ট্রেনে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুনের গুজব। আগুন থেকে বাঁচতে ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন যাত্রীরা। ঠিক ওই সময়েই ছুটে আসা আরেকটি ট্রেনের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন যাত্রী।
ভারতের মহারাষ্ট্রের উত্তরে জলগাঁও জেলায় বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। জলগাঁওয়ের সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বুধবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে আগুনের গুজব শুনে চেইন টানেন কোনও একজন যাত্রী। তাতে লক্ষ্ণৌ আর মুম্বাইয়ের মাঝে চলাচলকারী পুষ্পক এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে যায় পাচোরার পাশে মাহেজি ও পারধাদি স্টেশনের মাঝামাঝি।
কেন্দ্রীয় রেলওয়ের প্রধান মুখপাত্র স্বপ্নীল নীলা বলেন, আগুনের গুজব শুনে পুস্পক এক্সপ্রেস থেকে নেমে দাঁড়ায় কিছু যাত্রী। সেই সময়েই বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লিগামী কর্ণাটক এক্সপ্রেস তাদেরকে চাপা দেয়।
দুর্ঘটনাস্থল মুম্বাই থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। কেন্দ্রীয় রেলওয়ের সিনিয়র এক কর্মকর্তা পিটিআইকে জানান, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, পুস্পক এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কোচে ‘হট অ্যাক্সেল’ বা ‘ব্রেক জ্যাম’ হয়ে আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা দেয়। তাতে কিছু যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা চেইন টেনে ট্রেন থামায় আর কয়েকজন লাফিয়ে নেমে পড়ে। ওই সময়েই কর্ণাটক এক্সপ্রেস ওখান দিয়ে যাচ্ছিল।
সিনিয়র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন জানিয়ে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের আরেক মন্ত্রী গুলাব রঘুনাথ পাতিল বলেন, তারপর আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে রেল লাইনের ওপর পড়ে আছে মরদেহ আর আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রক্ত।
মহারাষ্ট্রের মূখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাবিস এতগুলো প্রাণ হারানোর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগে আছেন, ঘটনাস্থলে সব ধরনের সহায়তা পাঠানো হচ্ছে।
পুরো জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে রেলওয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আহতদের জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে আটটি অ্যাম্বুলেন্স গেছে। পার্শ্ববর্তী জেনারেল হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি কিছু পণ্য যেমন গ্লাস কাটার ও ফ্লাডলাইটও তৈরি আছে। পুরো পরিস্থিতি আমরা দেখভাল করছি, যা সহায়তা দরকার দিচ্ছি।”
এরই মধ্যে ভুসাভাল থেকে দুর্ঘটনায় সহায়তা দানকারী ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে। আহত যাত্রীদেরকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সর্বাত্বক চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।