সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১৫ জনকে ৪৭ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদার আদালত শুনানি শেষে পৃথক এসব মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।
এদিন সকালে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ৭ থানায় পৃথক ৪৭ মামলায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ।
এসময় আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে।
সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে মতিঝিল থানায় করা ১৭ মামলা, মিরপুর থানার ৪ মামলা, ধানমন্ডি ও বাড্ডা থানার একটি করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মিরপুর থানার ৭ মামলা, বাড্ডা ও ধানমন্ডি থানার একটি করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মিরপুর মডেল থানার ৭ মামলা, মোহাম্মদপুরের একটি, ধানমন্ডি থানার তিনটি ও বাড্ডা থানার দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে মিরপুর মডেল থানার তিনটি, বাড্ডা থানার দুটি ও ধানমন্ডির এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এছাড়া রাশেদ খান মেননকে মিরপুর মডেল থানার দুটি, হাসানুল হক ইনুকে মিরপুর, বাড্ডা ও ধানমন্ডি থানায় একটি করে মোট তিন মামলায়, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিকে বাড্ডা থানার এক মামলায়, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানকে মোহাম্মদপুর থানার দুটি ও আদাবর থানার এক মামলায়, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালকে বাড্ডা ও ধানমন্ডি থানার দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলামকে তেজগাঁও থানার এক মামলায় ও একাত্তর টিভির সাংবাদিক ফারজানা রুপাকে মোহাম্মদপুর থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
একই সঙ্গে বাড্ডা থানার এক মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলী ও শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আনিসুল হকের রিমান্ড মঞ্জুর
এদিকে সোমবার ঢাকার বাড্ডা থানায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আল আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত।
সাবেক আইনমন্ত্রীকে আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। প্রথমে আদালত তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।
পরে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আনিসুল হকের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। সেসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আল আমিন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।