দেশের বাজারে আরেক দফা কমল সোনার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ২৯৫ টাকা কমানো হয়েছে।
অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে। রবিবার থেকে এই দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এ নিয়ে ১৭ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে কমেছে ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা।
বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক গ্রাম সোনা কিনতে দিতে হবে ৯ হাজার ৯৩৫ টাকা; সে হিসাবে এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা কিনতে দিতে হবে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮২ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১০ টাকা। ১৮ ক্যারেটের সোনা কিনতে দিতে হবে ৯৪ হাজার ৮১৭ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৭৮ হাজার ৩৮২ টাকায়।
শনিবার পর্যন্ত হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১০ হাজার ৪৬ টাকা লেগেছে; এক ভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৭৭ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৪৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯৫ হাজার ৮৬৬ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৯ হাজার ২৫৭ টাকায়।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ২৯৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম কমেছে ১ হাজার ২৩৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছে ১ হাজার ৫০ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমেছে ৮৭৫ টাকা।
শনিবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) এবং বাজুস নির্ধারিত গহনার নূন্যতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে দেশের সব ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
দফায় দফায় বেড়ে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ১৮ এপ্রিল ২২ ক্যারেট সোনার দাম উঠেছিল ভরিতে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায়। এরপর তার কমতে শুরু করে।
দেশের বাজারে যেমন কমেছে সোনার দাম, তেমন দাম কমেছে আন্তর্জাতিক বাজারেও।
গত ১৮ মে প্রতি আউন্স সোনার দাম (৩১ দশমিক ১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) উঠেছিল ২ হাজার ৪২৩ ডলারে। যা ছিল বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দর। এর পর থেকে নিম্মমুখী হতে শুরু করে মূল্যবান এই ধাতুর দর।
শনিবার প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৮৩ ডলার ১৫ সেন্ট বা ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ২ হাজার ২৯৩ ডলার ৮৪ সেন্টে নেমে এসেছে।
গত ২৫ মে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৩৩৪ ডলার ২৪ সেন্ট।
সাধারণত বিশ্বে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম বাড়তে থাকে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরনো অলঙ্কার গলিয়ে তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, তার কোনও মানদণ্ড নেই।
সোনার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
