টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ মানেই হতাশা। অশেষ আশা নিয়ে শুরুর পর স্বপ্ন চুরমার হওয়ার বাস্তবতা। ২০০৬ এর পর টি-টোয়েন্টিতে টানা ভালো খেলার নজীর বাংলাদেশের নেই। খনিকের জ্বলে ওঠা ছাড়া অর্জন নেই এতটুকু।
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটের হারে আরও একবার সেই আক্ষেপে পুড়িয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। অন্যরকম কিছু দেখানোর প্রতিশ্রুতি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল অতীত অভ্যাসে। তবুও নাজমুল হোসেন শান্ত মনে করেন বাংলাদেশ এত খারাপ দল না।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশ ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টির জন্য বিশেষ এক শব্দের উৎপত্তি হয়। “ইন্টেন্ট ও ইমপ্যাক্ট” সেই থেকে প্রতি টি-টোয়েন্টির আগে নতুন ইন্টেন্টের কথা উঠে। এবারও উঠেছিল। কিন্তু মাঠে দেখা গেলে ইমপ্যাক্ট সেই পুরোনোই।
ব্যাটিং ব্যর্থতার অতীত চিত্র ফিরে আসায় শান্তরা হতাশা উপহার দিলেন আবারও। নিজেদের “ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট” এর পারদ উঠতির দিকে না গিয়ে পড়তির দিকে যাচ্ছে কিনা? এই প্রশ্নে অবশ্য অধিনায়ক দ্বিমত করলেন, “আমাদের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট খারাপের দিকে যাচ্ছে সেটা বলব না। আমরা অবশ্যই আজ ভালো খেলিনি। অনেক দিন ধরেই টি-টোয়েন্টিতে ভালো করছি না। কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশ এত খারাপ দল না।”
যে সত্যটা প্রতি টি-টোয়েন্টি হারের পর মেনে নিতে হয় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ককে। শান্ত আরও একবার সেই সত্য মেনে নিলেন আজ। বাংলাদেশ ব্যাটাররা ১৫০ পর্যন্ত রানের করা বা তাড়া করার সামর্থ্যটাই রাখেন। এর বেশি রানের হিসেব কষতে পারেন না একেবারেই।
শান্ত বলেছেন, “আমরা যখন হোমে খেলি তখন ১৪০-৫০ এর উইকেট হয়। সো ব্যাটাররা ওইটা জানে কিভাবে ১৫০ করতে হবে কিন্তু ওইটা জানে না যে কিভাবে ১৮০ করা যাবে। তো আমাদের ওই ধরনের উইকেটে অনুশীলন করলে আরেকটু উন্নতি হবে। কিন্তু শুধু উইকেটের দোষ দিব না এখানে মানসিকতার ব্যাপারও থাকে, স্কিলের ব্যাপারও থাকে।”
পাওয়ার প্লেতে উইকেট না হারিয়ে রান তুলতে হয়। বাংলাদেশ প্রতি টি-টোয়েন্টিতে এই চ্যালেঞ্জে হেরে যায়। অবশ্য আজকের ম্যাচে হেরে গেলেও দিল্লিতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে এই আক্রমণাত্মক মানসিকতায় পরিবর্তন আনার ইচ্ছা নেই শান্তর।
অধিনায়ক বলেছেন, “রান করার জন্য আক্রমণাত্মক হতে হবে, কিন্তু কিছু শট নির্বাচনও ঠিক করতে হবে যে কখন আমরা কোন শটে খেলবো। এসব চিন্তা করার ব্যাপার আছে। এই জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে ওই অ্যাপ্রোচটা যেন থাকে। এক ম্যাচ পারিনি তো পরের ম্যাচেই অ্যাপ্রোচ বদলে ফেলবো এমন করা যাবে না।”
ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ না বদলালেও বাংলাদেশ বদলে যাবে এমন নিশ্চয়তা নেই। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে ৬ ওভারে ৩৯ রানে ২ উইকেট হারিয়েছেন শান্তরা। একই ভাবে খেলে সমান ওভারে ভারতের রান ছিল ২ উইকেটে ৭১।
দ্রুত রান তোলার দিকে নজর না দিলেও এই ৩৯ রানের বেশি বাংলাদেশের বোর্ডে জমা হতো কিনা সন্দেহ। বাংলাদেশের অবস্থা এখন “সর্বাঙ্গে ব্যাথা ঔষধ দেব কোথা”-র মতো।