প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাত ও বিভিন্ন সামগ্রী চুরির অভিযোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রাক্তন স্ত্রী বিদিশা এরশাদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়ার আদালতে এ আবেদন করেন ব্যবসায়ী মোরশেদ মঞ্জুর রুবেল।
মামলায় বিদিশা ছাড়া অন্য দুই অভিযুক্ত হলেন, গাইবান্ধার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও শাহজাদা খন্দকার।
ব্যবসায়ী মোরশেদ মঞ্জুর রুবেল নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার শফি টাওয়ারের বাসিন্দা। তিনি রাঙ্গুনিয়ার রুবেল সুপার মার্কেট এবং ঢাকার ইসলামপুরের মেসার্স লতিফা বাহাদুর ফেব্রিক্স নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।
মামলার আবেদনে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর পারিবারিক বিভিন্ন জটিলতায় স্ত্রী বিদিশা ও তার ছেলে এরিক এরশাদ আর্থিক অসুবিধায় পড়েন। বিভিন্ন তারিখে বিদিশা ও তার ছেলে এরিকের কঠিন সময়ে বাদী নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ধার দেন। বিপরীতে বিদিশার পরামর্শে এরিক মোরশেদ মঞ্জুরকে ৯০ লাখ টাকার দুটি চেক দেন।
ভাড়ায় লাগিয়ে এ অর্থ পরিশোধের জন্য বিদিশার পরামর্শে এরিক তাদের ট্রাস্টের পাঁচটি নিশান, জিপ, মাইক্রোবাস আমমোক্তারমূলে (কোনও কাজ করার জন্য আইন অনুযায়ী প্রতিনিধি নিযুক্ত করা) মোরশেদ মঞ্জুরের কাছে হস্তান্তর করেন।
বিদিশাও ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর ৩৯ লাখ টাকায় তার মালিকানাধীন একটি সিডান কার ব্যবসায়ী মোরশেদের কাছে বিক্রি করে দখল হস্তান্তর করেন এবং মালিকানা হস্তান্তরের জন্য হলফনামাও সম্পাদন করে দেন।
ব্যবসায়ী মোরশেদ আবেদনে আরও জানিয়েছেন, গত ২১ এপ্রিল খুলশীর শফি টাওয়ারে তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও তার সন্তানকে ভয় দেখান রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও শাহজাদা খন্দকার। এ সময় তারা ঘরে থাকা ১০ লাখ টাকার ২২টি হাতঘড়ি, বিভিন্ন ব্যাংকের সইবিহীন ছয়টি চেকবই, তিনটি স্মার্ট ফোন, বিদিশা ও এরিক এরশাদের কাছ থেকে কেনা গাড়ির ডকুমেন্টস ফাইল, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিলসহ ব্যাগে রক্ষিত নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যান।
যাওয়ার সময় বিদিশাকে ম্যাডাম হিসেবে উল্লেখ করে তার সঙ্গে টক্কর না দিতেও হুঁশিয়ার করে যান তারা।
আবেদনে বিদিশা, রাশেদুল ও শাহজাদাকে সংঘবদ্ধ দল হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ী মোরশেদ। তিনি বলেন, এরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে খায়। প্রাপ্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা শোধের জন্য এরিককে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হলে বিদিশা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাশেম জানান, আদালত মামলার শুনানির জন্য আগামী ৫ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেছে। ওইদিন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।