ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে এবারও লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না।
শনিবার লোকসভা নির্বাচনে দিন-ক্ষণ যখন নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, তখন অন্ধ্র প্রদেশ, উড়িষ্যা, অরুণাচল ও সিকিম রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের তফসিলও দেওয়া হয়।
অথচ জম্মু-কাশ্মীরে ২০১৪ সালের পর আর বিধানসভা নির্বাচন হয়নি। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময়ও রাজ্যটির বিধানসভা নির্বাচন বাদ রাখা হয়েছিল।
সেবার নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে বিধানসভা নির্বাচন বন্ধ রাখার কথা বলেছিল নির্বাচন কমিশন। এবারও সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। ফলে রাজ্যটিতে অনির্বাচিত সরকার দিয়ে চলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এটি লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে করা যাচ্ছে না।
তার মতে, জম্মু ও কাশ্মীরের পুরো প্রশাসন নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা চিন্তা করে একসঙ্গে নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তবে লোকসভা নির্বাচন শেষ হলে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী পেলে রাজ্যটির বিধানসভা নির্বাচন শিগগিরই করা হবে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
পাঁচ বছর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন সুনীল অরোরা। তিনিও ২০১৯ সালের এপ্রিল ও মে মাসে লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন না করতে একই কারণ উল্লেখ করেছিলেন।
ওই ঘটনার কয়েক মাস পরে নির্বাচনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সালের আগস্টে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে থাকা জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।
তখন থেকে পূর্বের রাজ্যটি একটি বিতর্কিত সীমানা নির্ধারণী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ৯০টি বিধানসভা আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
তখনই নির্বাচনী এলাকাগুলোর সীমানা নির্ধারণে কারসাজির অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, কোনও রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতেই সীমানা নির্ধারণে কারসাজি করা হয়েছে। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনী মানচিত্র পাল্টে যায়।
জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে একটি সংশোধনী আনা হয়। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলের লেফটেনেন্ট গভর্নরকে বিধানসভায় পাঁচজন সদস্যকে মনোনীত করার ক্ষমতা দেয়। এই সদস্যরাও কিন্তু ভোটের অধিকার পান বিধানসভায়।
নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, ডিসেম্বরে জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে সংশোধনীর পর গত তিন মাস আগে নির্বাচন পরিচালনায় তার কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, “নির্বাচন পরিচালনায় আমাদের কাজ শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে।”
গত বছরের মার্চে রাজিব কুমার বলেছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে একটি ‘শূন্যতা’ রয়েছে যা পূরণ করা দরকার। তবে ওই অঞ্চলের ভোটার তালিকার পুনর্মূল্যায়ন নির্বাচন করার পথে কোনও সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না।
২০১৯ সালের মতোই ভারতের আসন্ন অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন হবে সাত সফায়। আগামী ১৯ এপ্রিল ভোট শুরু হয়ে শেষ হবে ১ জুন। দেশটির মোট ৫৪৩ লোকসভা আসনের পাশাপাশি চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। একই সঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচন হবে ১৩ রাজ্যে। ভোট গণনা ও এর ফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন।
তথ্যসূত্র : এনডিটিভি