Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

সরকার মুখে বলে গণতন্ত্র, বাস্তবে করেছে একদলীয় শাসন : মঈন খান

জাতীয় স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

বর্তমান সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা দেশে কার্যত ‘একদলীয় শাসন কায়েম’ করেছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিমত জানান।

মঈন খান বলেন, “আজকে দুঃখের সঙ্গে আমাদের বলতে হচ্ছে, যে আদর্শ নিয়ে এই দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ একাত্তরে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, তার নাম ছিল গণতন্ত্র এবং তার উদ্দেশ্য ছিল— বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

“আজকে ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হবার পরে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের একটি প্রশ্ন— সেই গণতন্ত্র কোথায় গেল? সেই দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি কোথায়?”

তিনি বলেন, “একটি সরকার আজকে জোর করে বসে আছে, যে সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। তারা মুখে বলে গণতন্ত্র। তারা বাস্তবে করেছে একদলীয় শাসন। তারা এবার করেছে বাকশাল টু। এটা আমার কথা নয়, এটা বিশ্ববাসীর কথা।”

মঈন খান বলেন, “আজকে আপনারা দেখেছেন কীভাবে এদেশে দুর্নীতির মাধ্যমে কত হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, মেগা উন্নয়নের নামে কীভাবে মেগা দুর্নীতি হয়েছে। ক্ষমতা আখড়ে ধরে রাখার জন্যে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলা দেওয়া হয়েছে, তাদের ৫০ লক্ষ নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে, তাদের মিথ্যা অভিযোগে আসামি বানানো হয়েছে।”

“এখানে যদি মানুষের ভিন্ন প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকে, এদেশে যদি মানুষের গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ না থাকে তাহলে আজকে যারা কবরে শায়িত মুক্তিযোদ্ধা তাদের কাছে প্রশ্ন— কেন তারা এদেশ স্বাধীন করেছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর সরকারকে দিতে হবে,” বলেন বিএনপির এই নেতা।

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

তিনি বলেন, “যখন সেই ২৫ মার্চের কালরাতে পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেইদিন আজকের যে আওয়ামী লীগ, যারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি বলে দাবি করে, তারা সেইদিন কেন পলায়নপর ভূমিকা নিয়েছিল— সেই প্রশ্নের উত্তর আওয়ামী লীগকে দিতে হবে।”

মঈন খান বলেন, “সেই কারণে স্বাধীনতার ঝান্ডা উঁচু করে তুলে ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে পাকিস্তানের একটি প্রশিক্ষিত অত্যাচারী হায়েনার মতো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই কথা সারা বিশ্বে প্রচারিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূচিত হয়েছিল। সারা বিশ্বের মানুষ জেনেছিল যে, একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হতে যাচ্ছে।”

স্বাধীনতার ঘোষক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, যার কথা সারা বিশ্বে প্রচার হয়েছিল। ইতিহাসের যা সত্য, তা ইতিহাস নির্ধারণ করে। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন জিয়াউর রহমান, কলকাতায় পালিয়ে যায়নি।”

এর আগে সকাল ৯টার দিকে আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিল সহকারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে যায়। পরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্মৃতিসৌধের মূল বেদিতে গিয়ে দলের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন মঈন খান। 

এ সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর বিএনপির উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আবু আশফাক খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াসীন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকার শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত