহফুজুর। পার্থ স্কচার্সের বিপক্ষে পাওয়া এমন জয়ে টপ অ্যান্ড সিরিজের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ এইচপি।
ডারউইনে পার্থের দেয়া ১৩০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় এইচপি। ম্যাথু কেলির বাউন্সারে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে পয়েন্টের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে জশুয়া ভারননের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র এক রান। তিনে নেমে টিকতে পারেননি ছন্দে থাকা পারভেজ হোসেন ইমন।
কেলির বলে হুক করতে গিয়ে ব্রাইস জ্যাকসনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন স্কয়ার লেগে। ৯ বল খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটার রানের খাতাই খুলতে পারেননি। পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগে ফিরে গেছেন আরিফুল ইসলামও। পেসার কেলের বলে আরিফুল ফিরেছেন বোল্ড হয়ে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া তরুণ এই মিডল অর্ডার ব্যাটার ২ রান করেছেন। মাত্র ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে এইচপি।
সেখান থেকে অবশ্য টেনে তোলার চেষ্টা করেন জিসান আল আলম ও আকবর। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৯ রান। ইনিংসের ১১তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়েছেন জিসান। সাজঘরে ফেরার আগে খেলেছেন ২৬ বলে ২৬ রানের কার্যকরী ইনিংস। একটু পর ফিরে গেছেন আকবর নিজেও। এইচপির অধিনায়ক করেছেন ৩৫ রান। দলের একশ হওয়ার আগে আউট হয়েছেন আবু হায়দার রনি।
এইচপিকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেছেন শামীম ও মাহফুজুর। ১৯তম ওভারে গিয়ে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন শামীম। ছন্দে থাকা বাঁহাতি ব্যাটার করেছেন ১৭ বলে ১৬ রান। তবে বাংলাদেশকে জয় বঞ্চিত হতে দেননি মাহফুজুর। সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় তরুণ এই অলরাউন্ডার খেলেছেন ১৩ বলে ৩২ রানের ইনিংস। পার্থের হয়ে একাই ৩ উইকেট নিয়েছেন কেলি। এ ছাড়া ঝাই রিচার্ডসন দুটি, ডেকলান পাওয়ার নিয়েছেন একটি উইকেট।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান তোলে পার্থ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেছেন টেজু ওয়ালি। এ ছাড়া বাক্সটার হোল্ট ৩৪ এবং ক্রিচেল করেছেন ১৭ রান। বাংলাদেশ এইচপির হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন পেসার রিপন মণ্ডল ও স্পিনার রাকিবুল হাসান। একটু উইকেট নিয়েছেন পেসার আবু হায়দার।