Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সুপার এইটের আগে ভালো প্রস্তুতির সুযোগ

বাংলাদেশ
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের পর বাংলাদেশ দলের সুপার এইট সম্ভাবনা দেখার লোক ছিল হাতে গোনা। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথম ম্যাচের জয় চিত্র পাল্টে দেয়। এখন ২০০৭ সালের পর প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের পথ বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই পরিষ্কার।

গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সেই স্বচ্ছ পথে এগিয়ে লক্ষ্যে পা রাখার পালা। সঙ্গে পরের রাউন্ডের কঠিন লড়াইয়ের আগে নিজেদের আরও একটু ঝলিয়ে নেয়ার আছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। নেপালের বিপক্ষে রোববারের ম্যাচে সে লক্ষ্যে নামছে বাংলাদেশ।  

সমীকরণে একটু বাধা

বাংলাদেশের শেষ আটে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। তবুও একটু কিন্তু আছে। সেই কিন্তু অবশ্য বিরাট অঘটন ঘটার মতোই।

সুপার এইটের গ্রুপ ১-এর তিন দল নিশ্চিত – অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তান। একই অবস্থা গ্রুপ ২-তেও। দক্ষিণ আফ্রিকা, উইন্ডিজের সঙ্গে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানকে কাঁদিয়ে প্রথম বিশ্বকাপেই সুপার এইটে খেলার ইতিহাস গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ডি গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় হয়ে বাংলাদেশের পরের রাউন্ডে যাওয়া আটকে যেতে পারে নেপালের কাছে হারলে। পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিলে পরের রাউন্ডের গ্রুপ ১ এর বাকি থাকা দলটি হবে ডাচরা।

এটাই বড় অঘটন। চরম উত্তেজনার ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানো। নেদারল্যান্ডসে ম্যাচের শেষদিকে অনায়াসে হারিয়ে দেয়া এবং প্রোটিয়াদের সঙ্গে প্রায় জিতে যাওয়া পারফর্মের পর নেপালের কাছে বাংলাদেশের কল্পনা করছে না কেউ। যা এই মুহূর্তে হওয়া খুব কঠিন। তাই রোববারের ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের পরের রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বোলারদের প্রস্তুতি আরও ভালো হোক

পরের রাউন্ডে টি-টোয়েন্টির তিন কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে ম্যাচ বাংলাদেশের। সব দলই সমান শক্তিশালি। শুধু আফগানিস্তানের ব্যাটিং নিয়ে একটু স্বস্তির শ্বাস ফেলা যায়। শর্ত হলো রহমানউল্লাহ গুরবাজকে শুরুতেই ফেরাতে হবে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে বাজে হার ভাবনা হতে পারে বাংলাদেশের জন্য। আর অস্ট্রেলিয়া তো এই সেদিনও রান খরার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০ করেছে।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচারে প্রথম পর্ব মসৃণ পথচলা ছিল না বাংলাদেশের জন্য। চ্যালেঞ্জ জিতেই ২০০৭ এরপর দ্বিতীয় রাউন্ড পা রেখেছে নাজমুল শান্তরা। এবার অপেক্ষা করছে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। তার আগে ভালো প্রস্তুতি চাই। অন্তত আফগানদের বিপক্ষে জয়ের আত্মবিশ্বাস চাই।

নেপাল ম্যাচের সাফল্য সেই আত্মবিশ্বাস এনে দিতে পারে। গত তিন ম্যাচে বোলিং শক্তিতে এগিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে নতুন বলে পেসাররা ভালো কিছু এনে দেন। মাঝের ওভারে রিশাদ আটকে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষকে আর শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর বিপক্ষকে হারানোর শেষ তুলির আঁচড় টানছেন।

নেপালের ব্যাটিং লাইন বাংলাদেশ বোলারদের জন্য বড় চিন্তা নয়। তাই নিজেদের বাড়তি বৈচিত্র্য পরীক্ষা করে দেখতে পারেন বোলাররা। যে বৈচিত্র্যগুলো পরের রাউন্ডে কাজে লাগানো যাবে। তাছাড়া আফগানদের বিপক্ষে সুপার এইটের ম্যাচটি এই সেন্ট ভিনসেন্টে হবে। ওই ম্যাচের জন্য মাঠের উইকেটকে ভালো ভাবে বুঝে নেয়ার সুযোগও হাতছানি দিচ্ছে টাইগার বোলারদের।

টপঅর্ডারের রানে ফেরার সুযোগ

চলতি বছর জুড়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার নাম টপঅর্ডার। সৌম্য সরকার বাজে ফর্মের কারণে একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন। নেতৃত্বের শুরুতে রান পেলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে নিশ্চুপ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট। লিটন দাস ২০২৩ বিশ্বকাপের পর থেকে রান পাচ্ছেন না।

নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটিকে কাজে লাগাতে পারেন দুজনে। রান রেট বাড়ানোর চাপ নেই, দ্রুত রান তোলার তাড়াও নেই। তাই বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পরেন দুজন। সিঙ্গেল-ডাবলসে রান বাড়ানোর সময় অবশ্যই বাজে বল পাবেন। ওই বলগুলোতে বাউন্ডারী হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া যাবে। যা অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানদের বিপক্ষে নামার আগে স্বস্তি এনে দিবে শান্ত-লিটনের জন্য।

লিটন-শান্তরা স্বস্তি নিয়ে ব্যাট করতে পারেন মিডলঅর্ডারদের ভরসায়। সাকিব আল হাসান গত ম্যাচে রানে ফিরেছেন, ভালো পিচ পেয়ে মাহমুদউল্লাহ বড় শট নিতে পেরেছেন, জাকের আলিও তাই। আর হৃদয় সেরা ফর্মে আছেন। তাই শুরুতে রানের গতি কম হলেও তা বাড়ানোর কাজ সফল ভাবেই করবেন বাকি ব্যাটাররা। তখন দ্রুত রান তোলার প্রস্তুতিটাও হয়ে যাবে।

নেপালের বোলিং একটু ভাবনা

বিশ্বকাপে বোলিংয়ে ভালো করেছে নেপাল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে ১০৬ রানে অলআউট হলেও ডাচদের ওই রান তাড়া করতে ৪ উইকেট হারাতে হয়। জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১৯তম ওভার পর্যন্ত। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নেপালের ম্যাচটি পন্ড হয় বৃষ্টিতে। আর গত ম্যাচে দক্ষিণ অফ্রিকার ব্যাটিং লাইনকে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৫ রানে আটকে দিয়েছে নেপাল বোলাররা।

নেপালের বোলিংটা তাই বাংলাদেশের জন্যও একটু চিন্তার কারণ। বিশ্বকাপে পা রাখার আগে ঘরের মাঠে উইন্ডিজ “এ” দলকেও বোলিং সাফল্যে দুই ম্যাচে হারিয়ে দেয় তারা। বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচে ভালো ব্যাটিং প্রস্তুতির বাধা নেপালের বোলিং। তা হোক, এই চ্যালেঞ্জ জিতে টপঅর্ডাররা রানে ফিরলে সুপার এইটের আগে বড় ভাবনা কাটবে বাংলাদেশের।

পরিশেষে

কঠিন অবস্থা থেকে নিজেদের অনেকটা গুছিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। টপঅর্ডারদের রান খরা বাদ দিলে বাকি সব ঠিক। সেরা একাদশও পাওয়া গেছে। সেখানে জায়গা হয়নি ফর্মে থাকা শরিফুলেরও। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের ভালো অবস্থা আরও মজবুত করেছে। ক্রিকেটারদের মুখের হাসি এখন চওড়া। নেপালের সঙ্গে তাই আরেকটি জয়ে পরের রাউন্ডের জন্য দারুণ প্রস্তুতি এনে দিবে।   

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত