পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
রাঙ্গামাটি থেকে সকাল সন্ধ্যার আঞ্চলিক প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি জেলা শহরের হ্যাপির মোড়, বিজন স্মরণীসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘিরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ আছে।
কয়েকটি স্থানে দোকানপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত ও দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা বলছেন, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজারে বৃহস্পতিবার বিকালে দোকানপাটে আগুন ও সংঘর্ষের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি শহরে শুক্রবার সকালে মিছিল বের করে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল থেকে ‘ইটপাটকেল ছোঁড়া’কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে।
রাঙ্গামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখনও সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জানা যাবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি মাঠে আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে আমরা এখনও জানতে পারিনি।”
রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শওকত আকবর জানান, রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে ৫৮ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। নিহত আছেন একজন। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে সংঘর্ষের জের ধরে রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বিকালের সংঘর্ষ ও রাতের গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
দীঘিনালায় হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়িদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র জনতা’র ব্যানারে শতাধিক মানুষ এই অবরোধ-বিক্ষোভে অংশ নেয়।
এর আগে বিক্ষোভকারীরা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন। সমাবেশে পাহাড়িদের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
পরে বিক্ষুব্ধরা মিছিল নিয়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন এবং প্রায় ২০ মিনিট ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।