বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাশের উপজেলা থানচিতেও হানা দিয়েছে ডাকাত দল।
রুমায় ডাকাতির ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতে ঘটলেও থানচির ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার মধ্য দুপুরে।
রুমায় ডাকাতিতে সশস্ত্র পাহাড়ি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট জড়িত বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। থানচির বিষয়ে কিছু এখনও জানা যায়নি।
থানচির ডাকািতর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর সাড়ে ১২টার একদল সশস্ত্র ব্যক্তি উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ঢুকে অর্থ এবং নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়।
অনিল ত্রিপুরা নামে একজন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, সশস্ত্র ব্যক্তিরা ব্যাংকে ঢুকে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. ফারুক ও অন্যান্য কর্মচারীদের মারধর করে টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, ১৫-২০ জনের একটি দল চাঁদের গাড়িতে চড়ে উপজেলা সদরে এসেছিল। তারা ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগোয়। বাজার এলাকায় সামনে যাকেই পেয়েছে, তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ঢোকে। বেলা ১টার দিকে বেরিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে তারা শাহাজাহান পাড়ার দিকে চলে যায়।
সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ৪ লাখসহ মোট ১৯ লাখ টাকা লুট হয়েছে বলে শুনেছেন অনিল ত্রিপুরা।
তবে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম ঢাকায় সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “থানচি শাখার ভল্ট ভাঙতে পারেনি ডাকাতরা। টাকা-পয়সা সামনে যা পেয়েছে, তা নিয়ে গেছে।”
কত টাকা লুট হয়েছে, তার হিসাব এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
থানচির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে কত টাকা লুট হয়েছে, তার হিসাব এখনও পাননি তারা।
থানচি থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডাকাতির খবর শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
ডাকাতির ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল বলেন, “আমরা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেব।”
ঈদের আগে পার্বত্যাঞ্চলের দুটি শাখায় ডাকাতির ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির সদর দপ্তরে দফায় দফায় বৈঠক চলছে।
রুমায় ডাকাতরা অর্থ ও ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করার পাশাপাশি ওই শাখার ব্যবস্থাপক নেজামউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বুধবার দুপুর নাগাদ তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রুমায় হানা দেওয়া দলটির সদস্যরা পাহাড়ি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের বলে স্থানীয়দের দাবি।
সংগঠনটি স্থানীয়ভাবে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত। তাদের পক্ষ থেকে ডাকাতির বিষয়ে এখনও কোনও বক্তব্য আসেনি।
ডাকাতির পর পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা গেছেন ঘটনাস্থলে।