বড় পর্দার তারকাদের নিয়ে কত চর্চাই তো হয়। তার মধ্যে একটি হলো, অভিনেতা অথবা অভিনেত্রীদের আয় ও সম্পদের পরিমাণ। এমন চর্চায় খুব সহজেই ডুয়াইন জনসন অথবা টম ক্রুজের নাম চলে এলেও ঘুণাক্ষরেও কেউ জেমি গার্জ এর কথা কল্পনাও করবেন না।
হলিউড তারকাদের মধ্যে জেমি গার্জ বিপুল সম্পদের অধিকারী হলেও তার নাম শুনে যে কারও চোখ উঠে যেতে পারে কপালে। এ প্রশ্নও করে বসতে পারে- “জেমি গার্জ আবার কে?”
গত শতকের আশির দশকে ‘সিক্সটিন ক্যান্ডেল’ এবং ‘দ্য লাস্ট বয়েজ’ এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে চেনান গার্জ। এরপর টেলিভিশনেও দেখা যায় তার সদর্প উপস্থিতি। ‘স্টিল স্ট্যান্ডিং’, ‘সিনফেল্ড’, ‘মডার্ন ফ্যামিলি’ এবং ‘দিজ ইজ আস’ এর মতো টেলিভিশন সিরিজেও গার্জ ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
তার সাফল্য অবশ্য পেরিয়ে গেছে হলিউডের চৌকাঠ।
তারকা থেকে ব্যবসায়ী
গার্জ এর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলার। না, এটা হলিউডের কোন গল্প তো নয়-ই বরং জ্বলজ্বলে সত্যি।
আমেরিকান ব্যবসায়ী অ্যান্টনি রেসলারের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক গার্জকে নিয়ে গেছে বিপুল সম্পদের দুয়ারে। বেজবল টিম ‘আটলান্টা হকস’ এর মালিকানা যৌথভাবে এই জুটির। পাশাপাশি আছে আরেক বেজবল টিম ‘মলওয়াকি ব্রুয়ার্স’ এর ছোট্ট শেয়ার।
খেলাধুলার জগতের বাইরেও এই জুটির আছে উল্লেখযোগ্য প্রভাব।
রেসলার-গার্জ ফাউন্ডেশনের কলা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতের জন্য আছে ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি অনুদান।
এছাড়াও জ্যামি গার্জ মেলানমা রিসার্চ অ্যালায়েন্সের বোর্ড ডিরেক্টর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে, তার বিপুল সম্পদের পুরোটা শুধু অভিনয় থেকেই নয়।
অভিনয় তারকা যখন বিজনেস এক্সপার্ট
ফোর্বস এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রেসলার মোট ৭.১ বিলিয়ন সম্পদের মালিক। গার্জের’ও আছে নানা ধরনের ব্যবসায় আগ্রহ।
‘জেজিঅ্যান্ডঅ্যা, এলএলসি’ নামের একটি কন্সাল্টিং ফার্মের মূল উদ্যোক্তা এবং মালিকও জ্যামি গার্জ। এই ফার্মের কাজ হলো নতুন উদ্যোক্তাদের পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেওয়া। হেনরি রোজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহ উদ্যোক্তা তিনি। এছাড়াও বহু হাই প্রোফাইল টেক কোম্পানির পরামর্শদাতা হিসেবেও তিনি কাজ করেন।
গার্জ এর গল্প হলিউডের আর দশ ধনী তারকার চাইতে একেবারেই আলাদা। সিনেমার সাফল্য দিয়ে শুরু করে ক্রমে একজন ব্যবসায়ী হয়ে ওঠা একেবারেই যেন ভিন্ন কিছু। একজন সিনে তারকা থেকে বৈচিত্র্যময় ব্যবসায় ঝুঁকে পড়া তার অধ্যাবসায় এবং দূরদর্শিতাই প্রমাণ করে।
তার এই সাফল্যের গল্পকে কেবল খ্যাতি আর ভাগ্য দিয়ে অনুবাদ করা যায়না। এ যেন এক বিজয় গাঁথা।
তবে গার্জ এর ৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি তার সাফল্যের একমাত্র নির্ণায়ক নয়। বিলিয়নিয়ার স্বামী অ্যান্টনি রেসলারের ভূমিকা এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হয়। দুটো বেইজবলের টিমের মালিকানা (একটির সম্পূর্ণ অন্যটির শেয়ার), এবং বিভিন্ন বিনিয়োগে রেসলারের অবদান আছে ।
গার্জ এর এই অসাধারণত্বের শুরুটা গত শতকের আশির দশকে। ‘কুইকসিলভার’ এবং ‘লেস দ্যান জিরো’ এর মতো চলচ্চিত্রে কাজ করে তিনি হন আলোচিত। আর ব্লকবাস্টার হিট ‘টুইস্টার’ তার ক্যারিয়ারকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়।
পরে ২০০০ সালে টিভি সিরিজ ‘অ্যালি ম্যাকভিল’ এ অভিনয়ের জন্য তিনি পেয়েছিলেন এমি মনোনয়ন।
