সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, অথচ দলের সেরা ওপেনার ফর্ম হারিয়ে রান খুঁজে ফিরছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাজে সময় কাটানো লিটন দাস আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন ভিন্ন মানসিকতায়। লম্বা ইনিংস খেলেছেন টেস্ট মেজাজে। তাতে রান হয়তো পেয়েছেন কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির কি হবে!
টি-টোয়েন্টিতে তো রানের চেয়ে বলের ব্যবধান রেখে খেলা যায় না। লিটনকে তাই রানে ফিরতে হবে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বরাবরই ব্যাট হাতে লিটনের। কিন্তু এবার সেই প্রথাতেও ব্যতিক্রম। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন বলের লাইনে খেলতে পারেননি বলে।
এমন অবস্থায় লিটনকে নিয়ে নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তায় থাকার কথা বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের। কিন্তু চট্টগ্রামে শনিবার ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিন ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প যে কথা বলেছেন তাতে মনে হলো খুব একটা চিন্তা নেই, “সে হয়ত রান পাচ্ছে না কিন্তু নিজের খেলাটা নিয়ে সে অনেক পরিশ্রম করছে। এটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
২০২২ সালে এক বছরে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৪১ ম্যাচে ১৮৩৫ রান করেছিলেন লিটন। যা ওই বছরে শীর্ষে থাকা বাবর আজমের পর দ্বিতীয় সেরা। সেই লিটনকে গত এক বছরে আর দেখা যাচ্ছে না।
লিটনকে আগলে হেম্প বলেছেন, “সে প্রতিনিয়ত আরও ভালো হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্লেয়াররা এমন সময়ের মধ্য দিয়ে যাবে কখনও তারা রান করবে কখনও আবার করবে না। এখন হয়ত সে অতটা ধারাবাহিক নয়। তবে সে এটি নিয়ে কাজ করছে এবং কঠোর পরিশ্রম করছে। এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
লিটনের সমস্যাটা আসলে টেকনিকে না মানসিকতায় তা বুঝে উঠতে পারছেন না হেম্পরা। তার চোখে নতুন বলে ব্যাট করার সমস্যাটাই ভোগাচ্ছে লিটনকে, “আসলে কাজটি অনেক কঠিন। নতুন বল অনেক সময় এদিক-সেদিক করে গত (শুক্রবার) রাতে যা করল। এখানে ব্যাট করাটা কঠিন কারণ নতুন বলের চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে সে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।”
ওপেনার লিটন রানে নেই। তা মেনে নিয়েছেন হেম্প। এদিকে সৌম্য সরকার ইনজুরিতে। হয়তো বিশ্বকাপের আগে ফিট হয়ে উঠবেন। তবে লিটনের মতো সৌম্যরও নিয়মিত রান করতে না পারার দোষ আছে। এমন অবস্থায় নতুন ওপেনার হিসেবে তানজিদ হাসান তামিমের মাঝে ভবিষ্যৎ খুঁজছেন ব্যাটিং কোচ হেম্প।
তানজিদ সঠিক পথে আছে জানিয়ে বলেছেন, “সে উন্নতি করছে। সে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপেও খেলেছে। সে এইচপি প্রোগ্রামের আওতায় ছিল ফলে আমার তাকে আগে দেখার অভিজ্ঞতা আছে। সে প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসেই এগোচ্ছে। আগের চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে। তরুণ ক্রিকেটারদের নিজের শক্তির জায়গা প্রয়োগ করে ভালো করতে দেখার বিষয়টি দারুণ। বর্তমানে সে সঠিক পথেই এগোচ্ছে।”
*সৌম্য
এটাই আমাদের প্ল্যান যে সে এই পাঁচ ম্যাচের সিরিজের কোনো অংশে খেলবে। এখন সে রিহ্যাব প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
*ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ
আমরা শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছি আমাদের শক্তির জায়গা অনুযায়ী আমরা যেন খেলতে পারি। এভাবেই আমরা ক্রিকেটারদের খেলতে দেখতে চাই। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে। তবে মাথায় রাখতে হবে যে কাজটা আপনি ভালো করেন তা থেকে যেন দূরে সরে না যান। আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি তাহলে প্লেয়াররা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো করবে এবং আমরা ম্যাচ জিততে পারব। এটাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
*হৃদয়
আসলে পুরো গ্রুপের ক্রিকেটাররাই দারুণ প্রতিভাবান। সে এমন একজন যে প্রতিনিয়ত নিজের খেলাটাকে উন্নত করতে চায়। কোচিংয়ের দিক থেকে দেখলে বিষয়টি দারুণ। আপনি এমন ক্রিকেটারই চাইবেন যে খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সে এমনই একজন। সে অনেক পরিশ্রম করে। সবসময় উন্নতির চেষ্টা করে যায়। এটাই আমরা চাই প্লেয়ারদের কাছে।
*সবচেয়ে ফেয়ারলেস কিনা সে
আমি তা বলব না। ফেয়ারলেস বলতে কী বুঝিয়েছেন আমি জানি না আসলে। শট খেলার ক্ষেত্রে আসলে আমরা সবাইকেই এভাবে কোচিং করাই। ইতিবাচক থাকতে বলি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে সবসময় ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখতে বলি। এভাবেই আমরা প্লেয়ারদের সাহস যুগিয়ে থাকি।