Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

সম্রাট মহানায়ক সূর্যালোক নাকি শুধুই ফ্রাঞ্জ

ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ( জন্ম ১৯৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর। মৃত্যু ৭ জানুয়ারি ২০২৪)
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ( জন্ম ১৯৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর। মৃত্যু ৭ জানুয়ারি ২০২৪)
[publishpress_authors_box]

তাকে বলা হত সম্রাট। জার্মানির চলমান মানচিত্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একজন মহানায়ক দরকার ছিল জার্মানির, যিনি পারবেন যুদ্ধবাজ হিটলারের কথা ভুলিয়ে দিতে। জার্মানরা সেই মহানায়কের দেখা পেয়েছিলেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের মধ্যে।

খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে যে তিনজন ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছেন, বেকেনবাওয়ার তাদের একজন। জার্মানিতে তার এতটাই প্রভাব ছিল যে, বিখ্যাত শিল্পী আন্দ্রে হেলার বলেছিলেন,‘‘বেকেনবাওয়ার চাইলে জার্মান সরকারের পতনও ঘটাতে পারেন।’’

মৃত্যুর আগে এটাই সর্বশেষ প্রকাশিত ছবি বেকেনবাওয়ারের। গত বছর অস্ট্রিয়ায় স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে। ছবি : টুইটার

ছয়টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী জার্মান কিংবদন্তি বরিস বেকার একবার দেখা করতে গিয়েছিলেন বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে। সামনাসামনি হতে অপলক চেয়ে থাকার পর বেকার বলেছিলেন,‘‘কি নামে ডাকব আপনাকে? সম্রাট মহানায়ক সূর্যালোক নাকি শুধুই ফ্রাঞ্জ।’’

১৯৭৪ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন অধিনায়ক হিসেবে।

সেই বেকেনবাওয়ার এখন অন্যলোকের বাসিন্দা। গতকাল তার পরিবার নিশ্চিত করেছে কিংবদন্তির মৃত্যুর খবর। ফুটবলের এই সম্রাটের মৃত্যুটা অবশ্য তার চাওয়া মত হয়নি। এক সাক্ষাৎকারে বেকেনবাওয়ার বলেছিলেন,‘‘মৃত্যুকে ভয় পাই না। মৃত্যুকে ভালো বন্ধু মনে করি যে কিনা নতুন এক জীবনের সদর দরজা খুলে দেয়। আমি রাজার মত মরতে চাই, সজ্ঞানে। বুঝতে পারব মৃত্যু আসছে। নিজের আত্মাকে তৈরি করতে পারব।’’

তার পরিবারের বিবৃতি ধরলে বলাই যায় শেষ ইচ্ছেটা পূরণ হয়নি নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করা বেকেনবাওয়ারের। ঘুমের মধ্যেই চিরঘুমে চলে গেছেন তিনি। তবে যে জীবন কাটিয়ে গেছেন, তা পেরেছেন কতজন?

কোচ হয়ে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ১৯৯০ সালে।

বিশ্বফুটবলে তাকে বলা হত ডের কাইজার। এর অর্থ সম্রাট। তিনি খেলা শুরু করেছিলেন সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে। এরপর মিডফিল্ডার। তারপর ডিফেন্ডার। লিবেরো পজিশনটা তারই আবিষ্কার করা।

বায়ার্ন মিউনিখে যখন খেলা শুরু করেন, তখন ক্লাব দ্বিতীয় বিভাগে ধুঁকছে। বেকেনবাওয়ারের হাত ধরেই বুন্দেসলিগায় ফিরে বায়ার্ন। ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে তার নেতৃত্বে জিতে বুন্দেসলিগাও। জার্মানির গণ্ডি ছাড়িয়ে ইউরোপিয়ান কাপেও (বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগ) বায়ার্ন হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতে বেকেনবাওারের নেতৃত্বে। এরপর ১৯৭৪ বিশ্বকাপ জার্মানি (তখনকার পশ্চিম জার্মানি) জিতে বেকেনবাওয়ারের নেতৃত্বে। এজন্যই পেলে, ম্যারাডোনার মত উচ্চতায় রাখা হত তাকে।

কোচ হয়েও সফল বেকেনবাওয়ার। তার হাত ধরে ১৯৯০ সালে জার্মানি জিতে বিশ্বকাপ। এমন কিংবদন্তির বিদায়ে তাই কাঁদছে পুরো জার্মানি। নক্ষত্রপতনে কাঁদছে ফুটবল বিশ্বও।

 ইংলিশ কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘বেকেনবাওয়ারের মৃত্যুর খবরে মর্মাহত আমি। আমাদের খেলার অন্যতম সেরাদের একজন। কাইজার (সম্রাট) ছিলেন ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, যিনি (খেলার) লাবণ্য ও আকর্ষণ দিয়ে সবকিছুই জিতেছেন আভিজাত্যের সঙ্গে। শান্তিতে ঘুমান সম্রাট।’’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত