যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বিশ্বকাপ চিন্তায় মাঠে নামার কথা ছিল বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টি ঘারানার ব্যাটিংয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির দরকার ছিল। দুঃখজনক হলো তার কিছুই হয়নি।
উল্টো ক্রিকেটের নতুন সদস্যের কাছে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি হেরেছে। এই হার প্রবল চাপে ফেলেছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। আর একটি ম্যাচ হারলেই সিরিজ হাতছাড়া। বিশ্বকাপের ঠিক আচে যা মোটেও কাম্য নয় বাংলাদেশের জন্য।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত মোট ২১টি দেশের সঙ্গে খেলেছে বাংলাদেশ। ২১তম দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। মুখোমুখি হওয়া প্রথম ম্যাচেই হেরে গিয়ে ১৫টি ভিন্ন প্রতিপক্ষের কাছে টি-টোয়েন্টি হারের হতাশা হজম করতে হলো। শতভাগ জয়ের স্বস্তি ধরে রাখা ৬ প্রতিপক্ষ হলো কেনিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, পাপুয়া নিউ গিনি (১ ম্যাচ করে); ওমান ২ ম্যাচ এবং আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।
তবে এসব পরিসংখ্যান এখন প্রথম ভাবনার বিষয় না। নাজমুল শান্তদের জন্য বড় দুর্ভাবনা সিরিজ হার ঠেকানো। হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ তাদের জন্য নতুন কন্ডিশন ছিল। তাতে প্রথম ম্যাচেই মানিয়ে নেয়ার ব্যর্থতায় লজ্জার হার হজম করতে হয়েছে। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বলেছিলেন নতুন পিচে খেলার অনভ্যস্ততা কাটিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো ভাবে ফিরবেন। তেমন কিছুর প্রত্যাশা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের।
বাংলাদেশের দুর্ভাবনা আগে শুধু ব্যাটিং নিয়েই ছিল। নতুন যোগ হয়েছে বোলিং। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দিলেই মোস্তাফিজুর রহমান ফর্ম হারিয়ে ফেলেন। আরও একবার সেই প্রমাণ মিলল সিরিজের প্রথম ম্যাচে। ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়েছেন ফিজ, তাতে ২ উইকেট পাওয়ার আনন্দ হাওয়ায় হারিয়ে যায়।
এছাড়া কন্ডিশন ও বিপক্ষের দুই বাঁহাতি ব্যাটার কোরে অ্যান্ডারসন ও হারমিত সিংয়ের কারণে সাকিবের শেষ ওভার ও রিশাদের ২ ওভার করানোর সাহস পাননি অধিনায়ক শান্ত। আক্রমণে টেনেছেন ডান হাতি স্পিনার মাহমুদউল্লাহকে। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই আর একাদশে অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদি হাসানের থাকার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন রিশাদ।
বোলিংয়ের চেয়েও ব্যাটিংয়ে বড় দুর্ভাবনা থাকছেই। টপঅর্ডারে ভরসা করার মতো কোন পরিস্থিতিই তৈরি করতে পারছেন না লিটন দাস ও নাজমুল শান্তরা। গত ম্যাচে ৫ ওভারে ৩৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১২ ওভারের মাঝেই লিটন-শান্তদের ব্যর্থতায় ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারাতে হয়। শুরুর এই ধাক্কা তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহরা ঝড়ো ব্যাটিং করেও কাটাতে পারেননি।
নিজেদের নিয়েই দুশ্চিন্তার মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় বংশোদ্ভুত অলরাউন্ডার হারমিত সিং হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন। প্রথম ম্যাচ শেষে বলেছেন, “বাংলাদেশ আমাদের সহজেই পাশ কাটিয়ে যাবে তা হতে দেইনি।” পুরো সিরিজেই এই মানসিকতা থাকবে তাদের। বাংলাদেশ তাদের চেয়ে বড় দল হওয়ার মানসিকতা বা পারফরম্যান্স দেখাতে পারবে তো!
নয়তো দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে যে ভয় নিয়ে খেলতে নেমেছিল সেই ভয়ে কাবু হতে হবে নাজমুল শান্তদের। তা হল – সিরিজ হার।