সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে নোয়াখালী, মাদারীপুর, চাঁদপুর, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলার কয়েকটি স্থানে বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নোয়াখালীর দুই উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের ৮টি মসজিদে একযোগে ঈদের জামাত হয়। অন্যদিকে মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় একই সময়ে জামাতে অংশ নেন হাজারো মুসল্লি।
নোয়াখালীর যে ৮টি মসজিদে ঈদের জামাত হয়, সেগুলো হলো বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ গ্রামের সিনিয়র মাদ্রাসা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ পোদ্দার বাড়ির জামে মসজিদ, বসন্তবাগ নগর বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ ভূঁইয়া বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, পশ্চিম বসন্তবাগ গ্রামের মুন্সি বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, ফাজিলপুর গ্রামের দায়রা বাড়ির জামে মসজিদ, জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের জামে মসজিদ ও হরিনারায়ণপুরের রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফ মসজিদ।
বড় পীর আবু মুহম্মদ মহিউদ্দীন সৈয়দ আবদুল কাদির জিলানীর (রঃ) মতাদর্শে তৈরি হয় কাদেরিয়া তরিকা। এই তরিকার অনুসারী লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগে রোজা রাখেন।
হরিনারায়ণপুরের রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফ মসজিদে ঈদের জামাতের ইমামতি করেন রহিমিয়া রশিদিয়া আল কাদেরিয়া দরবার শরীফ চট্টগ্রামের খাদেম আব্দুল কাদের।
তিনি বলেন, “চাঁদ ওঠার ওপর নির্ভর করে রোজা রাখা এবং ঈদ উদযাপন করা হয়। আকাশে চাঁদ দেখা গেছে। কেবল বাংলাদেশ ছাড়া সৌদি আরবসহ সব মুসলিম দেশে আজ ঈদ উদযাপন হচ্ছে। এ কারণে আমরা তাদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছি।”
কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী নোয়াখালী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সুমন বলেন, “পূর্বপুরুষদের মতো আমরাও সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছি। এই রেওয়াজ প্রায় ১০০ বছরের বেশি সময়ের। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি বেশি ছিল।”
মাদারীপুরে ঈদ উদযাপন
মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানেও বুধবার সকালে ঈদের জামাতে শামিল হয় কয়েক হাজার মানুষ।
মাদারীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও প্রধান ও বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে।
সেখানে ঈদের জামাত পড়ান চরকালিকাপুর ফরাজীবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান। জামাত শেষে দেশের জনগণের জন্য দোয়া এবং একে অপরকে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন মুসল্লিরা।
মাদারীপুরের চরকালিকাপুর ফরাজীবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা যাওয়ায় বুধবার সেখানে ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে।
“মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত জান শরীফ শাহ্ সুরেশ্বরীর (রা.) অনুসারীরা মাদারীপুরে আমাদের এলাকাসহ শরীয়তপুর জেলা ও আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।”
[এই প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সকাল সন্ধ্যার নোয়াখালী ও ফরিদপুরের আঞ্চলিক প্রতিবেদক]