Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

লাঙ্গল হাতে নেওয়ার লড়াই চলছে জাপায়

সুনীল
রওশন পক্ষের ১৫ নেতা সোমবার দুপুরে সুনীল শুভ রায়ের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে যান।
[publishpress_authors_box]

স্থানীয় সরকারের আসন্ন নির্বাচনে লাঙ্গলের প্রার্থী মনোনয়ন কে দেবেন, জাতীয় পার্টিতে কোন্দল সেই প্রশ্ন সামনে আনল।

রওশন এরশাদ নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করার পরদিন সোমবার তার পক্ষের নেতারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বলে এসেছেন, দলে এখন তাদের কর্তৃত্ব।

তবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলছেন, অন্য পক্ষের দাবির কোনও ভিত্তিই নেই। লাঙ্গলের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার এখতিয়ার কেবল তাদের।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব হিসাবে এখনও জি এম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুর নাম রয়েছে।

এই মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তারাই দলের প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিলেন।

সেই নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে রবিবার দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। কাদের ও চুন্নুকে তিনি অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান।

মহাসচিব পদে রওশন দায়িত্ব দিয়েছেন কাজী মামুনূর রশিদকে। সেই সঙ্গে দলের মুখপাত্র করেছেন সুনীল শুভ রায়কে, যাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন জি এম কাদের।

রওশন পক্ষের ১৫ নেতা সোমবার দুপুরে সুনীল শুভ রায়ের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে যান। তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একান্ত সচিবের কাছে একটি চিঠি দিয়ে আসেন।

সুনীল শুভ রায় সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের জাতীয় পার্টির নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নিয়েছে। আমরা একটি নিবন্ধিত দল। ফলে এটা আমাদের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা। আমরা আজকে তাদের অবহিত করতেই এসেছিলাম।”

“আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি, আমাদের সকল জেলা কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটি আগের অবস্থাতেই আছে। শুধু চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে,” বলেন তিনি।

নিবন্ধিত দল হিসেবে আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়রের শূন্য পদে এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নিতে পারছে। এরপর উপজেলা নির্বাচনও রয়েছে।

এখন লাঙ্গলের প্রার্থী মনোয়ন দেবে কে, সে বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিলেও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলছেন, এনিয়ে কোনও সংশয়ই নেই।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরাই জাতীয় পার্টির আসল ধারা। হুসেইন মো. এরশাদের জাতীয় পার্টির নেতা এখন জি এম কাদের। ফলে এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নাই। আমরা ১ তারিখ থেকে চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম দেওয়া শুরু করব।”

অন্যদিকে রওশন পক্ষের নেতারাও বলছেন, তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে সকাল সন্ধ্যার প্রশ্নে সুনীল শুভ রায় বলেছেন, তারা এখনও অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া ঠিক করেননি।

“আমরা মাত্র ২৪ ঘণ্টা হলো দায়িত্ব নিয়েছি। একটু দম নিতে দেন, আমরা খুব তাড়াতাড়ি কেন্দ্রীয় সভা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। উপজেলা নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়েই নিয়েই আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচন করবে।”

এদিকে রওশন যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চুন্নু। তিনি বলছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রওশনের এমন কোনও ক্ষমতাই নেই।

তিনি বলেন, “আপনারা দেখেন কিছু লোক যারা জাতীয় পার্টির কোনও পর্যায়ের নেতা নয়,তারা মিলে এ কাজ করেছে। শুধু জাতীয় পার্টি নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করার জন্য।”

অশীতিপর রওশনের অসুস্থ অবস্থার সুযোগ কেউ কেউ নিচ্ছে দাবি করে চুন্নু বলেন, “রওশন এরশাদের বয়স হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিক বা শারীরিক সক্ষমতা তার এখন নেই। কিছু অসৎ মানুষ তাদের হীন চেষ্টা চরিতার্থ করার জন্য তাকে ব্যবহার করছে অসাংগঠনিক পন্থায়, যা খুবই আপত্তিকর।”

তাদের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “এখন যদি ওরা ক্ষমাও চায়, তাহলেও ওদেরকে আমরা আর দলে চাই না। শেষ ওরা যা করল তারপর আর কোনও সুযোগ নেই।”

এই কোন্দলের মধ্যেও নীরব রয়েছেন জি এম কাদের। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

কাদের ইতোমধ্যে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনীত হয়েছেন। মঙ্গলবারই দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত