Beta
মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪

রাম মন্দিরের নকশাকার যিনি

চন্দ্রকান্ত সমপুরা
চন্দ্রকান্ত সমপুরা
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

[publishpress_authors_box]

ভারতের অযোধ্যায় সোমবার রাম মন্দির উদ্বোধন হয়। ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বেশ গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদটি প্রচার করে। মঙ্গলবার থেকেই মন্দিরটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মন্দিরের ভেতর স্থাপিত রাম মূর্তি দেখতে ও পূজা দিতে অপেক্ষায় হাজারো মানুষ।

দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী নাগর রীতি অনুসরণ করে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে। ১৬১ ফুট উঁচু মন্দিরটি লম্বায় ৩৮০ ফুট, চওড়ায় ২৫০ ফুট। এর নকশা করেছেন চন্দ্রকান্ত সমপুরা । ৩০ বছর আগেই তিনি মন্দিরের নকশায় হাত দিয়েছিলেন।

সম্প্রতি চন্দ্রকান্ত সমপুরা ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি রাম মন্দিরের নকশা ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

মন্দিরের নকশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা ছিলেন অশোক সিংহল। ১৯৮৮ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, মন্দিরটি এখানেই তৈরি করা উচিত। এনিয়ে তিনি ব্যবসায়ী ঘনশ্যাম বিড়লার সঙ্গে কথা বলেন। কয়েক দশক ধরেই তার সঙ্গে আমার পরিবারের যোগাযোগ ছিল। আমাকে একদিন তিনি দিল্লিতে ডেকে পাঠালেন। বললেন, তার সঙ্গে অযোধ্যা গিয়ে যেন মন্দিরের নকশায় হাত দিই।”

আজ থেকে ৩০ বছর আগে রাম মন্দিরের নকশা করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না চন্দ্রকান্তের জন্য। অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তাকে নকশার কাজ শুরু করতে হয়েছিল।

প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে চন্দ্রকান্ত বলেন, “তখন পরিমাপের জন্য ফিতার ব্যবহার নিষেধ ছিল। আমাকে শুধু একা ঘুরে দেখতে বলা হয়েছিল। সঠিক মাপ ছাড়া মন্দিরের কল্পনা করা আমার পক্ষে ছিল খুব কঠিন। তাই আমার পা ব্যবহার করে ধাপগুলো গুনেছিলাম। সবকটি ধাপ মনে রেখেছিলাম। পরে একটি বড় হলের ভিতরে নকশাটি অনুলিপি করি। কারণ সেখানে আমি সঠিক মাপ নিতে পারতাম।”

তিনি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে মন্দিরের জন্য কয়েকটি নকশা তৈরি করেছিলেন। এর ভেতর থেকে একটি নকশা অনুমোদন পায়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই নকশা অনুসারেই বর্তমান রাম মন্দির তৈরি হয়নি।

এবিষয়ে তিনি পিটিআইকে বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মন্দিরটির নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এটি মূল পরিকল্পনার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আকারের।”

শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের বর্ণনা অনুসারে, মন্দিরটি তিন তলা বিশিষ্ট, প্রতিটি তলা ২০ ফুট উঁচু। এতে মোট ৩৯২টি স্তম্ভ এবং ৪৪টি দরজা রয়েছে। পাঁচটি মণ্ডপ বা হল রয়েছে। এগুলো নাম হল- নৃত্য মণ্ডপ, রং মণ্ডপ, সভা মণ্ডপ, প্রার্থনা এবং কীর্তন মণ্ডপ।

মন্দিরটিতে প্রবেশপথ পূর্বমুখী। ভক্তদের সিংহ দুয়ার দিয়ে সিড়ির ৩২ ধাপ অতিক্রম করে এতে ঢুকতে হবে। শারীরিকভাবে অসমর্থ এবং বয়স্কদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মজার বিষয় হল, মন্দিরটি নির্মাণে কোনও লোহা ব্যবহার হয়নি।

এছাড়া মন্দির চত্বরের চার কোণে রয়েছে চারটি মন্দির। এগুলো হল- সূর্য দেব, দেবী ভগবতী, গণেশ এবং শিবের মন্দির।

কে এই চন্দ্রকান্ত সমপুরা

চন্দ্রকান্ত একজন আহমেদাবাদভিত্তিক স্থপতি। টাইমস নাওয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি মন্দির স্থাপত্য নকশা ব্যবসায় তার পরিবারের পঞ্চদশ প্রজন্ম। তিনি পালানপুরের আম্বাজি এবং গান্ধীনগরের স্বামী নারায়ণ মন্দিরসহ প্রায় ১৩০টি মন্দিরের নকশা করেছেন।

সমপুরা পরিবারের মন্দিরকেন্দ্রিক স্থাপত্য নকশা শুরু হয় চন্দ্রকান্তের দাদু পিও সমপুরার হাত ধরে। তিনি ১৯৪৯ সালে গুজরাটের সোমনাথ মন্দির নতুন করে নকশা করেছিলেন। নাগর রীতিতে একজন দক্ষ নকশাকার হিসেবে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারও পেয়েছিলেন।

এই পরিবারের হাতে নির্মিত হয়েছে গুজরাটের অক্ষরধাম, কলকাতার বিড়লা মন্দিরসহ প্রায় ২০০টি মন্দির।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত