সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় সিলেটে এ পর্যন্ত ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় আড়াইশ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৬ হাজার জনকে।
এদিকে, শুক্রবার সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কারফিউ শিথিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে সকাল সন্ধ্যাকে জানান, হত্যা, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৭ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সিলেটে মোট ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি জানান, সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকার কোতোয়ালি থানায় ৫টি, জালালাবাদ থানায় ৪টি ও দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ২৪৪ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ১৬ হাজার ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হত্যা, পুলিশ অ্যাসল্ট, সরকারি কাজে বাঁধা, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুতে অহিংস থাকলেও ১৪ জুলাই রাত থেকে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলেট। ১৬ জুলাই সারাদেশে ৬ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে মঙ্গলবার রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ অনেকে হতাহত হয়।
দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারাদেশে সেনা মোতায়েন ও কারফিউ জারি করা হয়। প্রথম দফায় শনিবার সকাল ১২টা পর্যন্ত কারফিউ ছিল। পরে ২ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বেলা ২টা থেকে দ্বিতীয় দফায় এবং রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়।
সিলেটের পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিক এটিএম তুরাবের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। মৃতদেহের পোস্টমর্টেমও হয়েছে। পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট ও তদন্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিসহ সকল ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।